somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাপের সংজ্ঞা المعصية و مضارها

২০ শে অক্টোবর, ২০১১ বিকাল ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শরীয়তের পরিভাষায় মাসিয়াত বা পাপ হল, আল্লাহ তাআলা যা করা বান্দার জন্য আবশ্যক করেছেন, তা পালনে বিরত থাকা, এবং যা হারাম করেছেন, তা পালন করা। শরীয়তের পরিভাষা ব্যবহারে পাপকে বুঝানোর জন্য বিভিন্ন শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়, যেমন—যান্ব, খাতীআ’, ইসম, সাইয়্যিআ’—ইত্যাদি।

এর চুড়ান্ত বিপজ্জনক দিক হল, তা মানুষকে দূরে নিক্ষেপ করে আল্লাহ ও তার রহমত হতে, টেনে নেয় আল্লাহর ক্রোধ ও জাহান্নামের ভয়ানক পরিণতির দিকে। পাপের ক্রম ও ধারাবাহিকতা মানুষকে মাওলার সান্নিধ্য হতে ক্রমে দূরে নিক্ষেপ করে।

এ কারণে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে পূণ: পূণ: এ সম্পর্কে সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছেন, পাপ থেকে দূরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন ও পাপের কারণে অতীত জাতিগুলোর উপর যে-সকল আযাব-গজব ও দুর্যোগ নেমে এসেছিল—তার বিবরণ তুলে ধরেছেন সবিস্তারে। সাবধান হতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে :—

‘যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখ, তাদের কিছু পাপের কারণে আল্লাহ তাদের শাস্তি দিতে চান।’ সূরা মায়েদা : ৪৯

অনুরূপভাবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে পাপ থেকে দূরে থাকতে বলেছেন অসংখ্য হাদীসে। উদাহরণত: তিনি বলেছেন :— ‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক পাপ থেকে দূরে থাকবে ...’ (বুখারী

পাপের প্রকারভেদ :— পাপ দু’ভাগে বিভক্তÑ ( ১) কবীরা—মারাত্মক পাপ। (২) ছগীরা বা লঘুপাপ।

পাপ দু’ভাগে বিভক্ত হওয়ার ব্যাপারে কোরআন-হাদীসের দলীল ও প্রমাণাদি অসংখ্য, নিম্নে তার কয়েকটি উদ্ধৃত করা হল:

(ক) আল-কুরআনে এসেছে :— ‘নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর মাঝে যা গুরুতর, তা হতে যদি তোমরা বিরত থাক, তবে তোমাদের ছোট পাপগুলো ক্ষমা করে দিব।’( [সূরা নিসা ৩১) (খ) ভিন্ন এক স্থানে কোরআনের বর্ণনা :— ‘যারা বিরত থাকে গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কার্য হতে, ছোট পাপের সম্পৃক্ততা সত্ত্বেও।’ [সূরা নাজম : ৩২]

(গ) হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : ‘পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ও এক জুমা’ হতে অপর জুমা’ হল এসবের মধ্যবর্তী সময়ে কৃত পাপের কাফফারা যদি কবীরা গুনাহ থেকে বেঁেচ থাকা হয়।’ (তিরমিযী : ১৯৮)

কবীরা ও ছগীরা গোনাহের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা = প্রথমত : কবীরা গুনাহ

কিছু কিছু পাপকে কোরাআন ও হাদীসের স্পষ্ট প্রমাণের আলোকে কবীরা গুনাহ হিসেবে শনাক্ত করা যায়, যেমন, আল্লাহর সাথে অংশিদারিত্বসাব্যস্ত করা, পিতা-মাতার অবাধ্যতা, অন্যায় হত্যা, যাদু, মিথ্যা সাক্ষ্য—ইত্যাদি। আর যে সব গুনাহ সম্পর্কে কবীরা হিসেবে স্পষ্ট ঘোষণা কুরআন বা হাদীসে আসেনি এরূপ পাপসমূহের কোনটি কবীরা তা নির্ণয় ও শনাক্তির জন্য উলামাগণ একটি মূলনীতি নির্ধারণ করেছেন। কবীরা গুনাহের সংজ্ঞা নিরূপনে ইসলামী আইন বিশারদদের মতামত এই যে, যে পাপ কোরআন ও হাদীসের দলীল দ্বারা কঠোরভাবে হারাম হওয়া প্রমাণিত, যার ব্যাপারে লা’নত ও গজবের ঘোষণা এসেছে, কিংবা জাহান্নামের হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে, অথবা দুনিয়াতে শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে—তাকে ইসলামের পরিভাষায় কবীরা গুনাহ বলা হয়।

দ্বিতীয়ত : ছগীরা গুনাহ : = কবীরা গুনাহের উক্ত সংজ্ঞা যে পাপের উপর আরোপ করা যায় না, তাকেই ইসলামের পরিভাষায় ছগীরা গুনাহ বলা হয়। যেমন : আজান হওয়ার পর মসজিদ থেকে বের হওয়া, দাওয়াত পাওয়ার পর তাতে কোন কারণ ব্যতীত অংশ গ্রহণ না করা, সালামের উত্তর না দেয়া, হাঁচি দিয়ে যে আল্হামদুল্লিাহ বলল তার উত্তর না দেয়া ইত্যাদি।

ছগীরা গুনাহকে লঘু মনে করার ব্যাপারে সাবধানতা :— ছগীরা গুনাহকে লঘু মনে করা কোন ক্রমেই উচিত নয়। কেননা, এতে কবীরাহ গুনাহে আক্রান্ত হওয়ার পথ উন্মুক্ত হয়। ছগীরা গুনাহকে লঘুভাবে নেয়ার ভয়ানক পরিণতি কি হতে পারে, তা এখানে আলোচনা করছি:— (ক) মুসলমানের কর্তব্য, যা কিছু হতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকা। কোন্টা ছোট আর কোন্টা বড়—তা বিবেচ্য নয়। রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন :— ‘যা থেকে আমি তোমাদের নিষেধ করেছি, তা পরিহার কর।’ (মুসলিম ৪৩৪৮)

