somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প - পথকলি

১৮ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হাসান তার চাকুরিটি পছন্দ করে। তার ধারণা, এ দেশে বেশির ভাগ চাকুরিজীবি তার পেশাটিকে এবং তার বসকে পছন্দ করে না। সে হচ্ছে সেই সৌভাগ্যবান লোক যে একই সাথে তার চাকুরি ও বস দুটোকেই পছন্দ করে।
তার চাকুরিটি বেশ কঠিন। ঢাকা শহরের ছিন্নমূল শিশুদের খুঁজে বের করা এবং তাদের সাহায্য করা তার কাজ। প্রথমে সে নিজে রাস্তাঘাট, ফুটপাত ও স্টেশন ইত্যাদি জায়গায় সরেজমিনে গিয়ে এ ধরনের শিশুদের সাহায্য করলেও এখন তার পদোন্নতি হয়েছে। তার অধীনে ১২ জন মহিলা কাজ করে। হাসান তাদের তদারকি করে।
তার বস যখন ৬ বছর আগে এই এনজিওটি শুরু করেন, তখন হাসানকে বলেছিলেন কাজটি চ্যালেঞ্জিং। হাসান হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল। নিজের ফান্ডের টাকা খরচ করে ছিন্নমূল শিশুদের থাকা, খাওয়া ও শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং তাদের উপযুক্ত নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে দত্তক দেয়া হচ্ছে - এটা তো একটি ভালো কাজ। এই ভালো কাজ কঠিন হবে কেন ?
কিন্তু বাস্তবতা কঠিন। প্রথমত শিশুরা তাদের বিশ্বাস করত না। শিশুদের বোঝাতে গেলে আশেপাশের লোকজন তার সন্দেহ করত। একবার তো ছেলেধরা বলে তাকে মারধর করা হল। তারপর তুলে দেয়া হল পুলিশের হাতে। কপালজোরে বেঁচে গেছে সে।
তার বস তখন তাকে প্রচুর সাহায্য করেছে। পুলিশের ঝামেলা থেকে শুরু করে তার চিকিৎসার সমস্ত ব্যয় বহন করেছে তার বস। সেই সাথে উপরি হিসেবে তার বেতন ও বোনাস বেড়েছে।
সুস্থ হয়ে হাসান তার চাকুরিতে দ্বিগুণ উৎসাহে নেমে পড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে তার সতর্কতা। অন্যদিকে তার সহকর্মী বেড়েছে দুজন। তাদের ছাড়া কোন এসাইনমেন্টে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে তার বস।
চ্যালেঞ্জিং এসব কাজের কথা ভাবলে এখন হাসানের ভয় করে। কী সব দিন গেছে। এখন কাজ কত সহজ হয়ে গেছে। অফিসের কাজের সাথে সাথে পরিসর বেড়েছে। সহকর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে। তাদের নিজস্ব একটি স্কুল হয়েছে। সেই স্কুলে অনেক ছিন্নমূল শিশু পড়াশোনা করছে।
এক সময় হাসান ছিন্নমূল শিশুদের সংগ্রহ করলেও এখন সেটা তার কাজ নয়। বরং সে এখন এসব শিশুকে নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে হস্তান্তর করার কাজটি তদারকি করে থাকে। বিত্তশালী নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে শিশু হস্তান্তর সহজ মনে হলেও বাস্তবে ততটা সহজ নয়। অনেক দম্পতি খুব ঘোরালো ধরনের হয়। শিশু দত্তক নেয়াটা ঝামেলা মনে করে। তাদের পুঁথি পড়ার মতো করে বোঝাতে হয়। অনেকে বুঝেও সেটা আবার বুঝতে চেষ্টা করে। নানা ফালতু প্রশ্ন করে নিজেকে বিজ্ঞ প্রমাণের চেষ্টাও চালায় কেউ কেউ। তাদের সবাইকে ঠাণ্ডা মাথায় বোঝাতে হয়। এই ঠাণ্ডা মাথায় বোঝানোটাই কাউন্সেলিং।
মাসে দুবার নিঃসন্তান দম্পতিদের সাথে বৈঠক করে হাসান। এসব বৈঠকে হাসান দুটি প্রস্তাব রাখে। এক, তাদের আবাসিক স্কুল থেকে কোন শিশুকে দত্তক নেয়া ; দুই, সরাসরি কোন আশ্রয়হীন শিশুকে দত্তক নেয়া। বেশির ভাগ দম্পতি তাদের স্কুলে পড়ুয়াদের পছন্দ করে। তাই তার বসের নির্দেশ হল, স্কুল পড়ুয়াদের নয়, বরং সরাসরি আশ্রয়হীনদের দত্তক নিতে দম্পতিদের উৎসাহিত করতে হবে। তাতে করে বেশি ছিন্নমূল শিশুদের উপকার হবে।
হাসান যে কোন নিঃসন্তান দম্পতিকে সরাসরি কোন ছিন্নমূল শিশুকে দত্তক নিতে উৎসাহিত করে। এই আহবানে অনেক দম্পতি তর্ক জুড়ে দেয়। তার প্রস্তাবের বিপক্ষে যুক্তি দাঁড় করায়। হাসানকে সে সব যুক্তির বিপক্ষে শক্ত যুক্তি দাঁড় করাতে হয়।
সম্প্রতি তাদের এনজিও আরেকটি নতুন প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। যথারীতি এই চ্যালেঞ্জিং প্রজেক্টটির নেতৃত্বে আছে হাসান। এই প্রজেক্টে ধনী এবং সন্তান আছে এমন দম্পতিদের একজন ছিন্নমূল শিশুকে দত্তক নিতে উৎসাহিত করা হবে। কাজটা নিঃসন্দেহে কঠিন। যাদের সন্তান আছে তারা কেন সন্তান দত্তক নেবে এটা ভেবে পায় না হাসান। তার বস বলেই দিয়েছে কাজটা কঠিন বলেই হাসানকে দায়িত্ব নিতে হবে।
হাসান কাউন্সেলিং রুমে ব্রাঞ্জেলিনা পরিবারের একটি ছবি টানিয়ে তার বক্তৃতা শুরু করল। হলিউড তারকা ব্রাড পিট এবং এঞ্জেলিনা জোলি তাদের শত ব্যস্ততার মধ্যেও একের পর এক শিশু দত্তক নিয়ে যাচ্ছেন সেই উদাহরণ ব্যবহার করে উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের মন গলানোর চেষ্টা করল। কিন্তু কোন লাভ হল না। সবাই মজা মেরে প্লেট ভর্তি খাবার সাবাড় করে সটকে পড়ল। হতাশ হাসান তার বসের কাছে গিয়ে রিপোর্ট করল এই প্রজেক্ট তার পক্ষে চালানো সম্ভব নয়।
তার বস কেবল মুচকি হাসলেন। তার পরের মাসে দেখা গেল তার টেবিলে সেই প্রজেক্টের ফাইল। হাসান সেই ফাইলসহ তার বসের রুমে গেল। পুরো অফিসের সবাই উৎকর্ণ হয়ে রইল। বন্ধ ঠাণ্ডা ঘরে কী ঘটল কে জানে, হাসান খুশি মনে বেরিয়ে এল এবং তার পরবর্তী করণীয় দায়িত্ব পালনে নেমে পড়ল।
এবার দর্শক শ্রোতার সংখ্যা কম। তবে আয়োজন জমকালো। সহায়তা হিসেবে ব্রাঞ্জেলিনা পরিবারের ভিডিও ব্যবহার করা হল। তারা কিভাবে একের পর এক বিভিন্ন দেশ থেকে সন্তান দত্তক নিয়েছেন তার নিউজ ফুটেজ প্রদর্শিত হল। তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের উপর ফুটেজ প্রদর্শিত হল। কষ্ট করে তৈরি করা ডকুমেন্টারিটি দর্শক শ্রোতারা পিনপতন নীরবতায় উপভোগ করল। প্রদর্শনী শেষে হাসান তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখল। সব শেষে থাকল খানাপিনার ব্যবস্থা। লোকজন উদরপূর্তি করে দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়ি ফিরে গেল। কোন শিশু দত্তক নেয়ার ব্যাপারে কেউ উৎসাহ দেখাল না।
