somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলছে এ দেশ

০৭ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বাস এমনই একটা বিষয় যার অভাব একটা মানুষের মনকে নরকের জ্বালাতনে জ্বালাতে পারে সারাক্ষন। যেমন,স্বামী-স্ত্রী দুজনের বিশ্বাসে যখন কোন ঘাটতি থাকে না, তখন তারা দিব্যি সারাদিন স্ব স্ব অবস্থানে নিজস্ব কাজ করে যায়, কোনই সমস্যা হয়না। কিন্তু যখনই বিশ্বাস ভঙ্গ হয়ে যায় তখন পাশে বসে হেসে হেসে মোবাইলে কথা বললেও মনে হয় কি না কি হয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় বিভিন্ন গাড়ির ড্রাইভারদের দেখবেন অযথাই হর্ন দিচ্ছে; এমন একজন ড্রাইভারকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, সামনে কেউ নাই তা -ও হর্ন দিচ্ছেন কেন? উত্তরে বলল, সামনে নাই পাশে যে আছে সে কখন হঠাৎ সামনে চলে আসে তার বিশ্বাস আছে? তখন বুঝতে পারলাম, আসলে সামনের গাড়ির দোষ না, দোষ হচ্ছে বিশ্বাস, যা আমার গাড়ির ড্রাইভারের নেই। ঠিক তেমনই বিশ্বাসহীনতায় ভুগছে আমাদের রাজনীতিবিদরা। অবশ্য তাদের যে চরিত্র এতদিনে প্রকাশ পেয়েছে তাতে তারা নিজেরাই নিজেদের বিশ্বাস করে কি না আমার সন্দেহ আছে! কিন্তু তারপরও যে কোন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে যারা দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আরোহন করে থাকে, তাদের কর্মকান্ডে নুন্যতম বিশ্বাস দেশের মানুষজন করে, যে কারনে ঘুরে ঘুরে তারাই রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। কিন্তু জনগণের বিশ্বাস থাকলেও তারা নিজেরা একে অপরকে এক ফোটাও বিশ্বাস করে না। একদল চায় নির্দলীয়, আরকদল সর্বদলীয়। কারন কি তারা নির্দলীয় বা সর্বদলীয় ধরনের সরকারকে বিশ্বাস করে বলে? জী না! তারা নির্দলীয়-সর্বদলীয় দেরকেও বিশ্বাস করেনা, তারা তাদের ক্ষমতায়নে সুযোগ্য হবে কোনটি সেটির হিসাব করে, বিশ্বাস করে নয়। অথচ এই বিশ্বাস হওয়ার কথা ছিল আমাদের মত সর্বাধিক মুসলিম জনমানুষের দেশের দলগুলোর চরিত্রের একটি অলংকার। কিন্তু তা হয়নি। কারন, আসলে আমরা মুসলমানিত্বের সেই গুনটুকু কোনভাবেই অর্জন করতে পারিনি। আমরা শুধু কথায় কথায় ৯০% মুসলমানের দেশ বলে নিজেদের জাহির করতে পছন্দ করি। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে মুসলমানিত্ব, যার পুর্ব শর্ত পরহেজগারি -তা ধারন ও লালন করতে অসমর্থ হয়েছি। সমাজে যেই মুরুব্বীরা ধর্মানুরাগী বলে পরিচীত, তারা আসলে এভাবে পরিচীত হতেই পছন্দ করেন। খুব কম সংখ্যক মানুষ খুজে পাওয়া যাবে যারা এই পরিচয় ছাড়া নিজেদের ধর্ম-কর্ম করে যাওয়ায় মনোনিবেশ করে আছেন। ঠিক এভাবে গড়ে উঠেছে এই সমাজ এবং সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্র। তাই পরহেজগার মুসলমানের সংখ্যা খুব কমই রয়ে গেছে। বেশির ভাগই লেবাসধারী। এই মুসলমানদের নিয়ে একটি মুসলিম রাষ্ট্র দেখার স্বপ্ন যারা দেখেছেন, তারা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বোকামী করছেন আমি বলব। আবার এই রাষ্ট্র তৈরি করার উপায়ও ছিল সম্পুর্ণরূপে হটকারি। সরকারকে তথা আওয়ামি লীগের মত একটি আত্নবিশ্বাসের স্বল্পতা সম্বলিত (অন্তত পক্ষে বর্তমান সময়ের জন্য) একটি দলকে চিপায় ফেলে অনেকটা ব্ল্যাকমেইল করে তার মাধ্যমে মুসলিম রাষ্ট্র গঠন! কতই নির্বুদ্ধিতাপুর্ণ হটকারিতা! আমি কিন্তু বলছি যারা স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং স্বপ্ন দেখে রাস্তায়ও নেমেছিলেন তাদের কথা! হেফাজতিদের কথা নয়! তারাযে কি ছিল এবং কি করতে চেয়েছিল তা ইতিমধ্যেই জাতীর কাছে প্রমান হয়ে গেছে। যাহোক, স্বপ্ন দেখা এই মানুষগুলোও শেষ পর্যন্ত কিন্তু বিশ্বাস রাখতে পারেনি, আর তাই তারা আর নেমে আসেনি রাস্তায়, মধ্যরাতের অভিযানের সময়। কারন, সেই বিশ্বাসের দুর্বলতা! সুতরাং এরকম বিশ্বাসের দুর্বলতা সম্বলিত মুসলমানদের দিয়ে মুসলমানি রাষ্ট্র কায়েমের যে কথা বলা হয় তা সবই ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য পুরণের জন্যই বলা হয়। ধর্মানুভুতি সম্পন্ন স্বল্প ঈমানী মানুষজনকে বলব এ ধরনের আহবানে সাড়া দেয়ার চিন্তা না করে, কিভাবে নিজের বিশ্বাসকে জোরালো করা যায় তার দিকে মনোনিবেশ করতে। সেটাই হবে সর্বোত্তম পন্থা!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×