(খ) মানুষের কর্তব্য, আল্লাহ তা‘আলার অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনার্থে গুনাহ পরিহার করে চলা। কেননা, যা কিছু আল্লাহ ও তাঁর রাসূল পরিহার করতে বলেছেন, তা পরিহার না করার অর্থ আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন, অসম্মান দেখানো। সন্দেহ নেই এটা খুবই আপত্তিকর ও গর্হিত কাজ। তাই, এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত তাবেয়ী বেলাল ইবনে সা’দ রা.-এর উক্তি এরূপ—তুমি ছোট অপরাধ করলে, না বড় অপরাধ—তা ধর্তব্য নয়। মূল দেখার বিষয় তুমি কার কথার অবাধ্য হচ্ছো।

(গ) ছোট গুনাহ থেকে সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য রাসূল সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়ে বলেছেন :—

‘তোমরা ছোট ছোট গুনাহ থেকে সাবধানতা অবলম্বন করবে। [আহমদ২১৭৪২]

(ঘ) ছগীরা গোনাহে মানুষের অভ্যস্ততার ফলে মানুষ ক্রমে অন্যান্য ছগীরা এবং এক সময়ে কবীরা গুনাহে প্রতি লিপ্ত হয়ে পড়ে। ছগীরা গুনাহকে হাল্কা মনে করে তাতে লিপ্ত হওয়া শয়তানের কুমন্ত্রণা বৈ নয়। ] আল্লাহ তা‘আলা বলেন :— ‘হে বিশ্বাসীগণ ! তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না।’ [সূরা আন-নূর : ২১) * যে সব কারণে ছগীরা গুনাহ কবীরা গুনাহে পরিণত হয় :—

(১) বার বার ছগীরা গুনাহে লিপ্ত হলে অথবা ছগীরা গুনাহ অভ্যাসে পরিণত হলে তা আর ছগীরা গুনাহে সীমাবদ্ধ থাকে না। কবীরা গুনাহে পরিণত হয়। প্রখ্যাত সাহাবী ইবনে আব্বাস রা. বলেন : ‘ইস্তেগফার বা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে কবীরা গুনাহ থাকে না। তবে বার বার ছগীরা গুনাহ করে গেলে তা আর ছগীরা গুনাহ থাকে না।’

(২) প্রকাশ্যে ছগীরা গুনাহ করলে অথবা তা করে আনন্দিত হলে বা তা নিয়ে গর্ব করলে কবীরা গুনাহে পরিণত হয়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :=

‘আমার উম্মতের সকল সদস্য ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে, কেবল যারা প্রকাশ্যে পাপ করে যায়, তারা ব্যতীত। প্রকাশ্যে পাপ করার অর্থ : কোন ব্যক্তি রাতে খারাপ কাজ করল। আল্লাহ্ তার এ কাজটি গোপন রাখলেন কিন্তু দিনের বেলায় সে লোকদের বলে বেড়াল, হে শুনেছ ! আমি গত রাতে এই এই করেছি। রাতে তার প্রতিপালক যা গোপন করলেন, দিনে সে তা প্রকাশ করে দিল।’

(৩) যিনি ছগীরা গুনাহ করলেন, তিনি যদি মানুষের জন্য অনুসরণযোগ্য হয়ে থাকেন, তাহলে মানুষ তার কারণে এ গুনাহকে গুনাহ মনে করবে না। মনে করবে, তার মত মানুষ যখন এ কাজ করতে পারে, তাহলে আমরা করলে দোষ কি ? ফলে তাদের এ গুনাহের অংশ তারও বহন করতে হতে পারে। পাপের নেতিবাচক প্রভাব :— ব্যক্তি ও সমাজের উপর পাপ ও পাপাচারের নেতিবাচক নানাবিধ প্রভাব রয়েছে, যা ক্রমান্বয়ে ব্যক্তি বা সমাজকে পাপের খেলায় মত্ত করে তোলে, ধ্বংসের বীজ ছড়িয়ে দেয় সর্বত্র। নিম্নে তারই কয়েকটি তুলে ধরা হল ।’ (ক) ব্যক্তির উপর পাপের ক্ষতিকর প্রভাব :— পাপের কারণে ব্যক্তির অন্তরাত্মা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়, তার আত্মা ঢেকে যায় অন্ধকারাচ্ছন্নতার চাদরে। মনকে সঙ্কুচিত মনে হয় সর্বদা। নানা প্রকার বিপদ-আপদে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ভাল কাজের শক্তি-সামর্থ্য ও তাওফীক হ্রাস পায়। প্রশ্ন হতে পারে— যারা পাপাচারে লিপ্ত তারাইতো গড়ে তুলছে প্রাচুর্য্য। যাপন করছে স্বাচ্ছ্যন্দ জীবন ! নেয়ামত ও আনন্দের আবহ ঘিরে সর্বদা তাদের। কথা অসত্য নয়। তবে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের ধৃত-পাকড়াও করার কৌশল মাত্র। পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে এ প্রসঙ্গে বক্তব্য এসেছে := ‘আর আমি তাদের সময় দিয়ে থাকি, নিশ্চয় আমার কৌশল অত্যন্ত বলিষ্ঠ।’ [সূরা আল-কলম : ৪৫] ‘কাফিরগণ যেন কখনো মনে না করে, আমি অবকাশ দেই তাদের মঙ্গলের জন্য; আমি অবকাশ দিয়ে থাকি, যাতে তাদের পাপ বৃদ্ধি পায়। তাদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।’ [সূরা আলে ইমরান ১৭৮ ) * রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :— আল্লাহ অত্যাচারীকে অবকাশ দেন। যখন তাকে পাকড়াও করা হয়, তখন সে দিশেহারা হয়ে যায়। অত:পর তিনি কুরআনের এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন : ‘এ রকমই তোমার প্রতিপালকের শাস্তি। তিনি শাস্তি দান করেন জনপদসমূহকে, যখন তারা জুলুম করে।’