হাসান তার অফিসে ফিরল না। সরাসরি বাড়ি ফিরে গেল। তার স্ত্রী মিনু অসময়ে বাড়ি ফেরার কারণ জানতে চাইল। কোন কথা না বলে সে সোজা শোবার ঘরে এসে মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ল। তার ক্লাশ এইট পড়ুয়া মেয়ে অনন্যা বাবার কপালে হাত রেখে ঘোষণা করল, “বাবার জ্বর আসেনি।” সেই আনন্দে তার ক্লাশ থ্রি পড়ুয়া ছেলে অরিন্দম কম্পিউটারে একটি নতুন গেম খেলার বায়না ধরল তার মায়ের কাছে।
পরের দিন সকালে হাসান তার সিটে না বসে সরাসরি বসের সাথে দেখা করল। বস তাকে দেখে হাসলেন। বললেন, “হাসান, এই পৃথিবীটা নরম মানুষের জন্য বড় কঠিন। আর কঠিন মানুষের জন্য বড় সহজ। আমি জানি, এই প্রজেক্টটি সহজ নয়। তাই আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছি। ভেবেছিলাম, আপনি অধৈর্য হবেন না। চালিয়ে যান, ব্যর্থ হলে সব দায়-দায়িত্ব আমার।”
হাসান তার বসের কথায় গলল না। কিন্তু অফিসের দায়িত্ব বলে কথা। সে নিমরাজি হল। ধরে নিল, এই প্রজেক্ট ব্যর্থ।
পরবর্তী কাউন্সেলিং হল এক মাস পর। এই ফাকে হাসান ডকুমেন্টারি ও তার বক্তৃতা ঝালিয়ে নিয়েছে অনেকবার। তবে এবার একটা বড় রকমের পরিবর্তন এনেছে। ৫ জন ছিন্নমূল শিশুকে ট্রেনিং দিয়েছে যারা তাদের জীবনের কষ্টের কথা নিজ মূখে বলবে। তাদের কষ্টের জীবনের বিভিন্ন ফুটেজও ডকুমেন্টারির শেষে যোগ করা হয়েছে।
যথারীতি পাঁচতারা হোটেলে ধনী দম্পতিদের দাওয়াত দেয়া হল। এবার সময় বেছে নেয়া হয়েছে সন্ধ্যা। যথাসময়ের ঘণ্টাখানেক পর থেকে গাড়ি আসতে শুরু করল। রাতের খাবারের আগে পুরো রুম ভরে গেল।
হাসান তার সামান্য পরিচিতি সেরে ডকুমেন্টারি চালিয়ে দিল। অন্ধকার ঠাণ্ডা ঘরে বসে তার চেয়ে ততোধিক ঠাণ্ডা কোমল পানীয়তে চুমুক দিতে দিতে ভদ্রজনেরা ডকুমেন্টারিটি উপভোগ করতে লাগল। অনেকে এই ভেবে উত্তেজিত হয়ে বসে রইল যে, ডকুমেন্টারির শেষে এঞ্জেলিনা জোলির ব্রেস্ট ফিডিংএর দৃশ্যও থেকে থাকতে পারে। কিন্তু তাদের হতাশ করে দিয়ে ডকুমেন্টারির শেষে ভেসে উঠল কতগুলো করুণ মুখ। তারা তাদের মর্মান্তিক জীবনের কথা বলে গেল নিজের কণ্ঠে। সেই সাথে ক্যামেরা তুলে আনল তাদের নির্মম চারপাশ। অসহায় মুখগুলোর আকুল আবেদনের মধ্য দিয়ে শেষ হল সেই ডকুমেন্টারি।
আলো জ্বলে উঠলে দর্শক শ্রোতারা দেখল ডকুমেন্টারির সেই অসহায় মুখগুলো তাদের সামনে মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছে। হাসান তাদের পরিচয় করিয়ে দিল দর্শক শ্রোতাদের সাথে। সংক্ষিপ্ত অথচ আবেগময় একটা বক্তব্য ঝেড়ে দিল। বক্তৃতার শেষে তার চোখ ছল ছল করে উঠল আবেগে।
কিন্তু সমস্ত আবেগে ঠাণ্ডা জল ঢেলে দিয়ে একজন দর্শক প্রশ্ন করে বসল, “আপনার যখন এত দরদ আপনি কেন ওদের একজনকে দত্তক নেন না ?”
