আর একজন বললো, আরে ব্যাঙ ফ্রাই খেতে বেশি মজা লাগে। জেসন দিয়ে। আমি তখন হতভম্ব হয়ে গেলাম। মনে মনে হাসছি। বললাম, কি দিয়ে ব্যাং ফ্রাই?
শীতের হালকা কুয়াশার মত মনটা সারাদিন ব্যথায় চিনচি করছিলো। কেনো যেনো মন চাচ্ছিলো দুরে কোথাও যায়, যেখানে প্রেমের সাথে কারো সম্পর্ক নেই। যেখানে গেলে ভালোবাসার অনুভূতিগুলো হাওয়ায় মিশে যায়।
সেটা এই পৃথিবীতে না হলে ভালো হয়। জানি এই ভূ-খণ্ডে এমন কোনো স্থান নেই যেখানে কষ্ট আর যন্ত্রণা জড়ানো এই ভালোবাসা নেই। কষ্ট পাই আবার ভালোবাসি। মরার চেষ্টা করি তবুও আবার ভালোবাসি।
এত প্রেম-ভালোবাসার এই লোকালয় ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করছিলো ভিন গ্রহে যেতে। যেখানে আবেগ নেই। প্রেম নেই। কষ্ট নেই। তাতো আর সম্ভব নয়, তাই বাসা থেকে বের হয়ে উইপোকায় খাওয়া পা দুটি টানতে টানতে ফুটপাতের চায়ের দোকানে গেলাম।
কষ্ট যন্ত্রণা যেনো আমার পদযুগলই বেশি অনুভব করে। পায়ে ভেতর কোন শক্তি কাজ করে না। মনে হয় উইপোকায় খেলে যেমন কাঠের মাঝে শুন্য হয়ে যায়। তেমনি মনে হয় আমার।
রাজধানীর ফুটপাত, কতরকম লোকের যে আসা-যাওয়া- তার ইয়ত্তা নেই। তারপর আবার দোকানদার রমনী। কালো সুন্দরী। দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ টাইপের। কেউ ভাবি, কেউ ম্যাডাম, আবার কেউ…..।
একটি ব্লাক সিগারেট দেন তো। ওনি একখানা হালকা হাসি জড়িয়ে বললেন নিন। ইস! শালার এত্ত ইমোশন! কই যে যায়? কোনো কিছু মাথায় আসে না।
সিগারেটটার মাথায় অগ্নি ধরিয়ে শ্বাসতন্ত্রের বারোটা বাজাতে বসে গেলাম। ময়লা জড়ানো ফুটপাতের ওয়ালে হেলান দিয়ে।
সিগারেটের একটি টান আর একবার করে পিনিক! আহ! মস্তিষ্কের নিউরন মেরে কলিজা পুড়িয়ে কষ্ট ভূলবার এমন অদ্ভূত জিনিস যে কে প্রথম আবিস্কার করেছিলো মাথায় ধরে না।
এর মাঝে তিন চার জন লোক এলো। যাদের সবার খয়েরি কালারের শার্ট গায়ে। মনে আসে-পাশের কোনো কারখানায় কাজ করে। শার্টগুলো যথার্থ ময়লায় ভরা। সবাই চায়ের অর্ডার দিলো। এর মাঝে একজন পাশের ফুটপাতের রেস্তোরাঁ থেকে আলু পুরি কিনে আনলো। আর ওই আলু পুরি দুধ চা দিয়ে খেতে লাগলো। দেখে অনেক কষ্টের মাঝেও হালকা হাসি দিলাম। এর তারা অদ্ভূত সব গল্প বলাবলি করতে লাগলো।
এরমাঝে একজন বললো তুই কোনোদিন ব্যাঙ রান্না খেয়েছিস? উত্তর দিলো খেয়েছি। কত খেয়েছি। ঢাকার একটি হোটেলের নাম বললো নামটি আমার এখন মনে নেই। যেখানে তারা প্রতিদিন ব্যাঙ রান্না করে খায়।
আর একজন বললো, আরে ব্যাঙ ফ্রাই খেতে বেশি মজা লাগে। জেসন দিয়ে। আমি তখন হতভম্ব হয়ে গেলাম। মনে মনে হাসছি। বললাম, কি দিয়ে ব্যাং ফ্রাই?
বললো, বেসন দিয়ে। আলু বেগুর চপ যেভাবে ভাজি করে- সেরকম। অন্যরকম স্বাদ। আপনি কল্পনা করতে পারবেন না যে আসলে কত মজদার স্বাদ।
আমি তো কথা শুনে থ হয়ে গেলাম। আমার কল্পনায় আনতে পারলাম না যে, ব্যাং ফ্রাই যদি বেসন দিয়ে করা হয় সেটি আসলে কেমন হয়।
তারপর তাদের এরকম অদ্ভুত রকম গল্প শুনে মনটা ভালো হয়ে গেলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪০