একদিকে করোনা, একদিকে বন্যা এবং অন্য দিকে কোরবানি। একটার সঙ্গে আরেকটা গিট্টু লেগে গেছে। করোনা মহামারির কারণে মানুষের হাতে টাকা নাই। অনেকের চাকুরি নাই। ব্যবসায়ীদের মন্দা যাচ্ছে।
মরার উপরে খাড়ার ঘাঁ হিসেবে এসেছে বন্যা। বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। হয় সময়মতো বাঁধ ভেঙ্গে পড়ে, নয় বাঁধ উপচে গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতি বছর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ বানায় এবং যার যার পকেটে টু পাইস ঢুকায়। ফলে বাঁধের চেয়ে টু পাইস কামানোর দিকে সবার নজর বেশি। বন্যায় কে ভাসল, কে ডুবল, তাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু যায় আসে না। নিজেদের পকেটের উন্নয়নই আসল কথা।
ধর্মপ্রাণ সামর্থ্যবান মানুষ কোরবানি দেবে। কিন্তু করোনার কারণে কোরবানি দেয়া ঝুঁকিপূর্ণ। হাট থেকে শুরু করে বাড়ি পর্যন্ত কোন জায়গাই নিরাপদ না। এই অবস্থায় কোরবানি দেবে নাকি করোনা ঠেকাবে অনেকে ভেবে পাচ্ছেন না।
আরেকটা নৈতিকতার দিক নিয়ে অনেকে বলছেন। একদিকে করোনায় কর্মহীন মানুষ দিশেহারা। অন্যদিকে বন্যাায় অনেকে ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা। চারদিকে এই রকম দুর্যোগে থাকা মানুষ জনকে রেখে নিজে কোরবানির গরুর পেছনে খরচ করা কি ঠিক ? এই টাকাটা দিয়ে দু্র্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো যেত না ? এই রকম ভাবনা মাথায় আসা স্বাভাবিক।
কিন্তু গরুর খামারিদের কথা ভাবলে আবার উল্টোটা মাথায় চলে আসে। ঈদে বেচার কথা মাথায় রেখে গ্রামের অনেক খামারি গরু পালে। গরুর পেছনে তাদের অনেক টাকা বিনিয়োগ। করোনার কারণে এবার গরু কেনার সামর্থ্য অনেক মানুষের নাই। গরু খামারিদের বেচা বিক্রি অনেক কম হবে এ বছর। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা গরু না কিনলে এরা বিপদে পড়ে যাবে।
কী এক সময় এল আমাদের। টাকা ছাড়া এই মুহূর্তে বড় বন্ধু আর কেউ নাই।
ছবির ক্রেডিট : আলোকচিত্রী Sabina Yesmin
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:০৫