somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

40% Absolut হিমু ...... ;) :P =p~

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এইলেখার কোন ক্যারেক্টার কারো পরিচিত মনে হলে, তা সম্পূর্ণ পাঠকের কল্পনাপ্রসূত।


ঢাকা শহরে মানুষের ঘুম ভাঙ্গে তিন ধরনের পাখির ঝগড়াঝাটি শুনে। কাক, কুকুর আর চড়ুই।ভোর বেলায় এদের পার্লামেন্টে দিবসের কার্যসূচি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়।কোনো মতৈক্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত এরা অধিবেশন চালু রাখে।ও স্যরি, ভুইল্যা গেছি, কুকুর তো পাখি না। ধুর, কাল রাতের hangover দেখি এখনো যায় নাই। Absolut শালা আসলেই কুব কারাপ।যাহোক যুক্তিতে আসি।আমার কাজ কোনভাবে জিনিষকে লজিকে ফেলা।“কর্মকারনের সন্ধানে দিননাশ করো”-আমার বাবার উপদেশ আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করি।ওহ, আবারো ভুইল্যা গেলাম, কি নিয়া জানি ভাবতেছিলাম।কুকুরকে কেন ঘুম ভাঙ্গার পরে পাখি মনে হইছে। এখন মনে পড়ছে

কার্যকারনঃ কুকুর কেন পাখি?

পাখির দুটো পা আছে, মানুষেরও দুটো পা আছে। তাই বলে কি আমরা পাখি? তাহলে কুকুর কেন পাখি?কারন, কুকুরের এক্সট্রা আরো দুটো পা আছে, যা মানুষের নাই।পাখির লেজ আছে, কুকুরেরও আছে। পাখির চেয়ে বরং বেশি কইরা আছে।সমস্যা একটাই কুকুর সবসময় জিহবা বের করে রাখে, পাখিরা এই স্বভাব এখনো আয়ত্তে আনতে পারে নাই।কোন লুল পড়া জিহবাওয়ালা পাখি অন্তত আমার চোখে পড়ে নাই।সেই হিসেবে কুকুর আরো বড় পাখি, একেবার পক্ষীরাজ।

কিন্তু পক্ষীরাজের নাম কুকুর হওয়া ঠিক হয় নাই। একটা সুন্দর নাম দিতে হবে, যেমনটা আমি নদীনালা, ড্রেনের ক্ষেত্রে দিয়ে থাকি।কুকুরের নাম আজ থেইক্যা লুলাপক্ষী। “ও আমার লুলাপক্ষী রে, যারে তুই.........…………।” সাধারন মানুষের এই এক সমস্যা।যা কিছু বৃহৎ, যা কিছু সুন্দর, সেগুলো তাদের চোখে পড়ে না ।হিমুদের চোখে পড়ে, হিমুদের এসব লজিক নিয়ে ভাবতে হয়।লজিক আর Absolut, দুজনে দুজনার। ভদকার জয় হোক।এই তো মাথা খুলে গেছে, কার্যকারন পাওয়া গেছে। মন স্থির বোধ করতেছে। মহাপুরুষদের মন স্থির থাকা খুব প্রয়োজন।

যাহোক, কুকুর, কাউয়া আর চড়ুইয়ের পার্লামেন্ট মনে হয় আজকের মতো শেষ।পক্ষীরাজ লুলাপক্ষীকে ওয়াক আউট করে চলে যেতে দেখা যাচ্ছে। কাউয়ার অবশ্য মনের ঝাল কমে নাই। এখনো আওয়াজ দিয়ে যাচ্ছে।তারপরও পরিস্থিতি এখন যথেষ্ট শান্ত।খুব সকালের এই আপাত শান্তি শান্তি ভাবটা আমার ভালো লাগে।বাবার উপদেশ ছিলো, ভাদ্রমাসের অতীব প্রত্যুষে শরীরের কোনায় কোনায় রোদ মাখানো, মহাপুরুষের দিনের প্রথম কার্য হওয়া উচিত। “ভাদ্রনং প্রভাতনং নাঙ্গানং সূর্যনং রোদে মাখামাখিনং”।" স্নানত্যাগী মহাপুরুষদের জন্য এটা ড্রাই ওয়াশ হিসেবে কাজ করে।আমি আমার বাবার উপদেশ পালন করে যাচ্ছি। ও হ্যা, আমার পরিচয় দেয়া হয় নাই। আমার নাম মহাপুরুষ হিমু(পুং), চোরাই নাম হিমালয়।

