somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি ভূত নই আমি ভীতু আমি মিথ্যেবাদী আমি স্বার্থপর সন্তান

০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কি যেন হয়েছে আমার , কিছুতেই মন বসাতে পারি না । না সাংসারিক কাজে, না পড়াশুনায়, না বিনোদনে , কিছুতেই না । একটা সময় ছিল টানা মুভি দেখে রাত পার করেছি । আজ আর তা হয় না । আমি না কোনদিন বাইরের আনন্দময় জগৎ থেকে আনন্দ নিতে পারি না । আমার সবচাইতে বড় সমস্যা আমার মন, আমি অনেক বেশী ইমোশোনাল বাংলায় কি বলে আবেগপ্রবণ ! আমার চাকরি ক্ষেত্রে যেয়েও বসের কাছ থেকে শুনেছি "আবেগ কমাও" :( আমি পারি না , আমি অনেক ভীতু ।

বাবা মারা গেছেন আজ প্রায় ৯ বছর । বাবা মারা যাওয়ার পর মা চাকরিজীবী হেতু তাঁকে অবসর পেতে হয়নি যে তিনি মন খারাপের সুযোগ পাবেন । অনার্স পাশ করার পর আল্লাহ্‌র ইচ্ছায় একটা চাকরি পেয়ে গেছিলাম । মনে মনে একটি মানুষকে অনেক ভালবাসতাম । তার কাছে মনের কথা বলার সুযোগ যেদিন পেলাম সেদিন আমি শুধু তাকে হারাবো এই ভেবে তার শর্ত মেনে নিলাম আর জীবনের সবচাইতে বড় স্বার্থপরতা করলাম ।

বিয়ের পর মাকে ছেড়ে পরবাসী হয়ে আছি, মাঝে মাঝে মনে হয় সংসার ছেড়ে দিয়ে মায়ের কাছে উড়াল দেই । বাস্তবতা কি এতোই সোজা ? এদিকে যার সাথে ঘর বেঁধেছি তার জন্যও কম মায়া তৈরি হয়নি । তাকে ছেড়েই কি করে থাকি ??


কি দোটানা তাই না?
আমার নানীর ৯ সন্তান । শেষ বয়সে আমার মাই তাঁর ঠাঁই । তাঁর ছেলেরা অর্থ নিয়ে কার্পণ্য করেন না কিন্তু একটা মানুষের টাকার সাথে সাথে অনেক কিছুই লাগে এটা আমার নানীর সন্তানেরা বুঝেন কিনা জানি না ।

আমি বুঝি না মানুষ কেন কিসের পেছনে ছুটে ?? আমাদের বাবা মা আমাদের জন্য নাকি গ্রাম ছেড়েছেন , আমরাও ভবিষ্যৎ কে ভেবেই ছেড়েছি দেশ, আমাদের সন্তান কি বিশ্ব ছেড়ে যাবে ? মানে কি দেশ থেকে দেশান্তরে এই ছুটে চলা কেন ?
হুম দেশে নিরাপত্তা নেই, অনেক কিছুই নেই, তাই বলে এই মায়া , এই বাতাস, এই পরিবার , ছেড়ে আমি গত ২ টি বছর কেঁদে কেঁদে পার করেছি ! একটা মুহূর্ত আনন্দের মনে হয় নি । ২ টি বিবাহবার্ষিকী পালন করেছি !! সব মেয়েই হয়তো চায় কিছুটা স্পেস একাকি কিছুক্ষন , কিন্তু দিনের পর দিনের একাকীত্ব বিশেষ দিনে বিষের মত লাগে !!

নাকি শুধু আমারই লাগে?? আমি যখন লিখছি তখনও কাঁদছি ? আমার মায়ের জন্য , আমি তাঁকে কিভাবে অবজ্ঞা করে চলে এলাম ।

আমার জীবনের অনেক গুলি বছর গেছে বিছানায় অসুস্থ অবস্থায় । স্কুল কলেজ আমার বাবা মা আমাকে ডাক্তার , পীর , কবিরাজ কিছুই বাদ রাখেন নি সুস্থ করার জন্য । অথচ যখন আমার বাবা কান্সারে আক্রান্ত হল আমি আমার পড়াশুনায় ব্যস্ত অন্য শহরে ।মনে আছে আব্বু যেদিন শেষ ভালো ভাবে কথা হয় , হসপিটালে যাওয়ার আগে আমাকে ফোন দেয় , আমার বোন কে বলে আমি যাতে বুঝতে না পারি তার অনেক হেঁচকি উঠত সেটা আমার সাথে কথা বলার সময় অনেক কষ্টে দমিয়ে রেখে কথা বলে । বলে আব্বুতো চলে যাবো নিজের পড়াশুনা ঠিক ভাবে করো । হাহ কি স্বার্থপর আমরা না? সবাই তো চলে যাবো একদিন ?
এরপর ভেবেছিলাম আর ছেড়ে যাবো না পরিবার কে । অথচ আজ আমার আম্মু যখন অসুস্থ আমি প্রতিদিন ফোনে শুনি সে হাঁটতে পারে না, আমি বিরক্ত হয় , কাঁদি , রাগ করি !! কেমন সন্তান আমি?

আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমি দেশে ফিরলেই মানসিক ডাক্তার দেখাবো । আমার মন সারাক্ষন কাঁদে এটা বন্ধ করতে হবে। অনেক কিছুই লিখতে মন চাইছে । মনের মানুষকে সব বলা যায় না , অথবা বলেছি ও অনেক জ্বালিয়েছি কেঁদে কেঁদে ,ওর জীবনটা আমি নষ্ট করছি । আমি ওর স্বপ্ন নষ্ট করতে চাইছি । আমি আসলে একটা ভূত না ভীতু হাহাহা ।

কেন লিখছি ? এমনি লেখা পড়ার বা লেখার ইচ্ছা কোনটাই এখন করে না । এখন ইচ্ছে করে শুধু কাঁদি । তাও আজ লিখলাম কেন জানি না মনে হচ্ছে মন হালকা হচ্ছে হাহাহাহা ।

কেউ বকা দিয়েন না এই ফালতু কান্দুন মার্কা পোস্টে সময় ব্যয় করে :(
শেষে আমার লেখা পুরনো কবিতা দিচ্ছি যা আমি আমার এই দশা হবার অনেক আগে লিখেছিলাম আজ আমি নিজেই তা হয়ে গেছি। কি অদ্ভুত না ?? এখনতো ভাদ্র মাস গুম হয়ে থাকার সময়

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৩৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×