এক সময় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, এমসি কলেজ, বিএল কলেজ, কারমাইকেল কলেজের মতো অনেক কলেজের সুনাম-সুখ্যাতি ছিল। আজ তা অনেকটাই ম্লান। শিক্ষকস্বল্পতা, প্রযোজনীয় পরিকাঠামো, হল-সেমিনারসহ সামগ্রিক আয়োজন তৈরিতে অবহেলা এ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। জ্ঞান বিতরণ নয় কেবল পরীক্ষা নেবার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে কলেজগুলো। চাহিদা অনুসারে অর্থ বরাদ্ধ না দেবার ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালগুলো চলছে ধুঁকে ধুকেঁ। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যে হারে বেতন ফি ও বিভিন্ন ভাবে টাকা বাড়াচ্ছে সে হারে শিক্ষার্থীরা নানা অপকর্মে জড়িত হয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তো অবস্থা আরো করুন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি হতে না পেরে অনেক গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। বছর বছর বেতন ফি বৃদ্ধি করাতে তারাও দেহ ব্যবসার মত পদ বেছে নিচ্ছে।
ইউজিসি‘র ২০ বছর মেয়াদি কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে খরচ চালানোর জন্য বেতন-ফি বৃদ্ধি, পরিবহন-হলে ভর্তুকি কমানো, বাণিজ্যিক নাইটকোর্স চালু করতে হবে ইত্যাদি। আর দেশি-বিদেশী ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর অর্থায়নে চালাতে হবে শিক্ষা ও গবেষণাকার্যক্রম।
এখানে দেশি-বিদেশী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী গুলো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকগণ। শিক্ষা কে তারা এখন ব্যবসা হিসেবে গড়ে তুলেছে। আবার শিক্ষার্থীরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ যোগাতে না পেরে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ছে।
যথাযোগ্য বেতন ও সম্মান থেকে বিঞ্চত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাধ্য করা হচ্ছে ইউজিসি‘র কৌশলপত্র বাস্তবায়নে। এভাবে জনগণের ট্যাক্সে চলা পাপলিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে বেসরকারিকরণের ক্রে প্রসারিত করা হচ্ছে। দলীয়করণ ও ঘুষ দুর্নীতি মধ্য দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। পাশাপাশি সন্ত্রাস দখলদারিত্ব কায়েম ও পরিকল্পতভঅবে ছাত্রসংসদ নির্বাচন বন্ধ করে রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাননের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এখন সন্ত্রাসের আড্ডা খানায় পরিণত হচ্ছে। ক্ষমতাশীল দলের হাজার হাজার গ্রুপ। বিরোধী দলের গ্রুপ। তার সাথে অঙ্গ সংগঠন গুলো সন্ত্রাস।
এইভাবে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে নয়, সর্বস্তরে শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাজ তান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কাজ করছে। তার অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মার্চ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ৪র্থ কেন্দ্রিয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
শিক্ষার অধিকার রক্ষার এ সম্মেলন সফল করতে দেশবাসীসহ সমগ্র ছাত্রসমাজের কাছে আমরা অকুন্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:২০