somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুরুষতান্ত্রিক লিঙ্গ :: অক্ষম হোক।।

১৮ ই জুলাই, ২০১১ রাত ২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগেও অনেক লেখালেখি হয়েছে, অনেক স্লোগান, অনেক কথা, ধুয়ে গেছে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার জোয়ারে। তবু আরও একবার বুক বাধি আমরা আশায়, স্বপ্নে ... কেননা আমরা স্বপ্নের জন্য বাঁচি, স্বপ্নের মাঝে নয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বীভৎস মুখোশ টেনে ছিঁড়ে ফেলা হোক এই প্রত্যাশায় -

আসুন, এক বোনের বাঁচার আর্তনাদ শুনি ::

১.
“আমি ভিকারুন নিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা দিবা শাখার একজন নিয়মিত ছাত্রী। আমি ছাত্রী হিসেবে ভাল ফলাফলের জন্য প্রতি বিষয়েই স্কুলের শিক্ষকদের কাছে কোচিং করি। যেমন লুৎফর রহমান স্যারের কাছে গণিত, মাহবুবুল হক স্যারের কাছে ইংরেজি, জাহাঙ্গীর আলম স্যারের কাছে পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন, জিনাতুন্নেছা আপার কাছে জীববিজ্ঞান এবং পরিমল জয়ধর স্যারের কাছে বাংলা। অত্র স্কুলে আমি চতুর্থ শ্রেণী থেকেই পড়ে আসছি। পরিমল জয়ধর স্যার স্কুলে বাংলা বিষয় পড়ান বলে আমি তার কোচিংয়ে গত মে ২০১১ থেকে ১০ জনের ব্যাচে পড়া শুরু করি। আনুমানিক ২০-২৫ দিন পরে কোচিং ক্লাসে পড়তে যাওয়ায় আমার একটু বিলম্ব হয়। দেরিতে যাওয়ায় যেটুকু পড়ায় আমি অনুপস্থিত ছিলাম সেটুকু পড়া স্যার আমাকে বুঝিয়ে দেবেন বলে দেরি করতে বলেন। সবাই চলে যায় কিন্তু আমি রয়ে যাই। সবাই চলে গেলে আমি আগের পড়াটুকু পড়তে থাকি। স্যার মূল দরজা বন্ধ করে রুমে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দেন এবং আমি কিছু বুঝার আগেই আমার মুখ বেঁধে ফেলেন। মুখ বাঁধা থাকায় আমি কিছু বলতে পারিনি। হাত ছোড়াছুড়ি করতে যাওয়ায় তিনি আমার ওড়না দিয়ে আমার হাত পেছনে বেঁধে ফেলেন। হাত বেঁধে সে আমাকে ভীষণ মারধর করে। মারধর করে সে আমাকে উলঙ্গ করে ফেলে এবং আমার ছবি তোলে। ছবি তোলার পর সে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্ব হয়ে যাই এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। এরপর সে আমার বাঁধন খুলে দেয় এবং সাবধান করে দেয় যে ঘটনা কাউকে বললে, নিয়মিত তার ক্লাস না করলে সে আমার ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে এবং আমাকে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয়। এতে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি এবং দিশাহারা হয়ে যাই। এরপর জুন ১৭ তারিখ লুৎফর স্যারের ব্যাচ থেকে পড়ে আমি পরিমল স্যারের ব্যাচে পড়তে