(সূরা হুদ: ১০২) (খ) সমাজে পাপের ক্ষতিকর প্রভাব :—

সমাজে পাপাচার ও তার ক্ষতিকর প্রভাব বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে পড়ে। পাপাচারের কারণে বিভিন্ন রোগ-ব্যধির বিস্তার ঘটে, দুষিত হয় পরিবেশ। দেখা দেয় নিরাপত্তার অভাব, বিঘœ ঘটে শান্তি-শৃংখলার, ভীতি ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহভাবে। কখনো অনাবৃষ্টি, কখনো অতিবৃষ্টি, ভূমিকম্প, ঝড়-তুফানসহ দেখা দেয় নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। মানববিধ্বংসী যুদ্ধ, আগ্রাসন—ইত্যাদি মানুষের পাপাচারেরই ফসল।

তবে কাফিরদের অবাধ বিচরণ ও স্বচ্ছলতা দেখে মুসলিমদের বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়। কারণ, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে সাময়িক অবকাশ, কিংবা হয়ত আল্লাহ তা‘আলা পরোকালের তুলনায় দুনিয়াতেই তাদের জন্য বরাদ্দ সকল সুখ-শান্তি বিলিয়ে দিচ্ছেন,—রাসূল হতে বর্ণিত হাদীসেও এর স্বপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়। পাপাচার প্রতিরোধে ব্যক্তি ও সমাজের করণীয় :=

প্রথমত : সামাজিক দায়িত্ববোধ বিস্তার : সমাজের দায়িত্ব হল সকল প্রকার পাপাচার ও অপরাধ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া। উপদেশ ও নসীহতের মাধ্যমে পাপাচার নির্মূল করা। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ হতে বিরত রাখার কর্মপন্থা গ্রহণ করা। এ ব্যাপারে অলসতা ও গাফিলতি প্রদর্শন প্রকারান্তরে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের জন্য বিপদ ডেকে আনবে, সন্দেহ নেই। পাপ নির্মূলের চেষ্টা না করে যদি পাপের সাথে সহাবস্থানের মানসিকতা তৈরি হয়ে যায়, আল্লাহর পক্ষ থেকে তবে শাস্তি নাযিল হওয়া অবধারিত। ইরশাদ হয়েছে :—

‘বনী ইস্রাইলের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল, তারা দাউদ ও মারইয়াম তনয় ঈসা কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল—এ এজন্য যে, তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী। তারা যেসব গর্হিত কাজ করত তা হতে তারা একে অন্যকে বারণ করত না। তারা যা করত, তা নিয়ত অতি নিকৃষ্ট। := [সূরা মায়েদা ৭৮-৭৯ ) (খ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন

‘যারা আল্লাহ তা‘আলার সীমারেখার ভিতরে এবং যারা সীমারেখা লংঘন করে তাদের দৃষ্টান্ত ঠিক এ রকম যে, কিছু লোক একটি জাহাজের যাত্রী। কিছু সংখ্যক উপর তলায় আর কিছু সংখ্যক নীচ তলায় আরোহণ করেছে। কিন্তু নীচের তলার যাত্রীদের পানির জন্য উপর তলায় যেতে হয়। তারা চিন্তা করল আমরা উপরে পানি আনার জন্য গেলে উপর তলার লোকজন বিরক্ত হয়, তাই আমরা যদি জাহাজ ফুটো করে আমাদের জন্য পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করি তাহলে ভালই হয়। এমতাবস্থায় যদি উপর তলার লোকজন নীচ তলার এই অবুঝ লোকদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাধা না দেয়, তাহলে জাহাজ ঢুবে গিয়ে উভয় তলার যাত্রীগণ প্রাণ হারাবেন নিঃসন্দেহে। আর যদি তারা বাধা প্রদান করে, তাহলে উভয় তলার যাত্রীরা বেঁচে যাবেন।’ [বুখারী : ২৩১৩] এমনিভাবে সমাজের ভাল লোকেরা যদি পাপাচারে লিপ্তদের পাপ কাজে বাধা না দেন, তাহলে এ পাপের কারণে যে দুর্যোগ নেমে তা থেকে কেউ রেহাই পাবে না। দ্বিতীয়ত : ব্যক্তির দায়িত্ব :=

মুসলমানের কর্তব্য, অতি তাড়াতাড়ি পাপ থেকে তওবা ও ইস্তেগফার করা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নিজের পাপের অংক নিজেই কষে দেখা। অনুরূপভাবে সৎকাজ বেশী-বেশী করা, যাতে সৎকাজগুলো পাপসমূহকে মিটিয়ে দেয়। উপরন্তু যেসব বিষয় মানুষকে পাপকাজে উদ্বুদ্ধ করে তা থেকে সর্বদা দূরত্ব বজায় রাখা। আমরা কিভাবে পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি ?