প্রশ্নে হাসান ভড়কে গেল। এ রকম অপ্রাসঙ্গিক কোন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে তা ভাবেনি সে। কিন্তু আবেগ তাকে পেয়ে বসেছে। সে সদম্ভে ঘোষণা করল, “৫ শিশুর মধ্যে ৪ জনকে আপনারা দত্তক নেন, শেষ জনকে আমি নেব।”
তার এই ঘোষণার জন্যই হোক কিংবা আবেগের বশেই হোক, ৪ জোড়া দম্পতি একে একে ৪ শিশুকে দত্তক নিয়ে ফেলল। শর্ত অনুযায়ী শেষ ও পঞ্চম শিশুকে দত্তক নিল সে।
বালিকাটির বয়স ১১। তার বাবা মা নেই। রেলস্টেশনে তার নানীর কাছে থাকত। সম্প্রতি তার নানী মারা গেছে। আছিয়া নামের সেই মেয়েটিকে নিয়ে হাসান বাড়ি ফিরল।
তার ফ্ল্যাটের দরজা খুলে দিল ক্লাশ এইট পড়ুয়া মেয়ে অনন্যা। বাবার সাথে একটি গ্রাম্য চেহারার লালচে চুলের মেয়েকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে প্রথমে সে অবাক হলেও পরে ভেবে নিল তাদের নতুন কাজের মেয়ে। সে খুশি হয়ে তার পড়ার টেবিলে ফিরে গেল। কিন্তু তার কান রয়ে গেল এই দিকে।
আছিয়া ভয়ে ভয়ে ড্রয়িং রুমের দামি কার্পেটের উপর দাঁড়িয়ে রইল। হাসান ড্রয়িংরুমের সোফায় ধপ করে বসে তার স্ত্রীকে ডাকল।
তার স্ত্রী মিনু আছিয়াকে দেখে খুশি হল। পাশের সোফায় বসে আনন্দের সাথে বলল,“ যাক, এত দিনে একটা কাজের কাজ করেছ। একটা কাজের লোক যোগাড় করেছ। কী হয়েছে আজকাল, একেবারে কাজের লোক পাওয়া যায় না।”
হাসান তার স্ত্রীকে কিছু বলতে পারল না। উঠে গিয়ে বাথরুমে ঢুকল। হাতমুখ ধুয়ে পোশাক পরিবর্তন করল। তারপর তার বেডরুমে বসে ভাবতে লাগল কিভাবে বিষয়টা সবার সামনে উপস্থাপন করা যায়। এত এত লোকের সামনে যে লোকটি ছিন্নমূল শিশু কেন দত্তক নেয়া উচিত তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়, সে নিজে কেন একটি শিশুকে দত্তক নিয়েছে তার কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পেল না। ফুল স্পিডে চলা ফ্যানের নিচে বসে সে ঘামতে লাগল।
যথা সময়ে টেবিলে রাতের খাবার দেয়া হল। হাসান খেতে খেতে ভাবল, এবার উপস্থাপন করা যাক। কিন্তু তার গলা দিয়ে কোন কথা বের হল না। সে নীরবে খাওয়া শেষ করে বেডরুমে ফিরে এল।
ঘুমাতে এসে তার স্ত্রী আবারও প্রসঙ্গটি তুলল। হাসান সরাসরি জানাল আছিয়া নামের মেয়েটিকে সে দত্তক নিয়েছে। তার স্ত্রী মিনু হতভম্ব হয়ে গেল। তারপর শুরু হল একই প্রশ্ন। কেন, কেন এবং কেন।
