শাহবাগ স্কয়ারেই যেন আল্লাহর কাছে এই আন্দোলনের সাফল্য কামনা করে প্রতিদিন অন্তত ২ রাকাত করে নফল নামাজ পড়া হোক ।
"যুদ্ধাপরাধী -ধর্ম অবমাননাকারী ভাই ভাই
এক রশি তে ফাঁশি চাই "
শাহবাগে এখনই এই স্লোগান যুক্ত করা দরকার। কিংবা এই শ্লোগান-
" রাজাকার - ধর্ম অবমাননাকারী ভাই ভাই। এক দড়িতে ফাঁসি চাই। "
প্রথম প্রসঙ্গঃ
প্রথমেই একটি কথা বলি সারাদেশে আজ জামাত-শিবির ধর্মীয় উন্মাদনার মাধ্যমে একটি সফল কর্মসূচি পালন করলো , এরজন্য কে দায়ী?? আমি দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলতে চাই শাহবাগের নেতৃবৃন্দই এর পেছনে দায়ী । ‘শাহবাগ স্কোয়্যার ' ৭১ এর চেতনা পুনঃজাগ্রত এবং রাজাকারদের ফাসির যৌক্তিক দাবি নিয়ে গ্রাম বাংলার অধিকাংশ মূর্খ সাধারন মানুষের মাঝে যতোটুকু উত্তাপ ছড়াতে পেরেছে, তার থেকে বহুগুন ধর্মীয় উন্মাদনা ব্যবহার করে গ্রাম বাংলার অধিকাংশ সাধারন মানুষের মাঝে একটি মারাত্বক প্রচারনা সফল ভাবে প্রচার করেছে যে শাহবাগীরা ধর্ম অবমাননাকারী, এর জাগরণ মঞ্চ থেকে এবং ব্লগে ইসলাম, আল্লাহতালা এবং নবী-রাসুলকে নিয়ে জঘন্য ভাষায় লেখালেখি করে এবং শাহবাগীরা এই কুলাঙ্গার ধর্ম অবমাননাকারী কতিপয় নাস্তিকদের লালন করে -পৃষ্ঠপোষকতা করে। এই জামাতি প্রপাগন্ডারটি গ্রাম বাংলার অধিকাংশ সাধারন মানুষ বিশ্বাসও করেছে , শাহবাগের নেতৃবৃন্দের ১ টি মাত্র ভূল পদক্ষেপের কারনে ।ভূল পদক্ষেপটি ছিল নবী-রাসুলকে নিয়ে জঘন্য ভাষায় লেখালেখি করা ধর্ম অবমাননাকারী " থাবা বাবাকে " কেন মরার পর অযথা শাহবাগ চত্বরে হাইলাইট করা হলো ??" থাবা বাবা " ছিল একটা গু । আর গু হাতে নিলে তো দূর্ঘন্ধ ছড়াবেই । " থাবা বাবাকে " অযথা শাহবাগ চত্বরে হাইলাইট করার কারনে এই সুযোগটি পুরোপুরি নিয়েছে জামাত-শিবির । এরা " থাবা বাবা "কে উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করে সহজের মানুষের মাঝে ছড়াতে পেরেছে যে শাহবাগীরা এই " থাবা বাবার "মত কুলাঙ্গার ধর্ম অবমাননাকারীদের লালন করে -পৃষ্ঠপোষকতা করে।" থাবা বাবার "মত কুলাঙ্গার নাস্তিকে ২য় মুক্তিযুদ্ধের শহীদ হিসেবে উপাধী দিয়ে ইসলামকেই অপমান করেছে । এর সাথে কিছু কিছু মিথ্যা প্রচারনাও সফল ভাবে ছড়াতে পেরেছে যে "শাহবাগীরা ধর্ম অবমাননাকারী, এর জাগরণ মঞ্চ থেকে এবং ব্লগে ইসলাম, আল্লাহতালা এবং নবী-রাসুলকে নিয়ে জঘন্য ভাষায় লেখালেখি করে " ইত্যাদি ইত্যাদি ।
অথচ জামাত শিবিরকে শাহবাগের নেতৃবৃন্দ ইচ্ছে করলেই কিন্তু এই সুযোগটি না দিতে পারতো ।যদি " থাবা বাবার "মত কুলাঙ্গার নাস্তিককে শাহবাগ নেতৃবৃন্দ অযথা হাইলাইট না করতো !! যদি " থাবা বাবার "মত কুলাঙ্গার ধর্ম অবমাননাকারীর স্হলে জামাত-শিবিরের হিংস্রতার বলি নিরীহ ব্যাংক কর্মচারি জাফর মুন্সিকে শাহবাগে শহীদ হিসেবে হাইলাইট করতো কিংবা কক্সবাজারে হরতালের মধ্যে রোগী বহনকারী মাইক্রোবাসে শিবিরের হামলার কারনে মারা যাওয়া রোগী হাফিজ আবদুর রহমানকে ২য় মুক্তিযুদ্ধের শহীদ হিসেবে শাহবাগ নেতৃবৃন্দ হাইলাইট করতো ।তাহলে আজকে জাগরণ মঞ্চকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মাঝে জামাতের এই প্রচার+ অপপ্রচার ধোপে টিকতো না । " থাবা বাবার "মত কুলাঙ্গার নাস্তিককে শাহবাগ নেতৃবৃন্দ অযথা হাইলাইট কারনেই জামাত শিবির আজ এই সফল অপপ্রচারনা চালাতে পেরেছে ।