পাপকর্মের সাথে কমবেশী আমরা সবাই জড়িত। তবে পাপীদের মধ্যে তারাই উত্তম যারা তাওবা করে। আমাদের মধ্যে কেউ পাপকাজে জড়িয়ে পড়ল। আল্লাহ যা পছন্দ করেন না এমন কাজ করে বসল। একবারের পর আবার করল। অবচেতন নয় বরং সম্পূর্ণ চেতনা নিয়েই করল। তবে পরবর্তীতে সে অনুতপ্ত হল। মানসিকভাবে ব্যাথা অনুভব করল। মনে মনে নিয়ত করল, যদি কাজটা ছেড়ে দিতে পারি তাহলে আর কখনো করব না। কিন্তু কয়েকদিন পর আবার পদস্খলন ঘটল। সে পাপটি আবার করল। আবার অনেকেই এমন আছেন যারা পাপ করেন সংগোপনে আর মনে মনে বলেন, যদি এই সমস্যাটি না থাকত তাহলে পাপকাজ করতাম না। সমস্যাটি দূর হয়ে গেলে পাপ ছেড়ে ভাল হয়ে যাব। পাপ করে এ ধরনের মানসিক অবস্থায় যে পড়ে, তার মানবাত্মা জাগ্রত। সে আল্লাহর ইচ্ছায় একদিন পাপ থেকে বেরিয়ে আসবে, পাপাচারের অন্ধকার থেকে মুক্তি লাভ করতে সক্ষম হবে।

* পাপাচার থেকে মুক্তি লাভের মাধ্যম := (১) পাপকে বিপজ্জনক মনে করা ও ক্ষুদ্র হলেও, যে কোন পাপ পরিত্যাগে সচেষ্ট হওয়া :— ঈমানদার ব্যক্তির হৃদয় জুড়ে থাকে প্রতিপালকের ভয়, যার মহিমা-মাহাত্ম্য আলোড়িত করে রাখে তার অন্তর জগৎ সারাক্ষণ। প্রতিপালকের অবাধ্য হওয়া কখনোই শুভ মনে হয় না তার কাছে। পাপ তার কাছে ঘৃণ্য-প্রত্যাখ্যাত বস্তু। ঈমানের পরিধি-পর্যায় অনুযায়ী মুমিন ব্যক্তি আল্লাহকে মনে করে বড়ো, আর পাপকে মনে করে ঘৃণ্য অপরাধ। উদাহরণত: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঈমানদারদের গুণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন :— ‘তারা রাতের সামান্য অংশই অতিবাহিত করে নিদ্রায়। আর রাতের শেষ প্রহরে নিমগ্ন হয় ক্ষমা প্রার্থনায়।’( সূরা যারিয়াত ১৭-১৮) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন :— ‘যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক ! আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং, তুমি আমাদের পাপ ক্ষমা কর এবং আমাদের লেলিহান আগুনের আযাব হতে রক্ষা কর। তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, ব্যয়কারী, এবং শেষ রাতে ক্ষমাপ্রার্থী।’ [সূরা আলে ইমরান : ১৬ -১৭] আল্লাহভীতি ও নৈতিক দায়িত্ববোধের কারণেই উল্লিখিত মুমিনগণ শেষ রাতের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিভাবে মুমিনগণ পাপকে ভয়ের বস্তু মনে করে তার একটা দৃষ্টান্ত প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদের কথায় পাওয়া যায়। তিনি বলেন :— ‘পাপ, ঈমানদার ব্যক্তির কাছে এমন মনে হয়—যেন সে পাহাড়ের পাদদেশে বসে আছে। আর এ ভয়ে ভীত যে, পাহাড়টি পড়ে যাবে তার মাথায়। অপরপক্ষে, একজন দুষ্ট ব্যক্তি তার পাপকে দেখে মনে করে মাছি সম, যা তার নাগের ডগা স্পর্শ করে চলে গেছে। (বুখারী : ৬৩০৮) আনাস রা. বলেন :—

‘এমন অনেক কাজ তোমরা কর, যা তোমাদের নজরে চুলের চেয়েও সরু অথচ আমরা নবী কারীম সা. এর যুগে সেগুলোকে ধ্বংসাত্মক পাপ বলে জ্ঞান করতাম।’ (বুখারী : ৬৪৯২) (২) পাপ ছোট হলেও তা তুচ্ছ জ্ঞান করতে নেই :— রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন := ‘ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র গুনাহ থেকেও সাবধান হও। ক্ষুদ্র গুনাহে লিপ্ত হয়ে পড়ার দৃষ্টান্ত সেই পর্যটক দলের মতো যারা একটি উপত্যকায় অবতরণ করল। তাদের একজন একটি কাষ্ঠখন্ড নিয়ে এল। অপরজন আরেকটি। আর এভাবেই তাদের রুটি ছেঁকা সম্পন্ন হল। এবং ছোট গুনাহের কারণে যদি কাউকে পাকড়াও করা হয় তবে তা তার ধ্বংসের কারণ হবে। ( ’ আহমদ ) ইবনুল মু’তিয বলেছেন := ছেড়ে দাও পাপ ছোট বড় সব— এটাই পরহেযগারী। (৩) পাপ করে প্রকাশ না করা :— হাদীসে এসেছে—সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ রহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আবু হুরাইরাহ -কে বলতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন : ‘প্রকাশ্যে পাপকারীরা ব্যতীত আমার সকল উম্মত ক্ষমাপ্রাপ্ত। প্রকাশ্যে

পাপ করার মধ্যে এটাও যে, রাতে কোন ব্যক্তি খারাপ কাজ করল। আল্লাহ তার এ কাজটি গোপন রাখা সত্ত্বেও সে দিনের বেলায় বলে বেড়াল: শুনছেন ! আমি গত রাতে এই-এই করেছি। সে রাত কাটাল এ অবস্থায় যে, তার প্রতিপালক তার পাপ গোপন করে রাখলেন। আর তার সকাল হল এ অবস্থায় যে, আল্লাহ যা গোপন করলেন সে তা ফাঁস করে দিল।’ (বুখারী ৬০৬৯, মুসলিম-২৯৯০)

