বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তাকে নিয়ে দলের মধ্যে আবার শুরু হয়েছে উন্মাদনা। দলের অনেক নেতা তার নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং তাকে বগুড়ার যে কোন একটি আসনে মনোনয়ন দেয়ার জন্য চালাচ্ছে জোর প্রচারণা। তবে এ প্রসংগে বেগম জিয়ার অবস্থান অনেকটা ধীরে চলো নীতি। তিনি চান আগে তারেক রহমানের সুস্থতা।
তারেক রহমানের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তারেক রহমান ক্র্যাচে ভর করে হাঁটছেন। তার ডানপায়ের মাংসপেশী শুকিয়ে যাওয়ায় এমনটি হচ্ছে। তবে চিকিৎসা চলছে।
গণতান্ত্রিক সরকার আসার পরপরই তারেক রহমানকে নিয়ে দলের মধ্যে আবার শুরু হয়েছে উন্মাদনা। তাকে আবার দলে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন দলের নেতারা। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে বগুড়া জেলা বিএনপি এবং ছাত্রদল।
এদিকে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, তাকে দলে ফিরিয়ে আনা এবং বগুড়ার একটি আসন থেকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি সম্বলিত পোস্টারিং করা হয়েছে।
তারেক রহমানের আইনজীবি এডভোকেট আহমেদ আযম খান দুপুরে ফোকাস বাংলাকে জানিয়েছেন, তারেক রহমান এখন কিছুটা সুস্থ। তার চিকিৎসা চলছে। তার একমাত্র মেয়ে জায়মা রহমানকে সেখানে একটি স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। দেশের সব খবরই তিনি রাখছেন। তবে রাজনীতি নিয়ে কোন প্রকার মন্তব্য করতে চান না তিনি।
বিগত ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ছাত্রদলের অনেক নেতা মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু বেগম জিয়া তাদের কাউকে মনোনয়ন দেননি। সকলে একত্রে তার সাথে গুলশানের কার্যালয়ে দেখা করতে গেলে তিনি তাদের সকলের উদ্দেশে বলেন, আগে তোমাদের ভাই সুস্থ হয়ে আসুক। তারপর তোমরা তার সাথে রাজনীতি করবে, নির্বাচন করবে। এরপর থেকে ছাত্রদলের নেতাদের তারেক রহমানের জন্য অপেক্ষা করছেন।
গত ৩১ জানুয়ারী চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বগুড়া জেলা বিএনপি আয়োজিত কর্মসূচীতে অংশ নিতে যান বগুড়ার গাবতলীতে। সেখানে একাধিক কর্মসূচীতে অংশ নেন তিনি। বগুড়া জেলা বিএনপি আয়োজিত জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় রেওয়াজ ভেঙ্গে প্রথমবারের মতো বক্তব্য রাখেন বেগম জিয়া। এর আগে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা এবং সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। তারা বেগম জিয়ার ছেড়ে দেয়া বগুড়ার দু’টি আসনের একটিতে তারেক রহমানকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানান। জবাবে বেগম জিয়া আবেগঘন বক্তব্যে বলেন, তারেক রহমানের বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না। সে গুরুতর অসুস্থ। তার অনেকদিন চিকিৎসা নিতে হবে। ডাক্তারের সাথে কথা বলা ছাড়া কিছু বলতে পারছি না। তবে বেগম জিয়ার এ বক্তব্যে থেমে যাননি বগুড়া বিএনপি নেতারা। তাদের প্রচেষ্টা চলছে।
তারেক রহমানকে রাজনীতিতে সক্রিয় করতে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। তারা নানাভাবে দলের হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।
উল্লেখ্য, তারেক রহমান ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তার ক্যান্টনমেন্টের বাসভবন থেকে জরুরী বিধিমালায় গ্রেফতার হন। ১৭ মাস কারাভোগের পর ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর তিনি সপরিবারে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন। তিনি বর্তমানে লন্ডনে চিকিৎসাধীন আছেন। তার বিরুদ্ধে মোট ১২টি মামলা রয়েছে। সব ক’টি মামলায় তিনি জামিনে আছেন।
বগুড়া