somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্ভরতার মানুষ বাউন্ডুলে হয়েই আমার বন্ধু থেকো

২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন পর লিখতে বসেছি আজ । হয়ত আজও লিখতাম না কিন্তু ভিনদেশী কোন বন্ধুকে শুভেচ্ছা পাঠানোর জন্য লেখা ছাড়া কিছুই পেলাম না ।

আমার স্মৃতিশক্তি অনেক কম ,তাই ভুলেই গিয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনে তোমার সাথে আমার দেখা হয়েছিল । সেই শীতের সকালে আমাদের সাক্ষাৎকার ছিল সেদিন ,আমি ছিলাম জ্বরে আচ্ছন্ন ,মা আর আমি রিক্সা করে সাতসকালে হাজির হয়েছিলাম ক্যাম্পাসের নোটিশবোর্ডের সামনে । দেখলাম দুটো ছেলে নোটিশবোর্ড ঘাঁটছে তাদের কি জিজ্ঞাসা করেছিলাম বা তারা কি জবাব দিয়েছিল তা মনে নেই । চার বছর পর ক্যাম্পাস ছাড়ার সময় তুমি মনে করে দিয়েছিলে সেইদিনের ছেলেটি তুমি ছিলে ।

এরপর প্রায়ই দেখতাম ক্লাসে খোঁচা মেরে একে ওকে পচাতে ,বৃষ্টির জুতো ফেলে দিয়েছিলে। আমি একবার তোমার মাঙ্কি ক্যাপ মাথা থেকে নিয়ে দৌড় দিয়েছিলাম তাও তুমি কিছু বলনি ।

মানুশ স্বভাবতই নির্ভরশীল কারো না কারো উপর । আমিও নির্ভর করতাম আমার বন্ধুদের উপর । যেদিন আমার নির্ভরতার সেরা বন্ধুটিকে হারালাম সেদিন থেকে আমি একা হয়ে গিয়েছিলাম । ক্যাম্পাস ট্যুরে যাবার আগে ভেবেছিলাম খুব কষ্ট পাব একা সেখানে অথচ যাবার পর বুঝেছিলাম অদৃশ্য ভাবে তুমি সাথে আছ আরেকজন নির্ভরযোগ্য মানুষ হয়ে ।

যেদিন ক্যাম্পাসে রাগ ডে নিয়ে তোমরা প্লান করছিলে সেদিন আমি বাধা দিয়েছিলাম পুরো ক্যাম্পাসের সাথে করব না বলে তুমি তোমরা সেদিন পারতে আমার কথা না শুনতে কিন্তু তোমরা ক্যাম্পাসের সব ডিপার্টমেন্টের ছেলেদের গালি ঝাড়ি থ্রেট হজম করেও আমার প্রস্তাব না কর নি ।ধীরে ধীরে তোমার প্রতি নির্ভর করতে শুরু করলাম । যেদিন আমি ক্যাম্পাস ছেড়ে আসব সেদিন খুব কষ্ট হচ্ছিল একা একা কিভাবে এত জিনিসপত্র বাড়ি নিয়ে আসব ? অনেক লজ্জার মাথা খেয়ে তোমাকে সাথে নিয়ে কুরিয়ার করলাম । সেদিন রোজা ছিল আমি বার বার জিজ্ঞাসা করছিলাম কেঊ ঢাকা যাবে নাকি? আমি তার সাথে যাব, কাঊকে না পেয়ে তুমি বললে তুমি নিজেই ঢাকা যাবে আমিও খুশি মনে রাজি হয়ে গেলাম । সেদিন তোমার সাথে রাস্তায় অনেক কথা হল ঢাকায় নেমে আমায় বাসার কাছাকাছি পর্যন্ত এগিয়ে দিলে । আমি তখনও জানতাম না সেদিন রাতেই তুমি আবার রাজশাহী চলে যাও, তুমি শুধু আমার জন্যই ঢাকায় এসেছিলে ।

এরপর ঢাকায় আসার পর কত জ্বালিয়েছি তোমাকে তার ইয়ত্তা নেই। যখন যেখানে ডেকেছি তখনই তোমাকে কাছে পেয়েছি বন্ধু হিসেবে। তুমি দূরদেশে চলে যাবে জানতাম কিন্তু ভাবিনি আমি এতটা একা হয়ে যাব তোমার প্রস্থানের পর। নির্ভরতার স্থান খালি হয়ে গেলে মানুষ অসহায় বোধ করে আমিও করতাম । এখন নিজেকে সামলে নিয়েছি । সামনের দিনগুলোতে আর এই ভুল করব না । শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা আর করব না।

বন্ধু এখন তোমার জন্মদিনের শেষ প্রহর। জানি আমার এই লেখা তোমার কাছে হাস্যকর লাগবে তবুও বলি, আমি আমার নির্ভরতার মানুষ হিসেবে তোমাকে আজীবন বন্ধু হিসেবে পেতে চাই।আমি জানি যে ব্যক্তি বন্ধুহীন তার মত অভাগা আর নেই । আমি অভাগা হতে চাইনা । চিরদিন তোমাকে একজন ভালোবন্ধু হিসেবেই পেতে চাই । অনেক কিছুই লিখব ভেবে বসেছিলাম কিন্তু লিখতে বসার পর আর কিছু মাথায় আসছে না এমনই হয় স্মৃতি স্মৃতিতেই থাকে তা কলমে আসতে চায় না ।

আমার এক নির্ভরতার মানুষের জন্য লেখা কবিতা তোমাকেও দিলাম কেননা তুমিও আমার একজন নির্ভরতার মানুষ ।তোমাকে দেয়ার মত আমার কাছে এর চাইতে বেশি কিছুই নেই ।
ভালো থেকো বন্ধু ,আকাশ ছাড়ানো স্বপ্ন দেখো ,
বাউন্ডুলে হয়েই আমার বন্ধু থেকো ।


কি দেব তোমায় ?

কি দেব ভেবে ভেবে করেছি কতক রাত পার,
আর-ডি ,নিউমার্কেট ঘুরেছি বহুবার,
কি দেব আজ তোমার শুভক্ষণে ?
ভেবেছি গতকাল,আজ ভোর,সন্ধ্যে ।

কতকিছু খুঁজেছি আপন মনে,
দেবার কিছু পাইনি খুঁজে উপহারের বনে।

গোল-চত্বরের শিওলি ফুলের সুবাস,
জিরো-পয়েন্টের সব রজনীগন্ধা,
কাঠগোলাপের প্রতিটি পাপড়ি
আর গন্ধরাজের একটি স্তবক,
তোমাকে দিলাম।

গভীর রাতের গূঞ্জন তোমাকে শুনালাম,
কুয়াশা ভেজা ভোরে তোমাকে হাঁটালাম,
কনকনে শীতের সকালে তোমাকে জাগালাম,
সূর্যাস্ত দেখাতে পদ্মার পাড়ে নিয়ে চললাম।

বেলদারপারের ডাবল শিকের বার্গার খাওয়ালাম,
জিরো-পয়েন্টের লেবু চা খাওয়ালাম,
জীবনানন্দের একগুচ্ছ কবিতা পড়ার অনুরোধ করলাম,
তোমার প্রিয় হিন্দি মুভি ডিভিডি করে রাখলাম।

আমার সাধ আর সাধ্যে শুধুই অনুভুতি,
যার সবই আমার পঙক্তি।
সবই হয়ত কাল্পনিক অথবা কাব্য-
তবে এই ছিল তোমার প্রাপ্য।


শুভ জন্মদিন 'vessilli' ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৪
৩৩টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×