হাসান তার সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে একটা গোছানো বক্তৃতা দেয়া শুরু করল। কিন্তু গোছানো বক্তৃতার মাঝখানে তার স্ত্রী চেঁচিয়ে উঠল, “এসব সামাজিক দায়িত্ব নেয়ার দায় কি কেবল তোমার ? তোমার দুটি সন্তানের ভবিষ্যৎ কী ? মেয়েটি বড় হচ্ছে , ক'দিন পর বিয়ে দিতে হবে, তার কী ব্যবস্থা করেছ তুমি ? ঢাকায় একটা বাড়ি নেই তোমার ? আজ গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিলে কাল রাস্তায় দাঁড়াতে হবে।”
এসব কথার সাথে কান্না ও ফোপানির খিচুড়ি মিলে পুরো ব্যাপারটি জটিল হয়ে উঠল। মেয়েলি বাঁধভাঙ্গা আবেগের কাছে হাসানের সব যুক্তি ও ব্যাখ্যা উড়ে গেল।
সে রাতে ঘুমাতে পারল না হাসান। শেষ রাতে তার স্ত্রীর নাক ডাকা শুনে সে রাগে ছটফট করতে লাগল।
সকালে নাস্তার টেবিলে হাসান তার মেয়ে ও ছেলেকে ডেকে তাদের নতুন বোনকে পরিচয় করিয়ে দিল। তারা হতভম্ব হয়ে তাদের নতুন বোনের দিকে তাকিয়ে রইল। তাদের মা তখনও বেডরুমে কেঁদে চলেছে।
হাসান সেদিন অফিসে গেল না। তার আশংকা সে অফিসে গেলেই আছিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হবে। দুপুরে তার চালিয়াৎ শালাটি এসে হাজির। রাজনীতি করে ও ঠিকাদারি করে সে বহু টাকার মালিক। সে এসে সোজা তার দুলাভাইকে বলে দিল, “ওই মেয়েরে আপনে রাখতে পারবেন না।”
হাসান বলল, “তুমি তোমার টাকা থেকে মদ খাও, জুয়া খেল, আরও কী সব অপকর্ম করে বেড়াও, আমি কি কোন দিনও তোমাকে বারণ করেছি ?”
“আপনি মানা করবেন ক্যান ? আমার ট্যাকা আমি কী করমু সেইটা তো আমার ব্যাপার। ”
হাসান মুচকি হেসে বলল,“তোমার টাকা তুমি কী করবে সেটা যেমন তোমার ব্যাপার, তেমনি আমার টাকায় আমি কাউকে দত্তক নেব কি না সেটা আমার ব্যাপার।”
“আপনের মনে হয় অনেক ট্যাকা হইছে ?” - শালাটি খেঁকিয়ে ওঠে।
হাসান শান্ত কণ্ঠে বলে, “ না, তোমার মতো এত টাকা হয়নি। তবে তিনটি সন্তানকে মানুষ করার মতা আমার আছে।”
“আজিব লোক তো আপনে ! খামাখা ভেজাল করতাছেন।”
“দেখ, তোমার সাথে এই বিষয় নিয়া অনর্থক কথা বলতে চাই না। তুমি আমার ছোট, ছোটর মতো থাক।” হাসান উঠে পড়ল।
তার শালাটি আর কথা বাড়ানোর সুযোগ পেল না।
দুপুরে খাবার টেবিলে কেউ এল না। হাসান নিজে ভাত, আলু ভর্তা ও ডাল রান্না করল। তারপর সে তার স্ত্রী ও ছেলে মেয়েকে ডাকল। ছোট ছেলেটি এলেও মেয়ে ও স্ত্রী খাবার টেবিলে এল না। আছিয়া ড্রয়িংরুমের কার্পেটে বসে ভাত খেল। তারপর কার্পেটের উপরই ঘুমিয়ে পড়ল।
সেদিন বিকেলের মধ্যে আশেপাশের সমস্ত ফ্ল্যাটে ঘটনাটি চাউর হয়ে গেল। তারা দল বেঁধে আছিয়াকে দেখতে এল। সবাই আড়ালে বলাবলি করতে লাগল, ঘটনা আছে। সেই ঘটনা যে একটি জঘন্য ঘটনা সেটা মনে মনে বুঝে নিল অনেকে।