সুতরাং, কোন ব্যক্তি যদি পাপকার্য করে বসে তার উচিত হবে গোপন করে রাখা ; কেননা, আল্লাহ তা গোপন রেখেছেন। পাশাপাশি পাপের সাথে সম্পর্কচ্ছেদের জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করা। পাপের সম্পৃক্ততায় আসার পর কীভাবে তার প্রতিকার সম্ভব, এ ব্যাপারে প্রাজ্ঞ আলেমের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। তবে প্রশ্ন করার সময় গোপনীয়তা রক্ষার উদ্দেশে এভাবে বলতে হবে যে, যদি কোন ব্যক্তি এই ধরনের পাপ করে বসে তাহলে তার প্রতিকার কী ? ৪) অনতিবিলম্বে খাঁটি তওবা করা :— ইরশাদ হয়েছে :— ‘হে মুমিনগণ ! তোমরা সকলে আল্লাহর নিকট তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ (সূরা নূর : ৩১) যারা তওবা করে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের ভালবাসেন। তনি বলেন :—

‘নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন।’ [সূরা আল-বাকরা: ২২২] তওবার গুরুত্ব অনুধাবন করার জন্য উল্লিখিত কয়েকটি আয়াত যথেষ্ট। তওবা সম্পর্কিত সবগুলো আয়াত লেখার প্রয়োজন নেই। তওবাকারীর প্রতি আল্লাহ তা‘আলা কতটা খুশী হন, তা উল্লেখ করাও প্রাসঙ্গিক মনে করি। হাদীসে এসেছে :— আল্লাহ তার বান্দার তাওবায় ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা বেশী আনন্দিত হন, যে তার উট হারিয়ে ফেলেছে এক জনমানবশূন্য ভয়ংকর প্রান্তরে। উটের পিঠে ছিল খাদ্য ও পানীয়। এরপর সে ঘুমিয়ে পড়ল। জাগ্রত হয়ে সে আবার উটের খোঁজে বের হল। একসময় তার তেষ্টা পেল। সে মনে মনে বলল, যেখানে ছিলাম সেখানে ফিরে যাই। অতঃপর মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকি। মৃত্যু অবধারিত জেনে বাহুতে মাথা রেখে সে ঘুমিয়ে পড়ল। জাগ্রত হয়ে দেখতে পেল, হারিয়ে যাওয়া উট তার পাথেয়-খাদ্য-পানীয় নিয়ে তার সামনেই দাঁড়িয়ে। এই ব্যক্তি তার উট ও পাথেয় ফিরে পেয়ে যতদূর খুশি হয়েছে তার থেকেও অধিক খুশি হন আল্লাহ তা’আলা বান্দার তাওবায়।’ [বুখারী-৬৩০৮ ও মুসলিম-২৭৪৪] পাপ সংঘটিত হলে উচিত হল অনতিবিলম্বে তাওবা করা; কারণ হায়াত আল্লাহর হাতে। যে কোন মুহূর্তে মৃত্যুর কঠিন থাবা তার জীবনাবসান ঘটাতে পাওে অপরদিকে উলামায়ে কেরাম বলেছেন, ‘পাপ সংঘটিত হলে বিলম্ব না করে তওবা করা ফরজ বা অবশ্য পালনীয়। যে ব্যক্তি তাওবা করতে দেরী করে, সে আরেকটি পাপে জড়িয়ে পড়ে।’

তাওবা করতে হবে মনে-প্রাণে। এমন যেন না হয় যে, মুখে মুখে বললাম, ‘হে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা কর’ আর অন্তর থাকল গাফেল।

(৫) যতবার পাপ ততবার তওবা :— , রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন : =

‘এক বান্দা পাপ করে বলল, হে আমার প্রতিপালক ! আমি তো অপরাধ করে ফেলেছি, আমাকে ক্ষমা করুন। এ কথা শুনে প্রতিপালক বললেন, আমার বান্দা কি অবগত তার একজন প্রতিপালক আছে, যিনি অপরাধ ক্ষমা করেন এবং শাস্তি দেন ? আচ্ছা আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম। এরপর বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হলে সে আরেকটা পাপে জড়িয়ে পড়ল, এবং বলল, হে আমার প্রতিপালক ! আমার দ্বারা পুনরায় অপরাধ সংঘটিত হয়ে গিয়েছে, আমাকে ক্ষমা করুন। এ কথা শুনে প্রতিপালক বললেন, আমার বান্দা কি অবগত তার একজন প্রতিপালক আছেন, যিনি অপরাধ ক্ষমা করেন এবং শাস্তি দেন ? আচ্ছা, আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম। এরপর বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হলে আবার সে একটি পাপ করে বসল, ও বলল, হে আমার প্রতিপালক ! আমি তো অপরাধ করে ফেলেছি আমাকে ক্ষমা করুন। এ কথা শুনে প্রতিপালক বললেন, আমার বান্দা কি জানে তার একজন প্রতিপালক আছেন যিনি অপরাধ ক্ষমা করেন এবং শাস্তি দেন ? আচ্ছা আমি আমার বান্দাকে তিনবার ক্ষমা করলাম। এরপর যা ইচ্ছে সে করতে পারে। [বুখারী -৭৫০৭ও মুসলিম-২৭৫৮]

যে পাপে লিপ্ত হয়ে পড়েছে, সে যখন আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমার এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবে, তখন সে বলবে, আমি প্রথমবার অন্যায় করে ক্ষমা পেয়েছি। দ্বিতীয়বার অন্যায় করেও যখন ক্ষমা লাভ করেছি, তৃতীয়বার আমি আর অপরাধ করতে চাইনা। বরং এ ক্ষমা নিয়ে যেন আমার ইন্তেকাল হয়। রাসূলুল্লাহ সা.-এর এ হাদীস তাকে বার বার পাপ করার উৎসাহে বাধা প্রদান করবে। (৬) যে সকল বিষয় পাপের দিকে নিয়ে যায় তা বর্জন করা :—