যাই। তখন অন্য ব্যাচ পড়ছিল। স্যার আমাকে পাশের রুমে বসতে বলেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাচ ছুটি দিয়ে সদর দরজা বন্ধ করতে যান। তখন আমি দৌঁড়ে গিয়ে তাকে দরজা বন্ধ করতে বারণ করি। তখন সে আমাকে ধাক্কা দেয় এবং মাথা দেয়ালে লাগায় আমি মাথায় ব্যথা পাই। তখন সে আমাকে ধমক দেয় যে, ‘তোকে বলেছি আমার ইচ্ছার বাইরে যাবি তো তোকে জানে মেরে ফেলবো’। ১৮ তারিখ সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ১৯ জুন তারিখে ঘটনাটি আমার সহপাঠীদের অবহিত করি। তারা আমাকে ঘটনাটি শাখা প্রধানকে (লুৎফর রহমান) জানাতে বলে। তারা আমাকে পরামর্শ দেয় যে, শাখাপ্রধান এ বিষয়টির সুষ্ঠু বিচার করতে পারবেন। সেদিন আমি আমাদের শাখাপ্রধান লুৎফর রহমান স্যারকে ব্যাপারটি বলতে যাই। কিন্তু তিনি ব্যক্তিগত বা স্কুলের কাজে স্কুলে ছিলেন না বিধায় তাকে ওইদিন ঘটনাটি জানাতে পারিনি। জুন ২০ তারিখ স্যার স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। জুন ২১ তারিখে তিনি স্কুলে আসেন এবং আমি তাকে সুযোগ বুঝে ব্যাপারটি জানাই। তিনি আমাকে বললেন যে, তিনি ঘটনাটি দেখবেন। লুৎফর রহমান স্যারকে ঘটনা জানানোর পরও ২২শে জুন পরিমল স্যার স্কুলে এলে আমি লুৎফর স্যারকে পুনরায় ব্যাপারটি বলি। তিনি আমাকে ব্যাপারটি ভেবে দেখছেন বলে আশ্বস্ত করেন। জুন ২৩ তারিখে স্কুলে অভিভাবক মিটিং ছিল যেখানে আমাদের স্কুলের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমও উপস্থিত ছিলেন। সেদিন পরিমল স্যারকে আমরা স্কুলে দেখিনি। এরপর ২৬ ও ২৭শে জুন তারিখ অসুস্থতার কারণে আমি স্কুলে উপস্থিত হতে পারিনি। জুন ২৮ তারিখে স্কুলে গেলে আমাদের দশম শ্রেণীর সব ছাত্রী পরিমল স্যারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমরা আলোচনায় বসি। আলোচনায় তার সম্পর্কে আরও কিছু কুরুচিপূর্ণ কথা উঠে আসে। তখন আমরা সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেই যে, আমরা অধ্যক্ষকে এ ব্যাপারে অবহিত করবো। তাই আমরা পরিমল স্যারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে আবেদনপত্র তৈরি করি। আবেদনপত্রটি ক্লাসে পড়ে শোনালে স্বেচ্ছায় সবাই এতে নিজ নিজ নাম স্বাক্ষর করে। এরপর আবেদনপত্রটি শাখা প্রধান জনাব লুৎফর রহমান স্যারের মাধ্যমে অধ্যক্ষ বরাবর পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ জানাই। উল্লেখ্য যে, আমি স্কুলে অনুপস্থিত থাকাকালীন ২৭শে জুন ঘটনাটি স্কুলে জানাজানি হয়ে যায়। অতএব, এ ব্যাপারটি আপনার সুবিবেচনায় এনে আমার ওপর পরিমল স্যার যে বর্বরোচিত, অমানবিক, অনৈতিক, ঘৃণিত আচরণ করেছেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”

