ছোট্ট পাহাড়ী টিলা ছুঁয়েছে নদীকে..ওপাড়ে পাহাড়ের কোলে, শুয়ে আছে মাঠ, জ্যোৎস্না ধোয়া সরূ মেঠো পথ, গ্রাম, সারি সারি গাছ..হাওয়ার সাথে অবিরাম মিতালি..দীগন্তের গায়ে কালো ছায়া বিছিয়ে অরণ্য..জ্যোৎস্নার বৃত্তের বাইরে অন্ধকার গভীর, গভীরতর..
দু’জনে বসে আছি চুপচাপ..মনে মনে কত কত কথা যে হয়ে যাচ্ছে..নিস্তব্ধ, নিঝুম চারপাশ-গাঢ় হয়ে উঠছে ক্রমাগত..বহুদূরে অরণ্যের ওপাশ হতে ভেসে এলো ঝিরিঝিরি বাতাস..ফুলের গন্ধ..আকাশের গান..আকাশে মেঘের সাথে চাঁদের লুকোচুরি..
এখনো নিশ্চিন্ত মনে ওখানে গান গায় পাখিরা..আকাশ ছোঁয় বৃক্ষসারী..লুকোচুরি করে হাওয়ার সাথে..বাগানে গুচ্ছে গুচ্ছে উথলে ওঠা ফুল..রাতের মধুর জ্যোৎস্না থির হয়ে থাকে বাগানে..বসন্তে বাতাসে কী নিশ্চিন্তে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে প্রজাপতি..
আস্তে আস্তে তৈরি হচ্ছে মুক্ত বিন্দু..বড় হতে হতে একসময় গড়িয়ে পড়লো টুপ করে..চরাচর ডুবে যাওয়া কি অসম্ভব কষ্ট দু’জনার..হতাশা, শুধু হতাশা আর ব্যর্থতা..অথচ এর থেকে মুক্তি পাবার জন্যতো কত কিছুই করা হলো..তবু শেষ পর্যন্ত জিতলো হতাশাই..এই ব্যর্থতাবোধ, সককিছুর ভেতর থেকেইতো মন্জরিত হলো সুগভীর বোধ..এখনও হয়তো শেষ হয়ে যায়নি সব..এখনও হয়তো সুন্দর করে তোলা যায় সব..এ মন..এ জীবন..
সোনালী আলোর চুমু নিয়ে এসেছিলো সন্ধ্যা..জ্যোৎস্নার রহস্যমাধুরী নিয়ে রাত..আনন্দে ফুল ফোটালো বৃক্ষ..ফুলের সুবাস বুকে নিয়ে মাতাল হলো বাতাস..
বিষন্ন তারাভরা আকাশ..জানালার ফ্রেমে বন্দী..দুঃখভরা হাওয়ায় দুলছে রক্তের আঙুরলতা..
নির্বাক..নিথর বিদায়ের শঙ্খনীল ঘন্টা বাজছে মনে..হৃদয়ের মাঝে অবিরল জলধারা..অবিরাম দহন..ম্লান জ্যোৎস্নার নিথর ছায়া ঘরে..বাতাস ভারী দীর্ঘ নিঃশ্বাসে..মৌনমূখর পরিবেশ..হৃদয়ে হৃদয়ে অবিশ্রান্ত কথোপকথন..দু’জনার অন্তহীন ভালবাসা..
(..ডায়েরীর পাতা হতে কিছু লাইন..)