somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতৃপ্তদৃশ্য বিনোদিনী শরত

১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চোখ। এ এক আশ্চর্য সৃষ্টি বিধাতার। যা ভাল লাগবে সেখান থেকে আর ফিরতে চাইবে না। আর সেই চোখের সাথে মনটা যদি মিলে যায় তবে তো পোয়াবার। চোখ আর মন যোগলবন্দি হয়ে বার বার ফিরে আসে শরত আত্নজার কাছে। শরতের নীল আকাশে সাদা সাদা মেষ শুভ্র শাড়ি পরে ঘুরে বেডায়। শুধুই কি শুভ্রতা? এ যে পবিত্রতারও প্রতিক। যে পবিত্রতা আর শুভ্রতা ছোঁয়ে যায় মানুষের মন। মন তখন মেষের পানসিতে ছওয়ার হয়ে আপন চৌহদ্দি থেকে বেরিয়ে; হারিয়ে যেতে চায় দূর আকাশে অথবা আকাশ থেকে দূরে কোথাও। বাস্তব অথবা অলিক স্বপ্ন সুন্দর প্রিয়তমার চোখে চোখ রেখে হয়ে উঠে কবি। শহীদ ফারুক রোডের এই চিলোকোঠায় এক আধটু শরত চোখে ধরা দেয় ভেসে চলা মেঘে আর রাতের জোৎস্না স্নানে। অতৃপ্তদৃশ্য বিনোদিনী সেই শরৎ আত্নজার সখী হয়ে ধরা দিয়েছে পাশের ছাদে বাগান প্রিয় সেই কাল মেয়েটি। শরতের সাদা মেঘের সাথে তার গায়ের রঙের বৈপরিত্য থাকলেও; সাদার মধ্যে কালোই যেন মানিয়েছে। কে বলেছে সে কালো? ফুলের বাগানে উড়ে চলা কোন অঙ্গনা রঙ্গীন প্রজাপতি; তার তীক্ষ্ণ চাহনীতে আমি মরে যাই, আবার বাঁচি উঠি। তার থমকথমক চাল আমার হৃদয়ে কম্পন তোলে। আজ এই স্নিগ্ধ শারদীয় বিকেলে সে ছাদের বাগানে আসেনি। তার অনুপস্থিতিতে তারই বাগানের গাছ গুলোকে কেমন ছন্নছাড়া মনে হচ্ছে। কেমন শ্রীহীন মনে হচ্ছে শরতের এই বিকেলকে। যেন মেঘ গুলোও হয়ে উঠছে ছন্নছাড়া। যেন ঘুর পথে উড়ে যাচ্ছে; এ পাশটায় আসছে না। বলছে, তার খেলার সাথি; মেঘলা মেয়ে আজ আসেনি। তাই আড়ি। ও পথে যাব না। আমারও কেমন শুন্য শুন্য লাগছে; একাকীত্ব কুড়ে খাচ্ছে, মহাদেব সাহা’র মত বলতে ইচ্ছে করছে তোমাকে দেখেছি কবে, সেই কবে, কোন বৃহস্পতিবার/ আর এক কোটি বছর হয় তোমাকে দেখি না…। হঠাৎ আমার মন খারাপে মেঘেরও যেন মন খারাপ হলো, দূরে ভেসে চলা মেষ গুলো হামেসাই ছোটে এলো আমার দিকে, মন খারাপে শেষে ঝরঝর করে কেঁদেই ফেলল। আমি একটুও নড়লাম না। দৌড়ে নিচে নামার কোন তাগিদই বোধ করলাম না। আমার কেবলই মনে হতে লাগল; কে বলছে কাল মেয়ে তুমি আজ ছাদে আসনি। এইতো তোমার স্পর্শ পাচ্ছি। তোমার গন্ধ, তোমার স্পর্শ, তোমার চকিত চাহনি। ওহ আমি পুলকিত হয়ে যাচ্ছি। আমার এ দশা দেখে অমনি তুমি যেন অট্ট হাসিতে ফেটে পড়লে। বৃষ্টি ধরে এলো, মন খারাপ করা মেঘের আড়াল থেকে সূর্য উঁকি দিল, চিনচিনে রোদ। দেখে আমিও অপ্রস্তুত হলাম। ভেঁজা কাপড় পাল্টাতে দৌড়ে নেমে এলাম নিচে।

সিঁড়িতে নামতে নামতে মনে পড়লো সেই শৈশবের দূরন্তপনা দিন গুলো। বর্ষার বিলে ডুব সাঁতার, শাপলা আর কাঁশ ফুলের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বন্ধুদের সাথে মনমালিন্য। অতঃপর মন খারাপে কাঁদোকাঁদো অবস্থা_সবই আজ স্মৃতির খেরোখাতায় সযতনে চাপা দেয়া। সাদা শিউলি ফুলের লোভনীয় গন্ধ; তাকে আপন করে পাবার ব্যাকুলতা সবই আজ মনের আলমিরাতে কুঠরাবদ্ধ। কেমন আছে জানালার পাশের সেই শিউলি গাছটা; কতটা বড় হয়েছে; আজও ফুল ফোটে কিনা; সেসবের আর খোঁজ রাখা হয় না। জীবনের প্রয়োজনে; বাঁচার তাগিদে কংক্রিটের এই প্রাণহীন শহরের গোমুট আর ধুলি-ধূয়া বিবর্ণ বাতাসকে আপন করে নিয়েছি। এখানে প্রতিনিয়ত আমার স্বপ্ন আর উন্মোক্ত আকাশ কে ঢেঁকে দিচ্ছে অন্যজনের আকাশচুম্বী দালান। একখন্ড অখন্ড আকাশ এখানে স্বপ্নের মত। শরত এখানে শুধু যার আর আসে। পরিবর্তন এখানে সংকীর্ণ, স্তব্ধ, পরিলক্ষিত হয় ইন্টার্নেট; টেলিভিশনের পর্দা আর অনুভূত হয় কাগজের পাতায়। তবুও বেঁচে আছি। বাঁচতে চাই অঙ্গনা শরতের ছোঁয়ায়।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×