এই লেখাটি আমরা বোধহয় অনেক আগেই পড়েছি। আবার হয়তো এখন। কি মনে হল সবার কাছে? অনেকের হয়তো মনে হল, “কি বেহায়া মেয়ে! এইসব সম্মুখে বলে নাকি।” যাদের নিকট এরূপ মনে হল, তাদের পরবর্তী মনস্কামনা সহজেই অনুমেয়। তারা আরেকবার চিন্তায়, বিবেকে, সম্মুখে বোনটিকে ধর্ষণ করতে চায়, ধর্ষণের অলিখিত ফতোয়া জারি করে। কিন্তু আমার মনে হয়, যে নারী বর্তমানে এই পদক্ষেপ নিতে পারে, বিচারের দাবিতে হয়ে উঠতে পারে প্রীতিলতা, তাকে বিদ্রোহী শুভকামনা। সে আমার গর্ব। কিছু মানুষও হয়তো এরকম ভাবছে। তাদেরকে সাধুবাদ জানাবো না, বাদবাকি পুরুষ নামক অসুস্থ পশুগুলোকে লিঙ্গচ্ছেদ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করবো।

এখানেই শেষ নয়। আরো আছে সম্প্রতি মধ্যযুগীয় বর্বরতায় আদিবাসী নির্যাতন। নিচের ছবিটি দেখুন ::



গোদাগাড়ীতে উপজাতি মহিলা মরিয়ম মুর্মুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় ধর্ষণের পর হত্যার ছবি।

এই ধরনের ঘটনা বরাবরই হচ্ছে। আমরা আঙ্গুল চুষছি, আর ওদিকে সরকারসহ আপামর জনতা দোহাই দিচ্ছে পোশাকের, দোহাই দিচ্ছে তাদের পৌরুষের! চলমান বাজারি সরকার কাঠামো নারীকে পণ্যসামগ্রী ব্যতীত একজন মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যর্থ। গণমাধ্যমের সবটুকু সাহায্য নিয়ে পুঁজিবাদী সমাজ ভোগের পণ্যে পরিণত করছে নারীসত্ত্বাকে, যে নারী আমার মা, আমার বোন .... তাকে।। সমাজের প্রতিটি স্তরে (ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবী-শ্রমিক) ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে ভোগবাসনার বিষ !

আমাদের আশেপাশেই, আমাদের বন্ধুমহল, আত্মীয়স্বজন, এমনকি পরিবারের অনেককেই “অই ছেড়ি তোর ওড়না বুকে দে, গলার জন্য না”, “খাইরুনলো তর ছুটু ছুটু dress ! ছিরাফারা জামা পইড়া পাগল করলি দেশ”- এই ধরনের ফেসবুক পেজের সদস্য হতে দেখি। তখন আমাদের পুরুষত্ব নিয়ে আমাদের কোন সন্দেহ থাকে না। আমরা এর বিরোধিতা করি না। আমাদের মস্তিস্ক সাড়া দেয় না, এটা কার অবমাননা? আমরা ইভটিজিং-এর পক্ষে ভোট দেই, নারীর পোশাকের দোহাই দিয়ে! এ কোন পাভার্ট জাতিতে পরিণত হচ্ছি আমরা? এসময় পুরুষতান্ত্রিক লিঙ্গ কামনার সাগরে সাঁতার কাটতে লিকলিকিয়ে ওঠে। এসময় আমরা পৌরূষের উন্মাদনায় ভুলে যাই আমার মা-বোনও একজন নারী। আসলে এতদিনের জানাশোনায় এতটুকু সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, “মানুষকে বস্ত্র পরিহিত করে না হয় লজ্জা নিবাড়িত হয়, কিন্তু এমন কোন বস্ত্র আজও এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা তৈরী করতে পারে নি যা তার লিঙ্গের বীভৎসতা নিবাড়ন করবে।” যেসব মহান ব্যক্তিবর্গ ধর্ষণ, নিপীড়ণ, ইভটিজিং কে বৈধ ঘোষণা করেন পোশাকের দোহাই দিয়ে, তাদের সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত পৌরুষত্ব থেকে তাদের মা-বোনেরাও নিরাপদ নয় বলেই বোধগম্য।


