somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জরুরি টিপসঃ পুলিশের খপ্পড়ে পড়লে কিভাবে দ্রুত উদ্ধার পাবেন।

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিরোনামটা দেখে খটকা লাগতে পারে। হ্যা ভাই, ইহাই বাস্তবতা! চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী'র মত আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও মুর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠতে পারে(এই পোস্ট দেবার উদ্দ্যেশ্য কোনওভাবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খাটো করা নয়)।





যে কাজ গুলো কখনও করবেন নাঃ



১) তর্কে জড়াবেন নাঃ কখনও আপনি তাদের শিকার হন, তাহলে দ্রুত ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে তাদের কাজের বৈধতা নিয়ে তর্কে জড়াবেন না। না না না। একদম না। তাদের ভুল হলেও চ্যালেঞ্জ করবেন না। আপনার যুক্তিতে তাদের পরাস্ত করলেও আপনাকে জালে আটকানোর মত হাজারটা বৈধ/অবৈধ রাস্তা তাদের হাতে আছে, এবং সেগুলো প্রয়োগ হবে।



২) আমার অমুক পুলিশের বড় কর্তা, তমুক মন্ত্রী, সমুক এমপি, ইত্যাদি বলে পালটা হুমকি দিবেন নাঃ এটাও আরেকটা ব্লান্ডার। এই কাজও করবেন না, অন্তত তাদের এসব কথা বলবেন না। লাভ কিছুই হবে না(যদি এমন কেও থাকে, বেশ, তাদের জানান, সাহায্য চাইতে পারেন, কিন্তু এসব বলে ছাড় পাবার চেষ্টা না করাই ভাল!)। এসব বরং তাদের কাছে উপাদেয় 'শিকার'! সোহেল তাজ(সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী) এর ভাগ্নে কে পিটিয়েছি, সেনাবাহিনীর এক্টিং মেজরকে ধরেছি, সহকারী জজ বিচারককে হাতকড়া পড়িয়ে আটক করেছি, সচিবের ছেলেকে ফেনসিডিল সহ গ্রেফতার করেছি; এগুলো তাদের কাছে তৃপ্তি সহকারে অত্যন্ত মুখরোচক গর্বের বিষয়। আমরা কাউকেই ছাড়িনা, দেখেছ হে? ;)



যা যা করবেনঃ

১) শান্ত থাকুনঃ প্রথমত শান্ত থাকবেন, চ্যাঁচামেচি, কান্নাকাটি কাকুতি মনতি এসব করে কোনও ফায়দা নাই। তারা আপনাকে ধরেছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করতে থাকুন। বিপদ বা ঝামেলার গভীরতা কিন্তু আপনার প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভর করছে! পালটা হুমকি বা ভয় দেখানোর চেষ্টা করলে আরও ঝামেলায় জড়াবেন। যদি সেরকম 'মামা', 'চাচা' থেকে থাকে, তো চেষ্টা করেন সেই চ্যানেলে, কিন্তু প্রকাশ্য হুমকি দিবেন না। মনে রাখবেন, আপনাকে হাজারও ঝামেলায় জড়ানোর মত রসদ কিন্তু তাদের আছে!



২) নীতি, ব্যক্তিত্ব; ইত্যাদি সাময়িক বিসর্জন দেন, যদি ঝামেলা এড়াতে চানঃ আপনি কি শর্ট টেম্পার্ড? তাহলেই গেছেন। এস.আই. তো বটেই, এ.এস.আই. এমনকি কন্সটেবলের মুখেও(কাউকে হেয় করা বা কোনও পদমর্যদাকে ছোট করা এই লেখার উদ্দ্যেশ্য নয়) তুই তোকারি শোনার জন্য প্রস্তুত থাকুন, এটা অবশ্যম্ভাবী। আর প্রতিবাদ করলে বোনাস হিসাবে চড় থাপ্পড়ও জুটতে পারে, সুতরাং সাবধান, উপায় নাইরে ভাই! প্রেস্টিজ বলে কোনও শব্দ থাকলে তা সাময়িক ডিকশনারি থেকে হাপিশ করে দিতে হবে। বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে পুরোপুরি আত্মসমর্পন করা।