দুস্কৃতিকারীদের নিয়ে কখনো কোন আন্দোলন সফল হয় না। থাবা বাবা ও আসিফের মত ধর্ম অবমাননাকারী কুখ্যাত কতিপয় ব্লগারের দুর্গন্ধের কারণে এই আন্দোলনে আলেমগণ সমর্থন দিতে পারছে না।
এ অবস্হায় করনীয়ঃ
১) জাগরন মঞ্চ থেকে শাহবাগের নেতৃবৃন্দের এখনি উচিৎ নবী-রাসুলকে - ধর্মকে অবমাননাকারী কথিপয় ব্লগারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নিতে নিজেদের তরফ থেকেই সরকারের প্রতি আল্টিমেটাম দেয়া । এবং ধর্মকে অবমাননাকারী কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে জাগরণ মঞ্চ থেকে সরকারের প্রতি দেয়া এই আল্টিমেটাম অবশ্যই মিডিয়াতে ভালোভাবে হাইলাইট করা ।
আর জাগরন মঞ্চ থেকে থাবা বাবা বা আসিফের ধর্ম নিয়ে নোংরা লেখনীরও তীব্র নিন্দা জানানো ।
২) মিডিয়ার সামনে একটা সুস্পষ্ট বিবৃতি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া যে , “শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ধর্মের বিরুদ্ধে কোনো কথা ,কোন বিদ্বেষ কিংবা ঘৃণা উচ্চারণ করা হয়নি, হচ্ছে না, হওয়ার কোনো কারণও নেই। এই মঞ্চের যাবতীয় উচ্চারণ শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার ও তাদের দোসরদের অপকর্মের বিরুদ্ধে।’ সম্ভব হলে আলেম নেতৃবৃন্ধের সাথে যৌথ ভাবে বসে এই সুস্পষ্ট বিবৃতি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া ।
২য় প্রসঙ্গঃ
গনতান্ত্রিক শাষন ব্যবস্হাই ইসলামী, বাম পন্থী, ডান পন্থী, সকল ধারার রাজনীতি করার সুযোগ দেয় । এখন জাগরন মঞ্চ থেকে যুদ্ধপরাধ ইস্যুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এক ধারার রাজনৈতিক কর্মিরা (কমনিষ্টরা) তাদের প্রতিপক্ষ আরেক ধারার রাজনীতি (গণহারে ধর্মীয় রাজনীতি ) নিষিদ্ধ করার দাবি করবে , যুদ্ধপরাধ ইস্যুকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে কমনিষ্টরা নিজেদের রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে । এই ব্যাপারটা সাধারন মানুষজন কিন্তু ভালভাবে নিচ্ছে না । আমরা তো শাহবাগে কোন রাজনৈতিক দলের নীতি- আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য জড়ো হই নি ।আমরা জড়ো হয়েছি শুধু রাজাকার এবং রাজাকারদের সংগঠনের বিচারের দাবিতে । এখানে গণহারে ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিটা হচ্ছে একটা বিভ্রান্তকর অজনপ্রিয়-জনবিচ্ছিন্ন দাবি । এই দাবিটাও থাবা বাবা ইস্যুর মত শাহবাগের নেতৃবৃন্দের একটা ভূল পদক্ষেপ ।যেটা গ্রাম গঞ্জের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শাহবাগ স্কয়ার সম্পর্কে একটি নেগেটিভ বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে ।