২.
সরকার দলীয় প্রভাবশালী মহলের তদবিরে লম্পট শিক্ষক গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার পরিমল জয়ধর ও তার সহযোগীরা ভিকারুননিসা স্কুল এন্ড কলেজে নিয়োগ পেয়েছিলেন। নিয়োগ পরীক্ষায় যিনি প্রথম হয়েছিলেন এবং যারা মেধা তালিকায় প্রথমদিকে ছিলেন, তাদের বাদ দিয়ে সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। কিন্তু তা ছিল লোক দেখানো। সদ্য ভেঙে দেয়া প্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির সভাপতি ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন- এমপি’র সুপারিশে এবং প্রবল বিক্ষোভের মুখে সরে যেতে বাধ্য হওয়া অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমের সরাসরি আশীর্বাদে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। দলীয় প্রভাবে নিয়োগ পাওয়ার পর এসব শিক্ষক কাউকেই তোয়াক্কা করতো না। তাদের প্রভাবে প্রতিষ্ঠানের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা টুঁ শব্দও করতে পারতেন না। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে থাকতেন ক্যাম্পাসের সব শিক্ষক-শিক্ষিকা। শিক্ষক-শিক্ষিকারা অভিযোগ করেছেন, সরকারদলীয় প্রভাবের কারণে এসব লম্পট শিক্ষক বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তারা শিক্ষিকাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেই ক্ষান্ত হতো না; ছাত্রীদের ইভটিজিং পর্যন্ত করতো। শেষেতো ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করতেও তারা ভয় পেত না। তারা বলেন, লম্পট পরিমল ও তার সহযোগীরা কতজনের যে সর্বনাশ করেছে কে জানে। অনেকে হয়তো মানসম্মানের ভয়ে মুখ খোলেননি।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, ভিকারুননিসা স্কুলের কোনো শাখায়ই ২ জনের বেশি পুরুষ শিক্ষক থাকে না। কিন্তু শেখ হাসিনার বান্ধবী পরিচয়ধারী অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম দায়িত্ব নেয়ার পর ৬ জন পুরুষ শিক্ষক বিশেষ সখ্য ও দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ দেন। এরা হলেন—পরিমল জয়ধর, বরুণচন্দ্র বর্মণ, বাবুল কর্মকার, প্রণব ঘোষ, বিশ্বজিত্ ও বিষ্ণু চন্দ্র। এ ৬ শিক্ষককেই নিয়োগ দেয়া হয় বসুন্ধরা শাখায়। এদের মধ্যে শিক্ষক বিশ্বজিত্ ছাড়া বাকিদের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে অনৈতিক আচরণ ও সম্পর্কের অভিযোগ ওঠে।
সম্প্রতি এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় ভিকারুননিসা স্কুলের ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রতিষ্ঠানে টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মহল থেকে এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে। পরে নরপশু শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে স্কুল থেকে বরখাস্ত এবং তার সহযোগী লম্পট শিক্ষক বরুণচন্দ্র বর্মণ ও আবুল কালাম আজাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অন্যদের বিভিন্ন শাখায় বদলি করা হবে বলে জানানো হয়। এছাড়া বসুন্ধরা শাখার ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক লুত্ফর রহমানকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে তার পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়। গত ৫ জুলাই ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সিদ্ধেশ্বরী মূল শাখায় গভর্নিংবডি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় একটি মামলা করেন। পরিমলকে কেরানীগঞ্জে তার বড় বোনের বাসা থেকে ৭ জুলাই ভোররাতে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে অন্য এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে পরিমলকে রাজধানীর উত্তরা মডেল স্কুল থেকেও বহিষ্কার করা হয়। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়ার লাটেংগা গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম ক্ষিতিশ জয়ধর। শিক্ষিকারা জানান, বসুন্ধরা শাখার শিক্ষিকারা গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল হোসনে আরা বেগমের কাছে এসব শিক্ষকের আচরণ নিয়ে অভিযোগ করেন। এতে প্রিন্সিপাল শিক্ষিকাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। তাদের তিনি শাসিয়ে বলেন, আপনারা এতো কনজারভেটিভ কেন? পরে বাংলা বিষয়ের শিক্ষক পরিমল জয়ধর ও বরুণ চন্দ্র বর্মণের বিরুদ্ধে ক্রমান্বয়ে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে অনৈতিক আচরণ ও সম্পর্কের অভিযোগ বাড়তে থাকে। কিন্তু প্রিন্সিপাল তাদের সতর্ক না করে উল্টো তাদের মদত দিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে পরিমল জয়ধর দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে একাধিকবার জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করলে ওই ছাত্রী শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে সম্প্রতি অভিভাবকের মাধ্যমে কলেজ প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ জানায়। অভিযোগে শারীরিক সম্পর্কের সেই দৃশ্য ইন্টারনেটে প্রচার করার হুমকি প্রদানের লিখিত অভিযোগও আনা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, যৌন নিপীড়নের শিকার ছাত্রী লিখিত অভিযোগ করলেও এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল বলেন, ‘মেয়েটি ভালো নয়, পরিমল ভালো’।শিক্ষিকারা জানান, প্রিন্সিপালই ভালো নয়। নির্মম পরিস্থিতির শিকার একটি মেয়েকে তিনি কিভাবে খারাপ বলেন? শিক্ষিকারা এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির কাছে পুরুষ শিক্ষক পরিমলসহ অন্যান্য লম্পট শিক্ষকের বিচার ও একই সঙ্গে তারা হোসনে আরার অপসারণও দাবি করেন।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে ধর্ষক পরিমলের প্রশ্রয়দাতা অধ্যক্ষ হোসনে আরাকে অবশেষে বৃহস্পতিবার সরাতে বাধ্য হয় সরকার। উত্তাল ভিকারুননিসার পরিস্থিতি শান্ত করতে মঞ্জুআরা বেগমকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্ব (চলতি) দেয়া হয়। আগের গভর্নিংবডি ভেঙে দিয়ে চার সদস্যের এডহক কমিটি গঠন করা হয়। গত বুধবার রাতে ভিকারুননিসার পরিস্থিতি তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শককে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়।
