somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিউবা: বাংলাদেশের জন্য একটি অনন্য উদাহরণ

১৬ ই এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রবল সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিকশিত হওয়া দু'টো সমাজ - কিউবা ও বাঙলাদেশ। বাঙলাদেশের নেতা শেখ মুজিবের সাথে যখন দেখা হয়েছিল কিউবার নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছিল "আপনি কারাগারে আর আপনারা নামেই স্বাধীন হয়ে গেল একটা দেশ! আপনাকে ও আপনার জণগনকে অভিনন্দন!" তো চলুন এতগুলো বছর পর দেশ দু'টোর বর্তমান অবস্ত্থার মোটাদাগে একটু তুলনা করা যাক:

বাসস্থান
কিউবার শতকরা ৮৫ জন মানুষের নিজের বাসস্থান আছে। বাকী ১৫ শতাংশ মানুষ সরকারী আবাসনের আওতায় বাস করে, যেখানে তারা তাদের বেতনের মাত্র ১০% ভাড়া হিসেবে দেয়।
আর বাংলাদেশে? শুধু ঢাকা শহরেই শতকরা ৩০ এর উপরে মানুষ বাস করে বস্তিতে যেখানে জীবনের ন্যুনতম মানও নেই এবং এগুলোর মালিকও তারা নিজেরা নয়। ঠিক কি পরিমান মানুষ বাঙলাদেশে গৃহহীন তার কোন সঠিক হিসাবও নেই।

চিকিৎসা:
কিউবাতে চিকিৎসকের সংখ্যা পৃথিবীতএ সবচেয়ে বেশি - প্রতি ১৭০ জনে একজন। বাঙলাদেশে প্রতি ৩৮০০ জনে একজন চিকিৎসক। ২০০৭ সালে সিডর আক্রান্ত বাঙলাদেশে সবচেয়ে আগে মেডিকেল টীম পঠিয়েছিল কিউবা।

শিক্ষা
কিউবার ৯৯.৯ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত। বাঙালাদেশে ৪৮ শতাংশ। এখানে একটু টীকা দেয়া দরকার - বাঙলাদেশের ৪৮ শতাংশের মধ্যে পরে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন সকলেই, কিন্তু কিউবার হিসেবে ন্যুনতম যারা নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছে শুধুমাত্র তারাই পড়বে তাদের শিক্ষিতের দলে। কিউবার নাগরিকদের জন্য শিক্ষা পুরোপুরি ফ্রী! প্রাথমিক স্তর থেকে পিএইচডি পর্যন্ত! আর বাঙলাদেশে শিক্ষার সমান্তরাল তিনটি ভয়াবহ ধারাই তৈরি হয়ে গেছে। বাঙলাদেশের শিক্ষা এখন সম্ভবত সবচেয়ে বড় বানিজ্য।

কর্মসংস্থান
কিউবার মাথাপিছু বাৎসরিক আয় $৯৫০০, বাঙলাদেশে মাত্র $১৫০০। কিউবার সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ আয়ের মাঝে তফাৎ চার গুনেরও কম। অর্থাৎ সবচেয়ে কম উপার্জনকারীর আয় যদি ১০০ টাকা হয় তাহলে যে সবচেয়ে বেশি উপার্জন করে তার আয় ৪০০ টাকারও নীচে। এটি সম্ভব হয়েছে সম্পদের সুষম বন্টনের মাধ্যমে। বাঙলাদেশে সম্পদের কোন বন্টন নেই যার ফলে আয়ের ব্যাবধানেরও কোন কোন গ্রহনযোগ্য হিসেব নেই। যদিও পে-স্কেল বলে চাকুরীজীবীদের জন্য একটা ব্যবস্থা আছে, কিন্তু সমগ্র দেশের জন্য সেটা প্রযোয্য নয়। গার্মেন্টসের কর্মীরা যেখানে মাসে তিন হাজার টাকা উপার্জন করেন সেখানে একজন ডাক্তার আয় করেন দু'লাখ টাকা। বাঙলাদেশে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান দিন দিন বেড়েই চলেছে।


সবচেয়ে বড় যে তফাৎটা উল্লেখ করা উচিৎ সেটা হচ্ছে, রাষ্ট্রব্যবস্থা! কিউবা একটি সমাজবাদী রাষ্ট্র যেখানে নীতি নির্ধারিত হয় দশের জন্য। আর বাঙলাদেশ চলছে লগ্নিভিত্তিক একটিপুঁজিবাদী ব্যবস্থা যেখানে নীতি নির্ধারিত হয় ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষের জন্য।

অথচ বাঙলাদেশও হতে পারত সমাজবাদী কিউবার মতই একটি সুষম উৎপাদন ও বন্টনের দেশ যদি মুক্তিযুদ্ধের চারটি মূলনীতিতে পরিচালিত হত রাষ্ট্রনীতি; '৭২ এর সংবিধানই বাঙলাদেশকে দিতে পারত একটি সফল রাষ্ট্র।
১২টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×