যে কোন মাধ্যম শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে এগিয়ে যেতে হলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দরকার হয়। আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য ।
এই ইন্টারনেটের যুগে চলচ্চিত্র মোটেও স্থানীয় কোন পণ্য নয়, বরং এটি একটি আন্তর্জাতিক পণ্য। শিল্প মাধ্যম হিসেবে চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে হলে যথাযথা প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নাই। যথাযথ কারিগরি জ্ঞান না থাকলে মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণ করা যায় না।
গত শতাব্দীর ৬০ এর দশক থেকে চলচ্চিত্র সংসদ কর্মীরা একটি সরকারী চলচ্চিত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আন্দোলন শুরু করেন। দীর্ঘ দিনের সেই দাবী পূরণ হয় ২০১৩ সালের ১ নভেম্বর। সেই দিন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (বিসিটিআই) যাত্রা শুরু করে।
বিসিটিআই প্রতিষ্ঠার ৫ বছর চলে গেছে। চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রশিক্ষণ কোর্সের তিনটি ব্যাচ কোর্স শেষ করেছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৮ তে বিসিটিআই-এর জয়জয়কার। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ২ জায়গাতের শ্রেষ্ঠ কাজগুলো বিসিটিআই থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরাই করেছে।
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র -- গল্প সংক্ষেপ (পরিচালক - স্বজন মাঝি ও অসীম সরকার )
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র - অপারেশন জ্যাকপট (পরিচালক - ব্রাত্য আমিন)
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা - ঝুমুর জুই (প্রামাণ্য চলচ্চিত্র - পুতুল পুরাণ)
বিসিটিআই-এর প্রাক্তন শিক্ষার্থী এই চার জন নির্মাতাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।
সেই সঙ্গে আমি গর্বিত 'গল্প সংক্ষেপ' চলচ্চিত্রের একজন কর্মী ছিলাম বলে। ওই চলচ্চিত্রের শব্দগ্রহণ করেছি এবং একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। সেই সঙ্গে গর্বিত নির্মাতাদের সহপাঠী ছিলাম বলে। স্বজন মাঝি ও ব্রাত্য আমিন প্রথম ব্যাচে আমার সহপাঠী ছিলেন।
গত শতাব্দীর ৬০ এর দশক থেকে চলচ্চিত্র সংসদ কর্মীরা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পথে। আশা করি, বিসিটিআই একদিন বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এবং এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা বাংলা চলচ্চিত্রকে সারা বিশ্বের কাছে নিয়ে যাবে। শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের সেই দিন খুব বেশি দূরে নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১৬