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ফাহিমা খাতুন আমার দেশকে বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে গত বৃহস্পতিবার মঞ্জুআরা বেগমকে ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব (চলতি) দেয়া হয়েছে। এর আগের দিন (বুধবার) অধ্যক্ষ আম্বিয়া খাতুনকে দায়িত্বে বসানো হলেও তা নিয়মতান্ত্রিক ছিল না। এদিকে অধ্যক্ষ হোসনে আরা তিন মাসের ছুটিতে গেছেন। আমরা তার ছুটি মঞ্জুর করেছি। তার অবর্তমানে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন করবেন প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুআরা বেগম। প্রয়োজনে এডহক কমিটি স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ দেবেন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আমার দেশকে বলেন, আমি সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঢাকা বোর্ড ভিকারুননিসার গভর্নিংবডি ভেঙে দিয়ে নতুন এডহক কমিটি করেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সেন্টিমেন্ট বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা বোর্ড ভিকারুননিসায় ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব দিয়েছে মঞ্জুআরা বেগমকে। তিনি আরও জানান, ভিকারুননিসায় পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে এডহক কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। এ কমিটি ৬ মাসের মধ্যে নতুন কমিটি গঠন করবে এবং বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিরসনে পদক্ষেপ নেবে। প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থ ও শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের মতামত বিবেচনা করেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে যাবেন তারা।
এদিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের নতুন গভর্নিংবডির আহ্বায়ক ও ঢাকার জেলা প্রশাসক মহিবুল হক গতকাল পূর্ণাঙ্গ (চার সদস্যবিশিষ্ট) এডহক (আহবায়ক) কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যসচিব হলেন নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঞ্জুআরা বেগম। অন্য দু’জন সদস্যের মধ্যে অভিভাবক প্রতিনিধি হলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোশাররফ হোসেন এবং শিক্ষক প্রতিনিধি গণিত বিভাগের শিক্ষক নাসরীন আক্তার।
প্রসঙ্গত, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে বেশ কিছুদিন ধরেই টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছিল। শিক্ষার্থী-অভিভাবক-শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের আন্দোলনের মুখে বুধবার সকালে গভর্নিংবডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্ষক শিক্ষক পরিমলের প্রশ্রয়দাতা প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবী অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমকে অপসারণ করে জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকা আম্বিয়া খাতুনকে গত বুধবার প্রতিষ্ঠানটির নতুন অধ্যক্ষ মনোনীত করা হয়। কিন্তু বিকেলে সেই গভর্নিংবডি বাতিল করে ঢাকা জেলা প্রশাসক মহিবুল হকের নেতৃত্বে ৪ সদসস্যের একটি এডহক কমিটি গঠন করে সরকার। জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির দুটি অংশের বিরোধের কারণে কমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। গত মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির ৫ সদস্যের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমকে অপসারণ ও নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে একই প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আম্বিয়া খাতুনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। গভর্নিংবডির এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হননি গভর্নিংবডির সভাপতিসহ অপর ৪ সদস্য। তারা সবাই সরকার দলীয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার দ্রুত সমাধানের জন্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। অপরদিকে এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে অভিযোগ পাবার পরও এর সুরাহা না করে গত ৭ জুলাই আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডে লম্ব্বা সফরে চলে যান শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির প্রধান বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি। তিনি ব্যক্তিগত কাজে নিউইয়র্ক অবস্থান শেষে আগামী ২১ জুলাই লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দেবেন। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তিনি ঢাকায় ফিরবেন বলে জানা গেছে। এদিকে গত সোমবার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের লম্পট শিক্ষক পরিমল জয়ধর ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের কথা স্বীকার করে। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার একদিন আগেই তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে আনা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) এসএম শাহাদত হোসেন তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে আবেদন জানান। জবানবন্দিতে পরিমল ঘটনা কথা স্বীকার করে।