পাপের পিছনে কিছু কারণ ও ভূমিকার উপস্থিতি অনিবার্য। যেগুলোর কারণে পাপের পথে চলা সহজতর হয়। পাপ সংঘঠিত হতে থাকে র্নিবিঘেœ। পাপী যখন পাপে সর্বশক্তি নিয়োগ করে পাপ থেকে প্রত্যাবর্তনের বোধশক্তি হারিয়ে ফেলে, লুপ্ত হয় তার সজ্ঞান চেতনা, তখন তার সংশোধনের সকল পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এ কথাটি অনুধাবন করেছিলেন সেই আলেম, যিনি একশ মানুষের খুনী ব্যক্তির ব্যাপারে ফতোয়া দিয়েছিলেন। হাদীসে এসেছে

আবু সায়ীদ খুদরী রহ. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সা. বলেন :— তোমাদের পুর্ববর্তী যুগে এক ব্যক্তি নিরানব্বই জন মানুষকে হত্যা করল। এরপর সে তার পাপের পরিণাম জানার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আলেমের কথা জিজ্ঞেস করল। লোকেরা তাকে একজন সংসার-বিরাগী পাদ্রীর সন্ধান দিল। সে তার কাছে গিয়ে বলল, আমি নিরানব্বই জন মানুষকে হত্যা করেছি। এখন তওবার কোন সুযোগ আছে কি? পাদ্রী বলল, না, নেই। এতে লোকটি ক্ষিপ্ত হয়ে সেই পাদ্রীকে হত্যা করে একশ পূর্ণ করল। এরপর সে আবার একজন আলেমের সন্ধান করল তার পাপের

পরিণাম জিজ্ঞেস করার জন্য। লোকজন তাকে একজন আলেমের সন্ধান দিলে সে তার কাছে গিয়ে বলল, আমি একশজন মানুষ হত্যা করেছি। এর থেকে তাওবার কোন সুযোগ আছে কি না ? আলেম বললেন, হ্যাঁ, তাওবার সুযোগ আছে। তোমার ও তাওবার মধ্যে প্রতিবন্ধক কোন কিছু থাকতে পারে না। তুমি অমুক স্থানে চলে যাও। সেখানে কিছুলোক আল্লাহর ইবাদত করছে। তুমিও তাদের সাথে ইবাদত কর এবং তোমার দেশে ফিরে যেও না। কারণ, তা খারাপ স্থান। লোকটি নির্দেশিত স্থানে গমনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করল। মাঝ পথে তার মৃত্যু ঘনিয়ে এলে তার প্রাণ গ্রহণের জন্য রহমতের ফেরেশ্তা ও শাস্তির ফেরেশ্তাদের মধ্যে ঝগড়া বেঁধে গেল। রহমতের ফেরেশ্তারা বলল, লোকটি মনে-প্রাণে তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে এসেছে। তাই, আমরা তার আত্মা গ্রহণ করব। শাস্তির ফেরেশ্তাদের অভিমত ছিল, লোকটি কখনো ভাল কাজ করেনি। সে পাপী। তাই আমরা তাকে গ্রহণ করব। তখন মানুষের রূপ ধারণ করে একজন ফেরেশ্তা এসে তাদের বিতর্কের সমাধান বাতলে দিয়ে বলল, তোমরা তার উভয় পথ—যে পথ সে অতিক্রম করে এসেছে, ও যে পথ তার সম্মুখে রয়েছে—মেপে দেখ। উভয়ের মধ্যে যা নিটকতম, সে অনুযায়ী তার ফয়সালা হবে। মাপ দেয়া হল। দেখা গেল, সে তার গন্তব্যের দিকেই অধিক এগিয়ে আছে। অতঃপর রহমতের ফেরেশতারাই তার প্রাণ গ্রহণ করল এবং। [বুখারী ও মুসলিম] সে হিসেবে আমাদের কর্তব্য, যে সাহচর্য পাপের পথে নিয়ে যায়, যেসব দেখা-সাক্ষাত পাপের দুয়ার খুলে দেয়, যে সকল দর্শন ও শ্রবণ পাপপ্রবৃক্তিকে সুড়সুড়ি দেয়, তা পরিহার করে চলা। অনুরূপ যদি বাজারে গমন, টেলিভিশন দেখা, পত্রিকা পড়া ইত্যাদি পাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তবে এগুলোও পরিহার করে চলতে হবে অথবা নিয়ন্ত্রিত করতে হবে এ জাতীয় সম্পৃক্ততা * (৭) সর্বদা আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করা:— আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার নিকট ইস্তেগফার বা ক্ষমাপ্রার্থনার জন্য মানুষকে উৎসাহ ও নির্দেশ দিয়েছেন। অনুরূপ, নবীগণও মানুষকে ইস্তেগফারের নির্দেশনা দিয়েছেন, উদ্দীপিত করেছেন বিপুলভাবে। নূহ আ.-এর ইস্তেগফারের আলোচনা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। নূহ আ. বলতেন :—

‘হে আমার প্রতিপালক ! তুমি ক্ষমা কর আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং যারা ঈমানদার হয়ে আমার ঘরে প্রবেশ করেছে, তাদেরকে এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে ; আর যালিমদের বেলায় বৃদ্ধি কর ধ্বংস ও বিলোপ।’ (সূরা নূহ ২৮) এ ইস্তেগফারের কথা আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন এভাবে:— * ‘এ তো শুধু তোমার পরীক্ষা, যা দ্বারা তুমি যাকে ইচ্ছা বিপথগামী কর আর যাকে ইচ্ছা দান কর হেদায়েতের আলো। তুমিই তো আমাদের অভিভাবক; সুতরাং, আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি দয়া কর আর ক্ষমাশীলদের মধ্যে তুমিই' শ্রেষ্ঠ [সূরা আল আ’রাফ ১৫৫) ইব্রাহীম আ. এর ক্ষমা ও ইস্তেগফারের আলোচনা উল্লেখ করে কোরআনে এসেছে :— ‘হে আমার প্রতিপালক ! যে দিন হিসাব অনুষ্ঠিত হবে সে দিন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং মুমিনগণকে ক্ষমা করে দিও। (সূরা ইবরাহীম ৪১) পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ার সাথে সাথে ইস্তেগফার করা যায়। রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন :—