সারা দিন অনশন ধর্মঘট পালনের পর মিনু ও অনন্যা সন্ধ্যায় হাসানের সাথে কথা বলতে শুরু করল। তাদের দাবি আছিয়াকে এক্ষুণি বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হোক। হাসান খুব ঠাণ্ডা মাথায় তাদের অসহায় শিশুদের দত্তক নেয়ার মানবিক দিকটি বোঝাল। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় তার স্ত্রী ও কন্যার মন ঘুরল। তারা তাদের অনশন ভঙ্গ করে খাবার টেবিলে ফিরে এল।
পরদিন অফিসে গিয়ে হাসান পড়ে গেল বিপদে। সবার একই প্রশ্ন, সে কেন মেয়েটিকে দত্তক নিতে গেল। এ রকম বোকামি কেউ করে ? হাসান দ্বিধায় পড়ে গেল। সে অসহায় মেয়েটিকে দত্তক নিয়ে কী কোন ভুল করেছে ?
ওদিকে বাসায় আছিয়ার দিন ভালো কাটল না। পাশের ফ্ল্যাটের মোটা মহিলাটি ‘ঘটনা আছে’ বলে এমন কুৎসিত ইঙ্গিত করে গেল যে, মিনুর গা জ্বলে গেল। তার ইচ্ছে হল, আছিয়াকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
আছিয়া ১০ ঘাটের জল খাওয়া বুদ্ধিমতি মেয়ে। স্টেশনে থেকে এর-ওর ফাইফরমাশ খেটে তার পরিশ্রম করাটা অভ্যাস হয়ে গেছে। ড্রয়িং রুমের কার্পেটে দুদিন ঘুমিয়ে তার পিঠ ব্যথা হয়ে গিয়েছিল। পেট ভরে খেলে কার না ঘুম পায় ? পিঠের ব্যথা তাড়ানোর জন্য হোক কিংবা বাড়ির সবাইকে ম্যানেজ করার জন্যই হোক, সে ড্রয়িংরুমটি সাজিয়ে তুলল। টুকটাক কাজ করে দিতে লাগল।
সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে প্রথমেই আছিয়ার খোঁজ নিল হাসান। আছিয়া আগ বাড়িয়ে তার ভাল থাকার সপক্ষে কিছু মিথ্যে কথা বলে ফেলল। হাসান খুশি মনে টিভি ছেড়ে একটি হিন্দি সিনেমা দেখতে লাগল। আছিয়াও সুযোগ পেয়ে বেশ কিছুক্ষণ হিন্দি সিনেমা দেখে দুধ দেয়ার ছল করে অনন্যার রুমে চলে গেল।
আছিয়া কাজ দিয়ে সবার মন জয় করে ফেলল। একটা স্থায়ী কাজের মেয়ে পেয়ে মিনু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। ভাবল, ভাগ্যিস তখন বেশি কান্নাকাটি করা হয়নি। নইলে চিরস্থায়ী কাজের মেয়েটি তো হাতছাড়া হয়ে যেত। অবশ্য হাসান বাড়িতে ফিরলে আছিয়ার কদর বেড়ে যেত। আছিয়াও বুঝত ব্যাপারটা। সে হাসানের চোখের আড়ালে সব কাজ সারত।
কিন্তু গৃহকর্ত্রী মিনুর আরামের দিন দীর্ঘস্থায়ী হল না। দু' মাসের মাথায় স্কুলে ভর্তির সময় চলে এল। হাসান আছিয়াকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করল। এবার মিনু বিরক্ত হল। কিন্তু প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারল না। বরং গোপনে তার রাজনীতিবিদ কাম ঠিকাদার ভাইটির সাথে ষড়যন্ত্রের মাস্টার প্লান করতে লাগল।
খুব সহজেই অনন্যার স্কুলে ক্লাশ ফোরে ভর্তি হল আছিয়া। তবে তার নাম বদলে রাখা হল বন্যা। পিতার নাম লেখা হল হাসান আহমেদ।
