
আমাদের দেশে ভোটের দিন মানে উৎসব, যাকে আমরা বলি ‘ভোট উৎসব’। এই উৎসবে দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনো ভাবে সম্পৃক্ত হয় এবং বড়-ছোট সকলেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ফলাফলের জন্য।
ভোট মানেই কেউ হারবে, কেউ জিতবে। ভোট মানেই পরাজয়কে বরণ এবং জয়কে গ্রহণ করার উভয় সম্ভাবনা। যে বিজয়ী হবে তার উচিত হবে পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে গিয়ে সমবেদনা জানানো, তেমনি যে পরাজিত হবে তারও উচিত হবে বিজয়ী প্রতিদ্বন্দ্বীকে মন থেকে মেনে নিয়ে অভিনন্দন জানানো।
আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে পরাজিত হলে নির্বাচন মানিনা ধরণের সংস্কৃতি চলে আসছে। এই সংস্কৃতি আমাদের দেশে একটা বিকৃত প্রজন্মের জন্ম দিচ্ছে। এধরণের মনোভাব পরাজয়কে মেনে না নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করছে। যা ভয়ংকরভাবে ব্যধিরুপে আমাদের সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে পরাজয়কে বরণ করার সক্ষমতা নিয়েই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে।
নির্বাচনকে ঘিরে আমাদের দেশে খুব বেশি মাতামাতি থাকলেও অধিকাংশ মানুষই জানেনা কেনো এবং কাকে ভোট দেওয়া উচিত। অনেকই ভাবে গতবার অমুককে দিয়েছি, এবার তমুককে দেবো। কিন্তু ভোট তো এমন হওয়া উচিত নয়, ভোট তাকেই দিতে হবে যাকে ভোট দিলে এলাকার এবং সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নতি হবে। সবার আগে আমাদের মনে রাখা উচিত যার হাতে আমাদের দেশ, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ইতিহাস ভালো থাকবে তাকেই আমাদের ভোট দিতে হবে।
বাংলাদেশ আপনা-আপনি বাংলাদেশ হয়ে ওঠেনি। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থানের পিছনে রয়েছে হাজার হাজার মানুষের আত্মত্যাগ। ইতিহাস যে জাতি ভুলে যায়, ইতিহাস সেই জাতিকে ক্ষমা করে না। ইতিহাস ভুলে গেলে একটা জাতি ধ্বংস হয়ে যায়। আমাদের ইতিহাস হলো ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, দেশকে অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসাবে গড়ে তোলার এক উচ্চমানের ইতিহাস। আমাদের ইতিহাসকে ভুলে যাবে, অবমাননা করবে, ভুল ইতিহাস দ্বারা প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করবে এমন কাউকে ভোট দেওয়া আমাদের উচিত নয়।
আমাদের লাল-সবুজের বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আগামী দিনগুলোতে আমাদের অনেক অনেক চাওয়া আছে, স্বপ্ন আছে। আগামীতে আমাদের সবচেয়ে বড় চাওয়া – ব্যক্তিগত উন্নয়ন নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতার মতোই আমাদের লাল-সবুজের এই ছোট্ট দেশটি সকল ক্ষেত্রে সফল হোক, বাংলাদেশ সোনার বাংলায় পরিণত হোক - এটাই আমাদের কামনা।
যারা অভিযোগ করে তারা সারাজীবন অভিযোগ করেই যায়, নিজে কিছু করার চেষ্টা করে না। আজ আমাদের দেশ সুন্দরের পথে, আজ আমাদের দেশ উন্নয়নের পথে, আমরা এই অগ্রযাত্রাকে অভিবাদন জানায়। একসময় আমাদের দেশে মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ আসতো, এখন মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ চলে যায়। আমরা আর অন্ধকারে থাকতে চাই না, আমরা আর দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই না, আমরা উন্নয়নে পৃথিবীর বুকে মডেল হয়ে থাকতে চাই। ঠিক একইভাবে দারিদ্র, দুর্নীতি, অনিয়ম, সন্ত্রাসী, বেকারত্ব শব্দগুলোকেও রূপকথার গল্প হিসাবে দেখতে চাই।
শুভকামনা সবসময় আমাদের লাল-সবুজের দেশটার জন্য। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে, একদিন বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর চোখে সুন্দরের উদাহরণ, ইনশাল্লাহ।
© আলমগীর কাইজার
২৯.১২.২০১৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