মুমিন ব্যক্তি যখন কোন পাপ কাজে লিপ্ত হয়, তখন তার হৃদয়ে একটি কালো দাগ পড়ে। যখন সে তওবা করে, ফিরে আসে, এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করে, তখন তার অন্তরাত্মা পরিস্কার হয়ে যায়, মুছে যায় সে কালো দাগের স্মৃতি। পাপ বেড়ে গেলে অন্তরের কাল দাগও বেড়ে যায়। পরিণতিতে তার হৃদয় ঢেকে যায় প্রবল অন্ধকারাচ্ছন্নতায়। এটা সেই মর্চে, যার কথা আল্লাহ পবিত্র কুরআনে এভাবে বলেছেন, ‘কখনও নয়; বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের অন্তরে মর্চে ধরিয়েছে।(’ তিরমিযী : ৩৩৩৪) ([সূরা মুতাফফিফীন ১৪) ইস্তেগফার ইবাদতের একটি মহোত্তম অংশ। তাই সালাত আদায়ের পর ইস্তেগফার করতে বলা হয়েছে। হাদীসে এসেছে :— ছাওবান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সা. যখন সালাত শেষ করতেন তিন বার আস্তাগফিরুল্লাহ (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি বলতেন :( মুসলিম-৫৯১ ) পবিত্র হজ আদায়কালে ইস্তেগফার করার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন :— ‘অতঃপর লোকেরা যেখান হতে প্রত্যাবর্তন করে, তোমরাও সেখান হতে প্রত্যাবর্তন করবে। আর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে, বস্তুত আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ [সূরা বাকারা : ১৯৯]

ইসলামী শরীয়তে যে সকল যিকির-আযকারের প্রমাণ মিলে, সালাতের বইরে কিংবা ভিতরে ; তার মধ্যে ইস্তেগফার একটি গুরুত্বপূর্ণ যিকির। হাদীসে এসেছে : নবী কারীম সা. রুকু ও সিজদাতে বেশী করে বলতেন, হে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ ! তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করছি তোমার প্রসংশা করছি, হে আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা কর। (বুখারী : ৮১৭ও মুসলিম-৪৮৪) আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. সিজদাবস্থায় বলতেন: ‘হে আল্লাহ! আমার সকল পাপ; ছোট ও বড়, সূচনা ও সমাপ্তি, প্রকাশ্য ও গোপন—ক্ষমা করে দাও। মুসলিম-৪৮৩ ) * সালাতের বাইরে দিবা-রাত্রির যিকিরের মধ্যেও ইস্তেগফার রয়েছে। হাদীসে এসেছে— )

সাদ্দাদ বিন আউস রা. নবী কারীম সা. থেকে বর্ণনা করেন, ‘শ্রেষ্ঠ ইস্তেগফার (ক্ষমা প্রার্থনার বাক্য) হল, তুমি এভাবে বলবে, হে আল্লাহ ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা’বুদ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আর আমি তোমার বান্দা। তোমার সাথে কৃত ওয়াদা ও প্রতিশ্র“তির উপর আমি আমার সাধ্যমত অটল রয়েছি। আমি যা কিছু করেছি তার অপকারিতা হতে তোমার আশ্রয় নিচ্ছি। আমার প্রতি তোমার যে নিআ’মত তা স্বীকার করছি। আর স্বীকার করছি তোমার কাছে আমার অপরাধ। তুমি আমাকে ক্ষমা কর। তুমি ছাড়া আর কেউ ক্ষমা করতে পারে না।' যে ব্যক্তি সকালে দৃঢ় বিশ্বাসে এটা পাঠ করবে, সে যদি ঐ দিনে সন্ধ্যার পূর্বে মৃত্যুবরণ করে তাহলে সে জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভূক্ত হবে। আর যদি দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে সন্ধ্যায় পাঠ করে, আর সকাল হওয়ার পূর্বে সে ইন্তেকাল করে, তাহলে সে জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভূক্ত হবে।( বুখারী -৫৮৩ ) * রাসূলে কারীম সা. বেশি-বেশি ইস্তেগফার করতেন। আবু হুরাইরা রা বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন: ‘আল্লাহ তা‘আলার শপথ ! আমি দিনে সত্তর বারের বেশী আল্লাহর নিকট তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করি।’ [বুখারী-)

ইবনে উমর রা. বলেন, একদিন এক মজলিসে আমরা গণনা করলাম যে, রাসূলুল্লাহ সা. একশত বার বলেছেন, হে আমার প্রতিপালক আমাকে ক্ষমা করুন। আমার তাওবা কবুল করুন। আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমাশীল ও দয়াময়।( আবু দাউদ-১৫১৬ )

(৮) পাপের পর সৎ-কর্ম করা যাতে সৎ-কর্ম পাপকে মিটিয়ে দেয়: হাদীসে এসেছে—আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. থেকে বর্ণিত, জনৈক পুরুষ অবৈধভাবে এক মহিলাকে চুমো দিল। সে নবী কারীম সা. এর কাছে পাপের কথা স্বীকার করল। পরক্ষনে আল্লাহ তার বাণী নাযিল করলেন : ‘তুমি সালাত কায়েম কর দিবসের দু’ প্রান্তভাগে ও রজনীর প্রথমাংশে। সৎকর্ম অবশ্যই পাপকর্ম মিটিয়ে দেয়।’ এ কথা শুনে লোকটি বলল, হে রাসূল ! এ সুসংবাদ কি আমার জন্য ? রাসূলুল্লাহ সা. বললেন : ‘আমার উম্মতের সকলের জন্য।’ বুখারী- ও মুসলিম