কেউ হয়তোবা প্রতিবাদে ৭২ এর সংবিধাণের কথা বলবেন ।তাদের প্রতি বলতেছিঃ এটা ২০১৩ সাল, ১৯৭২ সাল নয় । আর মানুষের জন্যই সংবিধান-সংবিধানের জন্য মানুষ নয় ।সুতরাং আজ ২০১৩ সালে যদি এ মঞ্চ থেকেই ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের জনবিচ্ছিন্ন দাবি করি (যেহেতু এটা সার্বজনীন দাবি নয়- এজন্য এটাকে জনবিচ্ছিন্ন বললাম !!!!!!, কমনিষ্ট ভাইয়েরা মাইন্ড কইরেন না!!! ) তবে তা এদেশের গ্রাম গঞ্জের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শাহবাগ স্কয়ার সম্পর্কে একটি নেগেটিভ বার্তা ছড়িয়ে দিবে এবং দিচ্ছেও ।
এ অবস্হায় করনীয়ঃ
১) গণহারে ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি নয় , শুধুমাত্র স্বাধীনতাবিরোধী- যুদ্ধপরাধী সংগঠন নিষিদ্ধের দাবি তোলা উচিৎ । এবং এ ব্যাপারটা মিডিয়াতে ভালোভাবে হাইলাইট করা উচিৎ ।সম্ভব হলে আলেম নেতৃবৃন্ধের সাথে যৌথ ভাবে বসে এই সুস্পষ্ট বিবৃতিটি ব্যাপকভাবে মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া ।
৩য় প্রসঙ্গঃ
সেই সঙ্গে আন্দোলনের মূল যে উদ্দেশ্য সে ব্যাপারে নিম্নোক্ত সুষ্পষ্ট আলটিমেটাম সরকারের কাছে দেয়া দরকারঃ
সরকারের কাছে আল্টিমেটাম হতে পারে এরূপঃ
১। যুদ্ধপরাধীদের বিচার ছিল এই সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা । এই ওয়াদার কারনে আমরা অনেকেই এই সরকারকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিলাম । এখন সরকারের কাছে আল্টিমেটাম জানাচ্ছি যে , সরকার তার মেয়াদ শেষ হবার আগেই অন্তত ধৃত শীর্ষ রাজাকার লিডারগো বিচার কাজ সম্পন্ন করতে হবে । আর যদি রায়ে কারো ফাসি হয় ।তবে সরকার তার মেয়াদ শেষ হবার অন্তত ২ মাস আগেই ফাসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ফাসিতে ঝুলাতে হবে । রায় দিবে এই আমলে আবার রায় কার্যকর বাকি রাইখা ভোটের ব্যবসা করবে , এই টাইপের ফাজলামী করলে ভোটের সময় আওয়ামী লীগকে এর জবাব দেয়া হবে ।সুতরাং সরকার তার মেয়াদ শেষ হবার আগেই অন্তত ধৃত শীর্ষ রাজাকার লিডারগো বিচার কাজ এবং রায় কার্যকরের কাজ সম্পন্ন করতে হবে । আল্টিমেটাম শ্যাষ
গত দেড় বছর ধরে রাত জেগে ব্লগে হত্যাকারী ঘাতক রাজাকার আলবদরদের বিরুদ্ধে লড়তেছি শুধুমাত্র আমাদের পূর্বপুরুষদের হত্যার বিচার যাতে সম্পন্ন হয় এই আশায় ।অথচ আজ কোথাকার কোন আসিফ মহিউদ্দিন -থাবা বাবাদের কারনে আজ এই ইস্যুটি ধর্মীয় উন্মাদনায় ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে । সুতরাং শাহবাগের নেতৃবৃন্দের কাছে করুণ অনুরোধ আপনেরা এমন কোন ভূল পদক্ষেপ নেন না, যাতে করে বিপক্ষ শিবির কোন ধরনের ফায়দা তুলতে পারে ।
আমার এই পোষ্টটির কথাগুলো যদি কেউ শাহবাগের নেতৃবৃন্দের কাছে পৌছাইয়া দিতেন তবে বড়ই কৃতজ্ঞ থাকতাম

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


