প্যালেস্টাইন: গাজার সেই ইফতারি ভাঙ্গার কামানের আওয়াজের অপেক্ষায়
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
গাজার যুদ্ধ অনেক ঐতিহ্যকে স্মৃতিতে পরিণত করেছে। প্যালেস্টাইনী ব্লগার হাজেম [আরবী ভাষায়] বেদনার সাথে রমজানের সেই সব অনুষ্ঠান হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বেদনার সাথে স্মরণ করেছেন। এইসব স্মৃতি তার দাদা মনে রেখেছেন, কিন্তু এখন সে সব অনুষ্ঠান গাজায় আর অনুষ্ঠিত হয় না।
অনেক মুসলিম দেশের এটা ঐতিহ্য, সূর্যাস্তে রোজা ভাঙ্গার (ইফতার করা) সংকেত হিসেবে সে সব দেশ কামান দাগা হয়। কিন্তু এখন গাজায় আর ইফতারের সময় কামান দাগা হয় না। তিনি লিখেছেন:
''আমাদের বাবা ও দাদারা এখনও স্মরণ করতে পারেন ইফতারের (রোজা ভাঙ্গার সময়) কামানের কথা। যখনই তারা এইসব বিষয় মনে করতে শুরু করেন, তখনই তারা ভাবতে শুরু করেন, ইফতারের সেই পুরোনো দিন গুলো যদি ফিরে আসত। আমার দাদা সেইসব ‘সুন্দর” দিনের কথা বলেন। যখন তিনি সেইসব দিনের কথা বলতে থাকেন তখন আমি তার বর্ণনা ও অনুভূতিতে বিস্মিত হয়ে যাই। এইসব কথা যেন তার হৃদয় থেকে উচ্চারিত হয়। তার চোখ বেদনায় ভরে আসে। চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে যখন তিনি সেইসব দিনের কথা স্মরণ করেন..।''
নাতি, ইফতারের সেই কামান যদি আবার ফিরে আসত। সেটা সকল বাসায় সকল ঘরে সুখ বয়ে আনত। আমরা সকলেই তোমার দাদীর ঘরে জড়ো হতাম, সব্বাই, গা গরম করার জন্য আগুনের যে চুল্লি জ্বালানো থাকত, তার পাশে বসতাম, রমজানের রাত উদযাপন করতাম।''
বৃদ্ধ মানুষটি স্মরণ করতে থাকে গাজায় রমজানের রাতে কি হত:
''তুমি তখন সকল সুস্বাদু জিনিস পেতে। দেখতে পেতে কুনাফা। এটি প্রাণীর স্বাভাবিক চর্বি দিয়ে বানানো হত। পেতে কাতায়েফ। বাদাম দিয়ে ভেজে তৈরি করা। সে সময় তোমার চাচারা ছিল তরুণ এবং তুমি দেখতে লণ্ঠন (ফানুস), এখানে সেখানে অনেক খেলনা ছড়িয়ে থাকত। প্রতিবেশীরা সকলেই জেগে থাকত, সবাই আনন্দে মেতে থাকতাম। সাধারণত আমরা আত্মীয় এবং প্রতিবেশী ওখানে বেড়াতে যেতাম। সে সময় সকলের মুখে হাসি ছিল। রাতে আমরা তাদের বাসায় থাকতাম এবং গল্প করতাম ও গোপন কথা আলোচনা করতাম। গল্পের বিষয় হত এক বীর, এক সিংহ এবং এক অভিযানের।''
আজকের দিনে ফিরে আসলে দাদা দু:খ প্রকাশ করেন:
"হে আমার নাতি, যদি কেবল ইফতারের কামান ফিরে আসত।
কোন বন্দি নয়, কোন গ্রেফতার নয়,
কোন দেওয়াল নয়, নয় কোন বসতি স্থাপনকারী
আমাদের প্রতিবেশী মধ্যে, ঝাণ্ডা অনেক উঁচুতে উড়বে
তরুণ এবং তরুণীরা গান গাইবে
আমাদের দেশ, স্বাধীন দেশ
যদি কেবল ইফতারের কামান ফিরে আসে."'
হাজাম-এর পর বলে চলেছেন:
''আমার দাদা তার গল্প শেষ করেন নি, আমার দুচোখ কান্নায় ভরে এল, আমাদের নিষ্ঠুর বাস্তবতার কথা ভেবে- দখলদারিত্ব এবং ধ্বংসের মধ্যে বসবাস করা, আমাদের সকল আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে বাস করছে, সবাই একা এবং দ্বিধান্বিত। আমি আমার দাদার কপালে চুমু খেলাম এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলাম, রমজানে সমৃদ্ধি সুখ এবং স্থায়িত্বের মধ্যে দিয়ে আমাদের যেন এক করা হয়।''
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।