চলচ্চিত্রের সোনালি সময় বলে একটা কথা খুব প্রচলিত। পৃথিবীর সব ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এই কথাটা বলা হয়। অতীতের জন্য মানুষের মধ্যে একটা হা হুতাশ থাকেই। বিশেষত শৈশবের স্মৃতি মানুষকে খুব আবেগে আপ্লুত করে। কিন্তু জীবন গতিশীল এবং সেটা ভবিষ্যতের দিকে। আমরা চাইলেও আর কখনও অতীতে ফিরে যেতে পারব না।
আমাদের দেশের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকে বলেন, আমাদের চলচ্চিত্রের সোনালি সময়ে ফিরে যেতে হবে। আবেগ দিয়ে বিবেচনা করলে কথাটার অনেক মূল্য আছে। কিন্তু ঠাণ্ডা মাথায় ভাবলে বোঝা যায়, এই কথার আসলে কোন দাম নাই। সোনালি সময় আর কখনও ফিরে আসবে না।
বরং আমাদের সোনালি ভবিষ্যতের জন্য কাজ করা উচিত। মোটা দাগে, আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, মেধাবী পরিচালক না থাকা এবং যথেষ্ঠ সংখ্যক সিনেপ্লেক্স না থাকা। প্রযোজকের সংকটও প্রকট। তবে মেধাবী পরিচালক থাকলে সেই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
আমাদের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট লোকজনের ভবিষ্যৎমুখী পরিকল্পনা খুব একটা নাই। দেশের আনাচে কানাচে প্রচুর মেধাবী গল্পকার ছড়িয়ে আছেন, যাদেরকে সুযোগ করে দিলে ভালো চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবেন। কিন্তু সেই সুযোগ করে দেয়ার মতো বড় প্রযোজনা সংস্থা বা প্রযোজক আপাতত নেই।
অন্য দিকে সিনেপ্লেক্স বানাতে প্রচুর টাকা লাগে। এত টাকা বিনিয়োগ করে এই খাত থেকে লাভসহ টাকা ফেরত পাওয়া খুব কঠিন। তবে পরিকল্পনা করে বিনিয়োগ করলে এই খাত থেকেও প্রচুর লাভ করা সম্ভব। কারণ আমাদের দেশে প্রচুর জনসংখ্যা। এদের মধ্যে বেশির ভাগই তরুণ। তার মানে হল, আমাদের সিনেমা দেখার প্রচুর দর্শক আছে।
সিনেমার সোনালি সময়ে সিনেমা হলের মালিকরা সিনেমা নির্মাণের জন্য ভালো ভালো পরিচালকদের পেছনে লগ্নি করতেন। অনেক পরিচালককে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখতেন। নামজাদা পরিচালক ও প্রযোজকদের প্রায় বিনিয়োগ করা লাগত না।
সিনেপ্লেক্স কোম্পানিরও সিনেমা প্রযোজনায় বিনিয়োগ করতে হবে। যারা ইন্ডাস্ট্রিতে পরীক্ষিত মেধাবী তাদের পেছনে নিশ্চয়ই বিনিয়োগ করা যায়।