আছিয়ার নতুন নাম শুনে সবাই খুশি হলেও অনন্যা খুশি হয়নি। তার নামের সাথে আছিয়ার নতুন নামের মিল তাকে পীড়া দিচ্ছিল। সে তার মায়ের সাথে তার নিজের নাম বদলে ফেলার পরামর্শ করতে লাগল।
স্কুলে ভর্তি হওয়াটাই কাল হয়ে দাঁড়াল আছিয়া ওরফে বন্যার জন্য। কাজের মেয়ের শেষ চিহ্নটুকু ঝেড়ে ফেলে সে স্কুলের ইউনিফর্ম পরে বাড়ির মেয়ে হয়ে গেল। অন্যদিকে বাবার আদরে প্রকাশ্যে টেবিলে বসে খেয়ে ও আড়ালে চুরি করে খেয়ে তার স্বাস্থ্য ফিরে গেল। এটাও তার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াল। তার এই স্বাস্থ্যকেও ঈর্ষা করতে লাগল মিনু ও অনন্যা।
আছিয়া ওরফে বন্যা সারাদিন স্কুল শেষে বাড়ি ফেরে। বিকেলে গৃহশিক্ষকের কাছে অরিন্দম ও সে একত্রে পড়াশোনা করে। সন্ধ্যায় তার পালক পিতার কাছে পড়া দেখতে বসে। গৃহকর্ম করার কোন সময় আর তার নাই। তার এই পদোন্নতি মিনু ও অনন্যার বুকটা খাক করে দিল। আড়ালে আবডালে তারা মা ও মেয়ে বন্যাকে দেখে নেবার চেষ্টা চালাল। তাদের সাথে রাজনীতিবিদ কাম ঠিকাদার লোকটিও যোগ দিল।
হাসান অফিসে চলে গেলে আছিয়াকে পড়ার টেবিল থেকে উঠিয়ে দিত মিনু। থালবাটি মাজার কাজে নিয়োজিত করত তাকে। পান থেকে চুন খসলে তাকে অকারণে মারত। প্রায়ই স্কুলে যেতে দিত না। গরম খুন্তি দেখিয়ে ওকে ভয় দেখাত যাতে ও হাসানের কাছে এসব মারধোরের বিষয়ে টু শব্দ না করে।
ভয়ে কুকড়ে থাকত আছিয়া। ঘরের সব কাজই করে দিত। কিন্তু তাতেও তার মারধোর কমত না। চড়, লাথি, ঘুসি, লাঠির বাড়ি সবই তার উপর চলত। অসহ্য হয়ে হাসানকে বলে দেবে বলে হুমকি দেয়ায় একদিন তার গায়ে গরম খুন্তির ছ্যাঁকাও পড়ল। নির্মম অত্যাচারে তার জ্বর এসে গেল। তবু সে হাসানকে কিছু বলল না।
কিন্তু বিনা চিকিৎসায় তার গায়ের ক্ষত দগদগে হয়ে উঠল। অভিমানে সে কাউকে সেই ঘা দেখায়নি। জ্বর ও ব্যথায় সে জ্ঞান হারাল। হাসান তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তার তার দেহের ঘা দেখে শিউরে উঠল। ডাক্তারের জেরার মুখে সে কেঁদে কেঁদে সব কিছু বলে ফেলল। ডাক্তার সোজা পুলিশের কাছে ফোন করে দিল। পুলিশ এসে হাসানকে ধরে নিয়ে গেল এবং হাসানকে থানায় বসিয়ে রেখে তার স্ত্রী ও কন্যাকেও গ্রেফতার করে আনল। তবে আছিয়ার জবানবন্দীতে হাসান নির্দোষ হওয়ায় তাকে ছেড়ে দিল পুলিশ।
ঠিক সেই মুহূর্তে থানায় আবির্ভাব ঘটল চালিয়াৎ শালা তথা রাজনীতিবিদ কাম ঠিকাদারটির। তার বোন ও ভাগ্নীর দুর্দিনে সে এগিয়ে এল। লাখ টাকার মিশনে মামলা ধামাচাপা পড়ল। বোন ও ভাগ্নীকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল সে। যাওয়ার আগে চালিয়াৎ শালাটি হাসানকে বলে গেল, এই মেয়েটি হাসানের জারজ সন্তান বলেই তার ধারণা। শালার কথা শুনে হাসান রাগে গরগর করতে লাগল। কিন্তু থানা বলেই সে খপ করে ওর গলাটা চেপে ধরতে পারল না। একটা কিছু করার জন্য হাসানের হাত নিশপিশ করতে লাগল।