তথ্যসূত্র :: সামু ব্লগ, Click This Link

এই তথ্যাদির পাশপাশি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা না বললেই নয়। অর্থাৎ, সরকারের সাথে এদের লেজুড়েবৃত্তির ইতিকথা! প্রথম আলো পরিমলের পক্ষে সাফাই গাইছে প্রথম থেকেই। তারা নিউজ রিভিউ করছে এভাবে, সেদিন মেয়েটি কি পোশাকে ছিল? কি অবস্থায় পড়তে গিয়েছিল? ইত্যাদি ধরনের পোশাকি চিন্তামূলক প্রশ্নের! এর কারণ কি? কারণ এই যে, ঘুণে ধরা বাণিজ্যিক শিক্ষাব্যবস্থায় সরকারের কাছে নিজের মেয়ের সম্ভ্রমের দামও নিতান্তই গৌণ। আর তাই, হোসনে আরা একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও ভর্তি বাণিজ্যের সরকারি মদদ টিকিয়ে রাখতে পা চাঁটছেন পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার, নির্যাতিতাকে দোষারোপ করে টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেন পরিমলের মত হাজারো পরিমলকে। তিনি মিউচুয়াল সেক্সের দোহাই দিয়ে আড়াল করতে চাইছেন পরিমলের মতো অনৈতিকতার কাণ্ডারীদের। আর আমাদের সরকারব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের ফেটে পড়া ক্রোধ, দুর্নিবার আন্দোলনকে রাজনীতির দোহাই দিয়ে ধামাচাপা দিচ্ছেন! বাহ, গণতন্ত্রী বাহ! এই তোমার নমুনা? সাধারণের যথার্থ দাবিদাওয়া দূরে ঠেলে তোমরা আপাত ব্যস্ত পুরুষতান্ত্রিক লিঙ্গ নিয়ে খেলতে! হোসনে আরা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ বিরোধীদলীয় নেত্রীর কাছে একটি অনুরোধ, আত্মকেন্দ্রিকতার বেড়াজাল ছিঁড়ে একবার ভাবুন, আমার নির্যাতিতা বোনটি আপনার মেয়ে হতে পারতো, আপনি স্বয়ং হতে পারতেন। তখনও মদদ দিতেন ধর্ষণের পক্ষে? মধ্যযুগীয় কায়দায় কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেন ধর্ষিতাকে? নাকি ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্য আর পদোন্নতির লিলুয়া বাতাস শরীরে মাখতে নিজেকে বিকিয়ে দিতেন সহসা? মনে করতেন, এই একটু আধটুতে কি যায় আসে?!! প্রশ্ন করুন সবাই, প্রশ্ন করুন নিজেকে।

সবশেষে, প্রতিরোধে অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষকে লাল সালাম। শিক্ষকদের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ কামনা করি। কেননা, শিক্ষক শব্দের মর্যাদা রাখেনি ওই বেজন্মা পুরুষ। সমাজের প্রতিটি পরিমলের ফাঁসি চাই, নতুবা লিঙ্গচ্ছেদ চাই।।

২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×