আমার নামের পিছনে একটা ছোটখাট ইতিহাস আছে।ছোটবেলায় আমার নাম হিমু ছিলো না।হিমালয় কার নাম ছিলো মনে পড়তেছে না।আসলে আমার পৃথিবীতে আসারই ইচ্ছা ছিলো না।মায়ের পেটের মধ্যে ভালোই ছিলাম।খাওয়া পড়ার চিন্তা নাই, ছবি বানানোর ধান্দা নাই, বেশ ছিলাম।ক্ষিদা লাগলে অন্দরমহল থেকে একটা দুইটা লাথি মারলেই চলতো। চ্যানেল দিয়া মালমসলা ডাইরেক্ট পেটে।মুখ দিয়া খাওয়া-খাওয়ির প্রবলেম নাই। লবন বেশি হইছে না কম, হইলদ্যার জ্বালায় খাওয়া যাইতেছে নাকি যাইতেছে না, এসব নিয়া কোন দুশ্চিন্তা নাই।সুখেই ছিলাম।কিন্তু আমার বাবার তা সহ্য হলো না।সে আমাকে এই প্রবলেমেটিক পৃথিবীতে নামায়ই ছাড়লো।অবস্থা বেগতিক দেখে আমি হতবাক হয়ে পড়লাম।উৎসাহী পাবলিক পিঠে চাপড়াইতে লাগলো, আর আমি কড়া দৃষ্টিতে তাকায় থাকতে লাগলাম—হারামজাদা থাম কইতাছি, পিঠে মারতাসস ক্যান, প্রবলেম কি?

একজন বল্লো, ভাইসাব, আপনার প্রোডাক্টের ভল্যুওম তো ডাওন মনে হইতেছে। বাবা তার প্রোডাক্ট হাতে নিয়ে দেখলেন।প্রোডাক্ট ভালোই তবে আসলেই চুপচাপ।বাবার এই ভল্যুওম ডাউন ন্যাংটো প্রোডাক্ট পছন্দ হইলো না।আড়াআড়ি কোনাকুনি সবদিক দিয়ে ঝাকি দিলেন, যেমনটা তিনি তার রেডিওটাকে দিতেন।আমি দেখলাম মহাবিপদ, এখন আওয়াজ না দিলে তার পুরাতন রেডিওটার মতো পুরা মাটিতে সিধায় দিতে পারেন। আমি কেঁদে দিলাম, ঘিয়াঁও ঘিয়াঁও…। বাবা হাসলেন, বলেছিলাম না, ঝাকিতেই নেকি।তিনি ঝাকি দিতে থাকলেন, আমি কাঁদতে থাকলাম।

আমার জন্মের তিন বছরের মধ্যে কোন নাম জোগাড় করা গেলো না।যাই ঠিক হয়, তা কেউ না কেউ অলরেডি নিয়া ফেলছে।আমি বাবুসোনা, আহ তিতিতি, হারামজাদা সবনামে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম।সবচেয়ে ভালো লাগলো “লাত্থি দিমু"”।বাবার মনমেজাজ সবসময় চরম খারাপ থাকতো।একটু এদিক সেদিক হলেই বাবা বলতেন, “লাত্থি দিমু”।