উদভ্রান্ত হাসান সেই ডাক্তারের চেম্বারে ফিরে এল। জানল, আছিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে হাসপাতালে ছুটে গেল। গিয়ে দেখল, আছিয়া ঘুমাচ্ছে। সে রাতটা হাসপাতালে কাটাল হাসান।
সকালে বাড়ি ফিরে দেখল তালাবন্ধ। বুঝল, শালা সমুন্ধীরা তার বিরুদ্ধে সংগ্রামে নামতে যাচ্ছে। তার স্ত্রী, কন্যা ও পুত্রের প্রতি তার ঘৃণা উগরে উঠতে লাগল। এত জঘন্য অপরাধ মানুষ কিভাবে করতে পারে সেটা ভাবতে ভাবতে সে হাসপাতালে ফিরে গেল।
ডাক্তারের পরামর্শে আছিয়ার জন্য ঔষধ কিনে আনল হাসান। আছিয়ার খাটের কাছে গিয়ে দেখল ছোট মেয়েটি তার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। মায়ায় বুকটা ভরে উঠল হাসানের। এত সুন্দর একটা মেয়ে। তাকে কিভাবে খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দিতে পারল ? একটুও বুক কাঁপল না ?
সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আছিয়া সুস্থ হয়ে উঠল। হাসপাতাল থেকে তাকে রিলিজ দিয়ে দিল। হাসান তাকে বাড়ি নিয়ে এল। ছোট মেয়েটি হাসানকে রান্না করে খাওয়াতে লাগল। হাসান তার কর্মদক্ষতায় অবাক হয়ে গেল।
সেদিন অফিস থেকে ফিরে হাসান দেখল, তার ফ্ল্যাটের দরজায় তালা। ভাবল, আছিয়া কোথাও গেছে। কিন্তু সন্ধ্যা পেরিয়ে যখন রাত নামল, তখন সে চিন্তিত হয়ে পড়ল। আশে পাশের ফ্ল্যাটে খোঁজ নিয়ে তার কোন হদিস মিলল না। হাসপাতাল ও থানায় খোঁজ করেও তার কোন খবর পাওয়া গেল না। হাসান থানায় জিডি করে স্থানীয় পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তি দিল। তাও আছিয়া নামের ছোট্ট মেয়েটির কোন সন্ধান পাওয়া গেল না। সে কি স্বেচ্ছায় চলে গেছে নাকি তাকে কেউ নিয়ে গেছে তা রহস্যের অতলে রয়ে গেল।
কিছুদিন অপেক্ষা করার পর হাসান আবারও তার কাজে মন দিল। কেবল তার স্ত্রী সন্তানেরা আগের মতো মন খুলে তার সঙ্গে কথা বলে না। সময় কাটতে লাগল তার নিজের নিয়মে। এক সময় সব কিছু ঠিক হয়ে গেল। হাসানও ভুলে গেল যে, সে একটি বাচ্চা মেয়েকে কখনও দত্তক নিয়েছিল।
(১৩/১০/২০০৮খ্রি)

বিশেষ দ্রষ্টব্য : এই গল্পটি নিয়ে একটি টিভি নাটক বানানোর ইচ্ছা আছে। স্ক্রিপ্ট রেডি করেছি। কেমন হবে ?


সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১:২৪
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×