somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নবীন ফিল্মমেকারদের জন্য কিছু টিপস (১)

২২ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। প্রচুর সিনেমা দেখুন। হলিউড, বলিউড বাদ দিবেন- এগুলো দেখে কিছু শিখতে পারবেন না (ক্ষণিক মনোরঞ্জনের জন্য দেখতে পারেন- হুমায়ুন আহমেদের বই পড়ার মত)।
২। ভালো সিনেমা বারবার দেখুন। প্রথম এক-দু'বার কাহিনী, ঘটনা পরম্পরা আপনাকে বুদ করে রাখবে- করার কিছু নাই, অন্য ভাষার হলে- সাব টাইটেল পড়তে পড়তে তো- বেশিরভাগ সিনই আপনার মিস হবে। সাধারণত, ৩য়বার দেখার সময় থেকে আপনার সিনেমাটিক আই ওপেন হবে। এবার নড়ে চড়ে বসুন।
৩। কাটগুলো ধরার চেষ্টা করুন, এবং juxtapose এর উপায়/ রকমফেরগুলো ধরার চেষ্টা করুন।
৪। ক্যামেরার শট সিলেকশন দেখুন। লং শট, মিড শট, ক্লোজ শট- বিভিন্ন এঙ্গেল শট এসব খেয়াল করুন।
৫। ক্যামেরা মুভমেন্ট খেয়াল করুন।
৬। ফ্রেম এর কম্পোজিশন খেয়াল করুন।
৭। লাইটের ব্যবহার খেয়াল করুন।
৮। এবারে আবার যখন সিনেমা দেখবেন, তখন উপরের ৩ থেকে ৭ পর্যন্ত বিষয়গুলো আবার খেয়াল করতে থাকুন এবং বুঝার চেষ্টা করুন, কোন উদ্দেশ্যে কাটগুলো ব্যবহার করা হয়েছে, বিভিন্ন শট সিলেকশনের উদ্দেশ্য কি, ক্যামেরা মুভমেন্টের উদ্দেশ্য, ফ্রেম কম্পোজিশনের উদ্দেশ্য, লাইটের উদ্দেশ্য কি। এটা বুঝার জন্য ভালো উপায় হলো, একটু চিন্তা করা যে- এসমস্ত আপনার উপর কি প্রভাব তৈরি করছে; অর্থাৎ, একটা লো এঙ্গেল শট আপনার মনের উপর কি প্রভাব তৈরি করছে, একটা ক্লোজ আপ, ক্যামেরার কোনো মুভমেন্ট আপনাকে কতখানি অভিভুত করছে- কিভাবে করছে, সেটা দিয়ে বুঝতে পারবেন। প্রতি শটই যে আপনাকে অভিভুত করবে তা নয়, কিন্তু আপনি যদি সচেতন থাকেন- তবে ক্ষণে ক্ষণেই বুঝতে পারবেন বা আপনার মনে হবে এই শটটা এমন হওয়াটাই সবচেয়ে পারফেক্ট, অন্যভাবে নিলে কিছু হতো না- সেরকম শটগুলো/ সিকোয়েন্সগুলো ভালো করে খেয়াল করুন। একটা ভালো সিনেমা যতবার দেখবেন- এমন শট/ সিকোয়েন্স ততবেশী খুজে পাবেন।
৯। কম খরচে তৈরি ভালো সিনেমাগুলো দেখার চেষ্টা বেশী করবেন। তাহলেই কেবল ডিরেক্টরের মুন্সিয়ানা বেশী করে বুঝতে পারবেন, নিজেও ফিল্ম তৈরির ব্যপারে সাহস পাবেন। (একারনেই- নবীন ফিল্ম মেকারদের জন্য হলিউড/ বলিউড এর হাই বাজেট মুভি দেখা বারন! প্রথমেই আপনার মনে হবে ফিল্ম মেকিং আপনার কর্ম নয়!!)। ইরানি মুভি, ইতালিয়ান নিও রিয়ালিস্ট, ফ্রেন্স নিউ ওয়েভ, থার্ড সিনেমা প্রভৃতি।
১০। বিভিন্ন জেনারের মাস্টারপিস মুভিগুলো পাশাপাশি দেখুন, কমপেয়ার করে করে দেখুন। আমি বলবো- সিনেমা পড়ুন (১ - ৯)। যেমন, ক্যামেরা মুভমেন্ট নিয়ে- অজুর কোন একটা সিনেমা (জিরো মুভমেন্ট- সবই প্রায় স্টিল ফ্রেম), wim wenders এর Buena Vista Social Club (পোয়েটিক মুভমেন্ট- আপনাকে সারাক্ষণ ভাসিয়ে রাখবে), আবার দামি যন্ত্রপাতি ছাড়া ক্যামেরা মুভমেন্ট এর মুভি- Handheld মুভিও দেখুন (আব্বাস কিরস্তামির হয়ার ইজ মাই ফ্রেন্ডস হাউস), সবই দেখুন। লাইট/ সাউণ্ড এর জন্য ব্রেসো দেখতে পারেন। আবার আকিরা কুরুশায়াতেও লাইটের খেলা দেখতে পারেন- রশোমনই দেখেন।
সিনেমা মানেই তো আসলে গতি, মুভমেন্ট- এই মুভমেন্ট কত প্রকারে হতে পারে সেটা খেয়াল করুন, পার্থক্যগুলো ধরার চেষ্টা করুন, কোন নির্দিষ্ট উপায়কেই একমাত্র ধরে নিবেন না- ভিন্ন ভিন্ন উপায়ের আলাদা মজা আস্বাদন করার চেষ্টা করুন। ছোট ছোট শট juxtapose করে মুভমেন্ট দেখাতে পারেন যেমন, তেমনি একটা লং টেক এ ক্যামেরা মুভমেন্ট এর মধ্য দিয়ে মুভমেন্ট দেখাতে পারেন, আবার ক্যামেরা স্থির রেখে ফ্রেমের অবজেক্ট এর মুভমেন্ট দেখাতে পারেন, কিংবা ক্যামেরা- ফ্রেমের অবজেক্ট সব স্থির রেখে- কেবল লাইটের খেলার মধ্য দিয়েও আপনি মুভমেন্ট তৈরি করতে পারেন। কোনটাই অর্থহীন নয়- যদি এই মুভমেন্ট দর্শককে প্রভাবিত করতে পারে, সিকোয়েন্স এর আবেদন দর্শকের ধরতে পারে।
পাশাপাশি এইসব সিনেমাগুলো পড়ুন। ভাবুন। উপলব্ধি করুন। সাধারন দর্শক- কেবল প্রভাবিতই হয়, সিকোয়েন্সের আবেদনের সাথে একাত্ম হয়- কিন্তু সে বুঝতে পারে না বা জানেনা কিভাবে এই সিকোয়েন্সের সাথে তার নৈকট্য তৈরি হল- কোথায় কাট, কোনটা কি শট, কোন এঙ্গেলের শট - এসব সম্পর্কে সচেতন না থেকেও নৈকট্য তৈরি হতে পারে, কিন্তু আপনাকে ওই সুত্র বের করতে হবে।
১১। এবার আসুন সিনেমা তৈরিতে। ... পরে লেখব...
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×