somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শীতের সময় কী কেউ প্যারিস যায়?

০২ রা জানুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ট্রেনে করে ইউরোপ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা আমার মূলত সিনেমায়। দিলওয়ালা দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে ছবিতে শাহরুখ খান হাত বাড়িয়ে আছে আর ট্রেন ধরতে ছুটছে কাজল। লন্ডন থেকে শুরু হয়ে জুরিখে যেতে যেতে প্রেম। এরচেয়েও বেশি লোভনীয় ছিল জুলি ডিপলি ও ইথান হকের বিফোর সানরাইজ। দুজনের ট্রেনে পরিচয়, তারপর ভিয়েনা এক রাতের জন্য নেমে যাওয়া এবং রাত কাটানো। ছবি হিসেবে অসাধারণ।
আমি জেনেভা থেকে উঠলাম এরকম এক ট্রেনে। ছাড়লো সময় মতোই, ঠিক সাতটা ১৭তে। যাবো প্যারিস। ট্রেনে উঠার ঠিক আগে মোবাইলে ২০ ফ্রাঁ দিয়ে রিচার্জ করেছি। ট্রেনে উঠেই ভাবলাম ফেসবুকে একটা স্টাটাস দিয়ে দেই। মোবাইল দিয়ে ঢুকলাম নেটে, স্ট্যাটাস দিতে সবমিলিয়ে সময় লেগেছে ৪ থেকে ৫ মিনিট। নেট থেকেই বের হতেই দেখি এসএমএস। আমাকে জানালো আমার ক্রেডিট আছে মাত্র ২ ফ্রাঁ। সুইজারল্যান্ডের সিম, ফ্রান্সে ঢুকেছি বলে এতো টাকা কাটবে? (ফেসবুকরে মাইনাস)।
তাও যদি ট্রেনে লোভনীয় কিছু ঘটতো। আমার পাশে আমার দেশের সাংবাদিক দিলাল। ঐপাশের সিটে সুন্দরী এক মেয়ে, উঠেই মুখের উপর কোনো এক ভাষার একটা বউ সেই যে মুখের উপর রাখলো, বই নামলো সেই প্যারিসে যেয়ে। দ্রুত গতির ট্রেন, চার ঘন্টা কেটে গেল দ্রুতগতিতে, কোনো ঘটনা ছাড়াই।
প্যারিসে টুরিস্ট চেনা খুব সহজ। হাতে থাকবে হয় ক্যামেরা, না হয় মেট্রোর ম্যাপ। এখানে ফরাসী ছাড়া আর কোনো ভাষা চলে না বলে ম্যাপ দেখে দেখে পথ চলা ছাড়া উপায় নেই। আর যে কোনো জায়গায় দেখা যাবেই যে একদল কেবল ছবি তুলছে। আমার হাতে ম্যাপ ছিল না, প্যারিস ঘুরে দেখানোর জন্য একজন সঙ্গী ছিল। তবে খাটি টুরিস্টের মতো ক্যামেরা অবশ্যই ছিল।
আমার বড় ধরণের বৃষ্টি প্রেম আছে। কিন্তু এই বৃষ্টি যে কী পরিমান বিরক্তিকর হতে পারে তা ইউরোপে না গেলে বোঝা যাবে না। কখন নামবে আর কখন নামবে না বোঝা মুশকিল। ফলে বাধ্য হয়ে ১০ ইউরো দিয়ে একটা ছাতা কিনতে হলো। ছাতার গায়ে বড় করে লেখা প্যারিস আর ছোট করে লেখা মেড ইন চায়না। একটু জোরে বাতাস আসলেই উল্টে যায়।
প্যারিস দেখতে হলে অনেক সময় নিয়ে এখানে থাকতে হয়। সেই সাধ্য আমার নাই। তাই টুরিস্টরা সাধারণত যে জায়গায় যায় সেসব জায়গায়ই গিয়েছি আমি। তীব্র শীত অবশ্য একটা বড় সমস্যা। সারা শরীর যতো পারো ঢাকতে হয়। তীব্র শীত আর বৃষ্টি। কোনাটাতেই আমরা অভ্যস্ত না। সবচেয়ে বড় সমস্যা চোখের। প্যারিস সুন্দরীদের কত না গল্প শুনেছি। কিন্তু মন-প্রাণ ভরে সুন্দরীদের সুন্দর কিছু দেখা গেল না। দেখবো কেমনে সবই তো ঢাকা। সবাইরই কপাল কুচকানো। কোনো রকম বাসার ফিরতে পারলেই যেন শান্তি। প্যারিসের সবাই অপো করে গরমের জন্য। সেই সময়ের প্যারিসের মতো সুন্দর আর আকর্ষনীয় নাকি কখনোই হয় না।
এবার প্যারিস যেয়ে ফিরে আসার পর আমার প্রথম সিদ্ধান্ত হলো ইউরোপে কখনো শীতের সময় যেতে হয় না।


স্যাক্ররে ক্রু। মূলত একটি চার্চ। তবে এতো সুন্দর এর পুরো জায়গাটা যে, টুরিস্টরা এখানে যাবেই।


স্যাক্ররে ক্রু


স্যাক্ররে ক্রুর খোলা চত্বরে তিনি গান গাইছিলেন জন লেননের ইমাজিন। অসাধারণ। অর্থ আয়ের এটাও একটা পথ


এভাবেও আয় করা যায়। মূর্তীর মতো এই মানষটি দেখে অনেকেই তার সামনে রাখা পাত্রে পয়সা দিচ্ছিল। আমিও দিলাম।


উপর থেকে তোলা প্যারিস


প্যারিস গেট


প্যারিস গেট


প্যারিসের রিকসা, টুরিস্টদের জন্য


আইফেল টাওয়ার যাওয়ার পথে রাস্তার দেওয়াল চিত্র


আইফলে টাওয়ার। একটু হেলান দিয়া দাঁড়াইছিলাম, তাই বাঁকা লাগতাছে মনেহয়।


লা ডে ফ্রঁসে, নতুন প্যারিস। মাত্র একটি জায়গায় এরকম আধুনিক বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছে। প্যারিস বলতে চায় চাইলে তারাও এরকম ভবন বানিয়ে শহর ভরে ফেলতে পারে, কিন্তু করবে না।


বিখ্যাত অপেরা হাউজ


প্যারিস আই। বিশ্বের সব শহরেই একটা থাকে


মুলান রুজ। বিখ্যাত নাইট ক্লাব ও রেস্তোরা। টিকেটের দাম দেখলাম ১৮০ ইউরো। এর পাশেই প্যারিসের বিখ্যাত রেড লাইট এরিয়া। অনেককেই দেথলাম রাস্তা পার হচ্ছেন না, দূর থেকে কেবল ছবি তুলছে। আমিও তাই করলাম।


প্যারিসেও মিছিল। বৈধ অভিবাসনের দাবী


ভার্সাই রাজার প্রাসাদ। ফরাসী বিপ্লবের সময় এখান থেকেই ধরে নেওয়া হয়েছিল রাজা-রানীকে


প্রাসাদের সামনের বাগান


বাগান


বাগানে স্থাপিত মূর্তী


বাগানের সব গাছ এভাবে কাটা। অতিরিক্ত গুছানো একটা বাগান। বুঝা যায় লক্ষ্য টুরিস্টরা


দূর থেকে তোলা বাগানের একাংশ
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×