ষষ্ঠ সংশোধনী: ১০ জুলাই, ১৯৮১
১৯৮১ সালের ৮ জুলাই এ সংশোধনী আনা হয়। উপরাষ্ট্রপতি পদে বহাল থেকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের বিধান নিশ্চিত করা হয় এই সংশোধনীর মাধ্যমে।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শাহ্ আজিজুর রহমান ১ জুলাই বিলটি সংসদে উপস্থাপন করেন যা ৮ জুলাই ১৯৮১ সালে পাশ হয়। বিলটি ২৫২-০ ভোটে পাস হয়। এটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পায় ওই বছরের ১০ জুলাই।
এ সংশোধনীর মাধ্যমে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী পদকে প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদ বলে গণ্য করা হবে না।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হলে তৎকালীন উপ রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সাংবিধানিক ভাবে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। বিচারপতি আব্দুস সাত্তার ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন।
ওই সময়ে বলবৎ সংবিধানের ৫১ অনুচ্ছেদ ও ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোন ব্যক্তি রাষ্ট্রের লাভজনক পদে বহাল থাকলে রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হবেন না। এ কারণে সংবিধান সংশোধন করা প্রয়োজন হয়। উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে যাতে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করা যায় এই উদ্দেশ্য এই সংশোধনী আনা হয়।
এই সংশোধনের দ্বারা পূর্বের ৫১ অনুচ্ছেদের ৪ দফার পরিবর্তে নিম্নরূপ (৪), (৫) ও (৬) দফা প্রতিস্থাপিত হয়।
(৪) উপরাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি রূপে নির্বাচিত হইলে তিনি যে তারিখে রাষ্ট্রপতি পদে কার্যভার গ্রহণ করিবেন সেই তারিখে তাহার পদ শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(৫) রাষ্ট্রপতি অথবা উপরাষ্ট্রপতি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইলে, তিনি রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতি পদে বহাল থাকা পর্যন্ত অনুরূপ সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না।
(৬) কোন সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত কিংবা উপরাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হইলে রাষ্ট্রপতি কিংবা উপ-রাষ্ট্রপতি রূপে তাহার কার্যভার গ্রহণের দিনে সংসদে তাহার আসন শূন্য বলিয়া গণ্য হইবে।
অনুরূপভাবে সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২ক) দফায় ‘কেবল প্রধানমন্ত্রী’ শব্দগুলির পরিবর্তে কেবল রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শব্দগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়। ইতিপূর্বে ৬৬ এর (২ক) দফায় উপরাষ্ট্রপতি শব্দগুলো ছিলো না। (২ক) দফায় উল্লিখিত পদগুলোকে অলাভজনক পদ হিসেবে ঘোষিত হয়।
বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহ: (চতুর্থ পর্ব)