৩) এইটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, মেজাজ হারাবেন নাঃ পুলিশ সদস্যরা যদিও কম যায়, সাথে যদি থাকে পুলিশের সোর্স(সোর্স ভাইসাহেবেরা কিন্তু বড়ই ওয়েল ম্যানার্ড! এক একটা হিরোঞ্চি আর গাঁজাঞ্চি, আর কিছু না বলি, বুঝে নেন :P ) তারা তুই তোকারি, গালিগালাজ, অশালীন ইঙ্গিত, ফোনে বা কারও সূত্র ধরে কারো কাছে সাহায্য চাইলেও তাকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা; ইত্যাদি করে নানাভাবে উত্যক্ত করার চেষ্টা করবে, কিন্তু খবরদার! উত্তেজিত হয়েছেন তো মরেছেন! শান্ত ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করুন। ধরে নেন, এটাও একটা ফাঁদ, একটু সাবধান থাকলেই এড়ানো যাবে।



৪) পুলিশ সদস্যদের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুনঃ জানিনা চক্ষুলজ্জ্বা নাকি ভবিষত ঝামেলা এড়ানোর জন্য; পুলিশ সদস্যরা কিন্তু আপনার সাথে সরাসরি কোনও 'ডিল' করবে না। বাই দা ওয়ে, 'ডিল' হচ্ছে তাদের জন্য, যারা ঝামেলা এড়াতে চান দ্রুত। তা না হলে, আপনি চাইলে পরের দিন আদালতে যেতে পারেন, দারুন সব অভিজ্ঞতা হবে, রাতে থানা হাজতে, দুনিয়া জোড়া নাম ফুটবে, পরদিন জেল হাজতে কিংবা ভাগ্য ভাল থাকলে দু'/চার দিনের রিমান্ডও কপালে জুটে যেতে পারে ;) যা হোক, আপনার সাথে ডিল করবে সোর্স বা এরকম মিডলম্যান ভাইসাহেবেরা, কিন্তু খেয়াল রাখবেন, আপনি যেন পুরোপুরি ওদের হাতে পড়ে না যান! মিনিট দুই'/তিনের জন্য আড়াল হলেই কিন্তু তখন আবার হবে 'প্রাইভেট ডিল', শুধু বলি, এমন পরিস্থিতিতে অভিজ্ঞতা আরও ভীতিকর হবে।



৫) বুদ্ধিমত্তার সাথে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিনঃ একটা কথা আগেও বলেছি, এই লেখার উদ্দ্যেশ্য কারও ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করা বা কাউকে হেয় করা না। সাধারণত এরকম আটক হতে পারেন পেট্রল টিমের হাতে, এবং সাধারণত এসব পেট্রল টিম লিডার এএসআই বা বড়জোর এসআই পর্যায়ের, এবং আশা করি একটু ভেবে দেখার চেষ্টা করলেই উদ্দ্যেশ, গতিবিধি, কর্মকান্ড সম্বন্ধে ধারণা পেতে পারেন। আপনি যদি সামান্যতম হলেও কারও থট রিড করতে পারেন, তাহলে যে কোনও পরিস্থিতি সামাল দেয়া আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। পরিস্থিতি অনুযায়ি তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত কিছু নিতে হবে। চেষ্টা করবেন তাদের কাছে এই বার্তা দেয়ার যে আপনি তাদের 'উপযুক্ত' শিকার নন, আপনাকে হয়রানি করা তাদের জন্য লাভজনক কিছু না।



৬) নিশ্চিত হউন, তারা আসলেই পুলিশ তোঃ এই গুম খুনের অসময়ে আন অথরাইজড কারও হাতে পড়া এড়িয়ে যান! যদি সিভিল ড্রেসে কারও হাতে আটক হবার মত পরিস্থিতি হয়, তাহলে চেষ্টা করুন আশপাশে কিছু সাক্ষি রাখার। দরকার হলে এমন কিছু করুন যাতে আশপাশে একটা মব হয় অন্তত(ফ্ল্যাশ মব হইলেও চলে ;) )
২১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×