তাইমুর হাসান শুভ[/sb
ইদানিং আন্দোলন, মানবজোট, সংগ্রাম কর্মসূচি ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ পিপার নামক এক স্প্রে উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যবহার করছে। যদিও এর ব্যবহার বাংলাদেশে নতুন হলেও পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এটি বেশ পুরোনো এবং নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবেই বহুল পরিচিত।
ইংরেজীতে পিপার স্প্রে (বৈজ্ঞানিক নাম স্যাবর রেড) বলা হলেও এর সাধাসিধে বাংলা অর্থ দাড়ায় মরিচের ঝাপটা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিকিউরিটি ইকুইপমেন্ট কর্পোরেশন’ কোম্পানী মূলত এই স্প্রেটি উৎপাদন করে।
ইংরেজি দৈনিক লস এঞ্জেলস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত এই স্প্রে ব্যবহারে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ৬১ জনের মৃত্যুও ঘটনা ঘটেছে।
পিপার স্প্রে’কে মানুষের ওপরে প্রয়োগ নিষিদ্ধ হলেও হিং¯্র প্রানীদের কাছ থেকে আতœরক্ষার জন্য ব্যবহার করার রীতি আছে।
কেন এই স্প্রে ব্যবহারে মানুষ মারা যায় সেটা আসুন জেনে নেয়া যাক।
সাধারনত মরিচের ঝালের একককে ‘স্কোভিল’ বলা হয়ে থাকে। একটি ভালো মানের এবং সুস্থ লাল মরিচে সাধারনত তিরিশ হাজার থেকে পঁঞ্চাশ হাজার স্কোভিল থাকে। একবার ‘পিপার স্প্রে’তে স্কোভিলের পরিমান থাকে দুই লক্ষ স্কোভিল যা মরিচের চেয়েও ৪ থেকে ৭ গুন বেশি কার্যকর।
দ্য জার্নাল অফ ইনভেষ্টিগেটিভ অপথামোলজি এন্ড ভিস্যুয়াল সায়েন্স তাদের এক গবেষনা প্রকাশ করেছে, ‘পিপার স্পে’্র ব্যবহারের ফলে চোখে ও ত্বকে তীব্র জ্বলুনি, সাময়িক অন্ধত্ব, চোখের কর্ণিয়ার স্থায়ী তি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
জার্নালে আরো বলা হয়েছে, যাদের হৃদরোগ এবং হাঁপানীর সমস্যা আছে তাদের জন্য সাক্ষাৎ মৃত্যু ডেকে নিয়ে আসতে পারে এই পিপার স্প্রে। এছাড়াও ক্যান্সার সৃষ্টিকারক উপাদান এই স্প্রেতে অতিমাত্রায় আছে।
১৬ আউন্স ওজনের প্রতিটি পিপার স্প্রে’র দাম আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় ৪৮ ডলার অর্থাৎ তিন হাজার পাঁচশত টাকার অধিক।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, যত ধরণের ‘পিপার স্প্রে’ আন্তর্জাতিক বাজারে বাজারে পাওয়া যায় বাংলাদেশ পুলিশ তার মধ্যে সবচেয়ে তীব্রতম মাত্রার স্প্রে’টি ব্যবহার করছে অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি মাত্রার পিপার তারা জনগণের ওপরে প্রয়োগ করছে!
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে এমপিওভুক্তকরণের দাবীতে শিক্ষদের ওপরে পুলিশ পিপার প্রয়োগ করে। পিপার স্প্রে’র এর দরুন ১৪ জানুয়ারী এক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে মারা যায়।
তথ্য: উইকেপেডিয়া।