somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্ররাজনীতি বা লেজুরবৃত্তির রাজনীতি বন্ধ করিলে কি হইবে???

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মনে হয়, শিক্ষাঙ্গনে অবশ্যই রাজনীতির প্রয়োজন আছে। এবং বর্তমানে যে 'দলীয় লেজুরবৃত্তি' শব্দদ্বয় যত্রতত্র ব্যবহার করা হয়- তাহা শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের বংশবদ মিডিয়ার তৈরি বিভ্রান্তিসৃষ্টিকারী প্রচারণা - যে প্রচারণায় আমরা বেশির ভাগই প্রভাবিত এবং ইহা শাসকগোষ্ঠীর রাজনীতির মধ্যে যে অন্তসারশূণ্যতা তাহাকে টিকাইয়া রাখিবার অস্ত্র।

রাজনীতি করিবার অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার। তাহা প্রচলিত কোন রাজনৈতিক দলের অনুসারি হইয়াই হউক অথবা কোন রাজনৈতিক দলের সহিত যুক্ত না থাকিয়াই হউক। ইহাতে কাহারো বাঁধা প্রদান মোটেও গণতান্ত্রিক হয় না।
ফলে, একজন ছাত্র বা একজন শিক্ষক রাজনীতি করিতে চাইলে তাহা তাঁহার করিতে পারাই উচিত। এমনকি তাঁহারা কোন রাজনৈতিক দলের অনুগত থাকিয়া করিতে চান- তাহাও তারা করিতে পারেন। এইখানে দলীয় লেজুরবৃত্তি শব্দখানিই আপত্তিকর।

কিন্তু, যেইসব কারণে এই রাজনীতির বিষোদগার করা হয়, অনেকে- রাজনীতির প্রয়োজনীয়তার কথা বলিয়া লেজুরবৃত্তির বা বহিরাগতদের কথা বলিয়া থাকেন- তাহাদের বুঝা উচিত যে ইহাতে সেই সব মূল কারণ আড়ালে পড়িয়া যায়। সেই সন্ত্রাস বলেন, আর দূর্বৃত্তায়ন বলেন আর নীতিহীনতা বলেন- সেইগুলোকে নির্মূলই সর্বাগ্রে প্রয়োজন।

ধরেন, একজন ছাত্র প্রচলিত একখানা বড় দলের সহিত যুক্ত এবং সেই দলের প্রভাব খাটাইয়া চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত। তাহলে- সেই ছাত্রকে কোন কর্মকান্ডের জন্য অপরাধী করিব? দলীয় রাজনীতির সহিত যুক্ত থাকা নাকি ঐ সকল অপকর্ম করা?

বিশেষত সরকারী দলের অঙ্গসংগঠনের দাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অনেক হয়রানি-বঞ্চনার শিকার যদি হয়, তবে সেক্ষেত্রে কাহাকে অপরাধী করিবেন, কোন অপরাধে অপরাধী করিবেন?

আমার মতে অপরাধী করা উচিত- যাহারা দাপট দেখাইলো, যাহারা হয়রানি করিল, যাহারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বঞ্চনা করিল- তাহাদিগকে, যাহারা নেপথ্যে মদত দান করিল তাহাদিগকেও।

কিন্তু, এই কারণে রাজনীতিকে বা লেজুরবৃত্তির রাজনীতিকে দোষারোপ করিলে- বুঝিতে হইবে ইহাতে অন্যরূপ অসত ইনটেনশন বিদ্যমান। এই অসত ইনটেনশন সকলের না থাকিলেও, শাসকগোষ্ঠী এই ইনটেনশন লইয়াই এই ধরণের প্রচারণায় সকলকে প্রভাবিত করিতে চায়।

আর সবচেয়ে বড় বিপদ এই খানে যে, এইভাবে বলিলে- মূল হোতারা পর্দার আড়ালেই থেকে যায়, বা তাহাদের বিরুদ্ধে প্রকৃত কোন প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়না বা এই সমস্যা সমূহের প্রকৃত সমাধান সম্ভবপর হয় না।

সরকারি দল বা প্রধান বিরোধীদলসমূহই তো এহেন অপকর্মের হোতা। তাহারা জাতীয় রাজনীতিতে, জাতীয় ক্ষেত্রে সর্বস্থলে, এবং একইভাবে শিক্ষাঙ্গনেও দূরবৃত্তায়ন কায়েম করিয়াছে।
তাহাদের সর্বোত্ত প্রকারে প্রতিরোধ না করিয়া শুধু শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি বা লেজুরবৃত্তি বন্ধ করিলে লাভের লাভ কি হইবে?
শিক্ষাঙ্গনে যে সন্ত্রাস, যে নীতিহীনতা, তাহার সহিত অনেকাংশেই আর্থিক কর্মকান্ড জড়িত।

ইহার রুট সমূলে উত্পাটিত না করিলে কি, শুধু লেজুরবৃত্তি বন্ধ করিলে বা রাজনীতি বন্ধ করিলেই - সেই টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী বন্ধ হইবে?

এই সমস্যাসমূহ রাজনৈতিক সমস্যা, সমাধানও একমাত্র রাজনৈতিক উপায়েই সম্ভব।

গণমানুষের, ছাত্রের, কৃষকের, শ্রমিকের আন্দোলন-লড়াই-সংগ্রামের ভিতর দিয়েই এর সমাধান সম্ভব, এর মধ্য দিয়েই নেতৃত্ব তৈরি হবে- ইহার কোন বিকল্পই দেশকে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না- সেনা ক্যু, আর্মি ও সাম্রাজ্যবাদীদের আহ্বানে আসা কেয়ারটেকার বা সেনা-ব্যাকড কোন সুশীল সরকার- কোনটাই জনগণের জন্য কোন কল্যাণ বহিয়া আনিবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৭
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×