এই শুনছো,টেবিলে খাবার দেয়া হয়েছে। কতক্ষন থেকে ডাকছি, আসছো না কেন?খাবার তো ঠান্ডা হয়ে গেলো।
“লাত্থি দিমু, চুপ কর মাগি।”
ছেলেটা একদম ঘুমাচ্ছে না।খালি কান্নাকাটি করছে, ঘিয়াঁও ঘিয়াঁও…।তুমি একটু কোলে নিয়ে দেখো না ঘুম পাড়াতে পারো কিনা?
“লাত্থি দিমু, চুপ কর হারামজাদা।আর একবার কাঁদলে জিভ কাইটা পুটুতে লাগাই দিবো, ডাইরেক্ট ইন্টারচেঞ্জ।”

আমি অতি সত্বর বাবার “লাত্থি দিমু” আয়ত্তে নিয়ে আসলাম।যেমন…বাসায় গেস্ট এসেছে, ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও বাচ্চার সাথে ভাব জমাতে হচ্ছে।

বাবু তোমার নাম কি?
“লাত্থি দিমু।”
ওমা, বাবু এসব কি বলে? ছি ছি, তোমার নাম নাই!
“লাত্থি দিমু, লাত্থি দিমু।”
আচ্ছা ঠিক আছে। আমার সাথে বসে একটু আপেল খাও।
“চুপ কর মাগি, তোরে লাত্থি দিমু।”
দূর হ হারামজাদা, ভাবী এইটা কি পয়দা করছেন? এবার গেস্ট হতাশ।

বাবাও ব্যাপারটা খেয়াল করলেন।ছেলে বুদ্ধিমান আছে, নিজেই নিজের একটা নাম বের করে ফেলেছে, “লাত্থি দিমু।” বাহ আজ পর্যন্ত কেউ এই নাম নেয় নাই।সাবাস ব্যাটা। কিন্তু তুই তো মহাপুরুষ হবি,তুই কেনো একটা লাত্থি দিবি। মহাপুরুষদের জন্য লাত্থির হিসাব রাখা নিষেধ।অতএব আজ থেকে তোর নাম থেকে ‘লা’ বাদ, শুধু ত্থিমু।

ত্থিমু নামটা ভালোই চলছিলো। টাং-টুইস্টার হিসেবে লোকজনের কাজে লাগছিলো।কিন্তু যা কিছু মহান, চিরকল্যানকর, তার বিপরীতে দুষ্টগ্রহ থাকে।আমার দুষ্টগ্রহ দেখা দিলো, স্কুলে ভর্তি হবার পর। হেডস্যার ক্লাসের শুরুর দিন সবার নেমকল করতে আসলেন।

ত্থিমু ! এই হারামজাদাটা কে? আমি দাঁড়ালাম।
কাছে আয়। দেখতে তো কাইট্টা খাটাশের মতো, এই চাকমা নাম পাইলি কই?বলেই গালে থাবড়া বসায় দিলেন।
আমি কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না। শব্দগুলো পানি হয়ে অন্য এক্সিট দিয়ে বের হয়ে গেলো।
এইসব ত্থিমু ক্লিমু চলবে না।তোর নাম আজ থেকে হিমু।

আমি চুপ করে থাকলাম। বাসায় এসে বাবাকে জানালাম। স্যারে তো থাবড়ায়ে আমার নাম চেঞ্জ কইরা দিছে, নাম রাখছে হিমু, ওয়াক থু, আমি এখন কেমনে লাত্থি দিমু?

বাবা কিছুক্ষন চুপ করে থাকলেন। বললেন, ভালোই হয়েছে। মহাপুরুষরা মনে মনে লাত্থি দিবে, কিন্তু উপরে উপরে সাধু থাকতে হবে। আজ থেকে তোর নাম অবশ্যই হিমু, ভালো নাম হিমালয়। এখন যা, কাপড় চোপড় ছেড়ে গোসল করে আয়। তোর হিমালয় তো গলে পানি হয়ে গেছে। গন্ধে তো টেকা যাইতেছে না।



ইহা একটি মসকরা পোস্ট। চলতেও পারে নাও পারে
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:৩৫
১৮টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×