সামু কর্তৃপক্ষকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে সেফ করে দেওয়ার জন্য। আর সকল ব্লগার বন্ধুদের অসংখ্য মুবারকবাদ; আশা করি সবাই ভালো আছেন আর ভালোভালো লেখা দিয়ে ভরিয়ে তুলছেন এই ব্লগের ক্যানভাস। অনেক দিন পর ব্লগে আসার সুযোগ হয় আমার। অনেক দিন পর এসে দেখি সামু- '' তুমি বেশ বদলে গেছো''। যাহোক বদলালেও আমি এসে পড়েছি, যোগ দিতে পেরেছি আবার তোমার সঙ্গে, ইশ্ কী যে ভালো লাগছে। নাহ সকল সেলিব্রেটি ব্লগারদের মত আমি আপনাদের কাল্পনিক মিষ্টি মানে মিষ্টির /খাবারের ছবি দিয়ে আপ্যায়িত করতে চাই না। যদি কোনদিন সুযোগ হয় আর আল্লাহ আমাকে সামর্থ দেন, তাহলে চেষ্টা করব সত্যিকারের কিছু একটা করা যায় কিনা সবার জন্য।
যাহোক দীর্ঘদিন পর গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম বেড়াতে, সেই যমুনার ওপারে। যমুনা আমার বাড়ি থেকে যতদূরে ঠিক ঢাকা থেকে যমুনার দূরত্বও প্রায় ততটুকুই। অনেকদিন পর যমুনার ওপরে যখন আমার গাড়ি ছুটে চলছিল, তখন গাড়ির গ্লাস খুলে দিয়ে বুক ভরে টেনে নিলাম যমুনার হীমশীতল ধুলিবালিমুক্ত এক সফেদ বাতাশের ঘ্রাণ। আহ্ কী তৃপ্তি আমার, আমার এই পাগলামী দেখে পাশে বসা সহযাত্রী চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি কোনদিকে না তাকিয়ে এক উচ্ছল কিশোরীর মত বুকের ফুসফুসের প্রতিটি কোনা ভরে বাতাশের সুঘ্রাণের ছোঁয়া অনুভব করেছি প্রায় ৫মিনিট যাবতই, মানে গাড়ি সেতুর উপর যতটুকু সময় ছিল প্রায় পুরো সময়টাই আমার জানালার গ্লাসটি খোলা ছিল। ভাগ্যিস সে সময়টা সকাল ১০ টার পর ছিল, অন্য সময় হলে অন্যান্য সহযাত্রীরা ততক্ষণে গাড়ি থামিয়ে হয়ত আমাকে ঐ যমুনার বুকেই নিক্ষেপ করত।
যাহোক গ্রামের বাড়িতে গিয়ে অনেকদিন পর মায়ের হাতের রান্না খাবারগুলো খেলাম তৃপ্তি নিয়ে। আহ্ জনমদুখী মা আমার এই বুড়ো বয়সেও সে তার একমাত্র ছেলের জন্য কত কিছু করলো, না করলে শুনবে না। একটা খাবার খেয়ে শেষ করতে না করতেই আরেকটা সামনে নিয়ে হাজির সেটা খেয়ে একটু বসতে না বসতে আরো দুটো সামনে নিয়ে হাজির। সে দুটো সাবড়ে নিয়ে বিছানায় একটু গড়ান দিতেই আরো কয়েকপ্রকারের ফল, মিষ্টি আর শীতের পিঠা নিয়ে হাজির। আমিও সে সব লোভনীয় খাবার-দাবার দেখে নিজেকে সামলাতে না পেরে খেয়ে ফেলি ইচ্ছেমত।
অবশেষে মনটা খারাপ করে আমার চিরসবুজ পল্লী মা আর আমার চিরদুখী মা, দুজনের বুকের মমতার আচল ছেড়ে আবার আমাকে চলে আসতে হল এই ইট, কাঠ, পাথরে গড়া এক নিষ্ঠুর শহরে। তবুও সামু কর্তৃপক্ষকে অনেক ধন্যবাদ যে এমন একটি প্লাটফরম বানিয়ে আমাদের এই জান্তব শহরের মাঝে কতিপয় সবুজ সতেজ ব্লগার বন্ধুদের সংস্পর্শে এসে মাঝে মাঝে হৃদয়ের সকল কষ্ট দুর করে নেবার সুযোগ করে দিয়েছে। নইলে হয়ত কবেই পুরোপুরি রোবট হয়ে যেতাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৩৬