অনুরূপভাবের আরো অনেক হাদীস রয়েছে, যা প্রমাণ করে নেক-আমল (সৎকর্ম) পাপসমূহকে মুছে দেয়। হাদীসে এসেছে :—

আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেন : ‘মুসলিম বা মুমিন বান্দা যখন অজু করে, অত:পর মুখমন্ডল ধোয়, পানির সাথে অথবা পানির শেষ ফোটার সাথে তার চেহারা থেকে ঐসব পাপ বের হয়ে যায় যা সে চক্ষু দিয়ে দেখেছে। সে যখন হাত ধোয়, পানির সাথে অথবা পানির শেষ ফোটার সাথে তার দু’হাত হতে এমনসব পাপ বের হয়ে যায়, যা সে হাত দ্বারা করেছে। এরপর সে যখন দু’-পা ধৌত করে, তখন পানির সাথে বা পানির শেষ ফোটার সাথে তার পা থেকে এমন সব পাপ বের হয়ে যায়, যা সে পায়ে হেঁটে গিয়ে করেছে। ’ [মুসলিম-২৪৪] এ হাদীস দ্বারা বুঝা গেল অজু পাপসমূহকে মিটিয়ে দেয়। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের মতোই যার ব্যাপারে হাদীসে বক্তব্য এসেছে

আবু হুরাইরা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলছেন : ‘তোমাদের কি মনে হয়, যদি তোমাদের কারো বাড়ীর সম্মুখে একটি প্রবাহমান নদী থাকে আর তাতে সে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে তাহলে কি তার শরীরে কোন ময়লা থাকবে ? সাহাবীগন বললেন, না, থাকবে না। রাসূল সা. বললেন : ‘পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের এটাই উদাহরণ, যার মাধ্যমে পাপসমূহ আল্লাহ তা‘আলা দূর করে দেন। (বুখারী-৫২৮ ও মুসলিম ৬৬৭ ) ৯) তাওহীদ বা আল্লাহর একাত্ববাদের যথার্থ বাস্তবায়ন :—

আবু যর রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন,‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন : ‘সৎকাজ সম্পাদনকারী ব্যক্তিকে দেই দশগুণ বা তার থেকেও বেশী ছোয়াব। আর অন্যায়কারীকে দিই তার পাপের সমপরিমাণ শাস্তি, অথবা ক্ষমা করে দেই। যে ব্যক্তি আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে একহাত অগ্রসর হই। যে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয় আমি তার দিকে এক কায়া পরিমান এগিয়ে যাই। যে আমার দিকে হেঁটে আসে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই। আর যদি কোন ব্যক্তি শিরক না করে পৃথিবীভরা পাপ নিয়েও আমার সাক্ষাতে আসে, তাহলে আমি সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তাকে গ্রহণ করি। [মুসলিম : ২৬৮৭]

তাওহীদ বাস্তবায়ন মুসলিম ব্যক্তির আচার-আচরণ পরিশুদ্ধ করে। মানুষকে পাপাচার পরিহার করতে উদ্বুদ্ধ করে। আল্লাহকে এক বলে জানা, তাঁকে ভালবাসা, আল্লাহ কেন্দ্রিক বন্ধুত্ব ও শক্রতার সম্পর্ক গড়ে তোলা, সকল কাজে তাওহীদের শিক্ষা-অনুভূতি জাগ্রত রাখা পাপাচার থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে সন্দেহাতীতভাবে। যে ব্যক্তির তাওহীদী চেতনা দুর্বল-ম্রিয়মান, জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাকা তাঁর পক্ষে দুষ্কর হবে বৈকি। যার তাওহীদী চেতনা সদা-জাগ্রত জাহান্নামের আগুন তাকে স্পর্শ করার অজুহাত খুঁজে পাবে না। তাই, তাওহীদের ভাব-চেতনা-ধারণা সচল ও জাগ্রত রাখা ভিন্ন আমাদের গত্যন্তর নেই। (১০) সৎলোকের সাহচর্য অবলম্বন করা :—

সৎমানুষের সাহচর্য পাপ থেকে দূরে থাকার বড় একটি মাধ্যম। কিন্তু সমস্যা হল, পাপী ব্যক্তি নিজেকে সৎ মানুষের সংস্পর্শে যাওয়ার উপযোগী মনে করে না। সে ভাবে, আমার মতো একজন পাপীর পক্ষে সৎমানুষের সঙ্গ লাভ কি করে সম্ভব ? আসলে এ ধরনের দৃষ্টিভংগী এক ধরনের মানসিক সমস্যা, যা সৃষ্টি হয়েছে পাপের আধিক্যের কারণে ও শয়তানের কু-মন্ত্রণায়। এক ধরনের নৈরাশ্যও অবশ্য এর পেছনে কার্যকর, তা স্বীকার করে নিতে হবে কোন বাধা নেই। এ প্রকৃতির মানসিক ব্যধির চিকিৎসা করা জরুরি। নিজেকেই নিজের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় ভেবে দেখা যেতে পারে। প্রথমত : সৎলোকের সঙ্গ লাভের চেষ্টা করা একটি ভাল কাজ, আল্লাহর একটি ইবাদত। রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন :— যেদিন আল্লাহ তা‘আলার ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তার ছায়াতলে স্থান দিবেন। এক. সুবিচারক ইমাম শাসক দুই. আল্লাহর ইবাদতে যে যুবক মগ্ন থেকেছে। তিন. যে ব্যক্তির অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকত। চার. যে দুজন লোক একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে একে অপরকে ভালবাসে এবং আল্লাহর জন্য একত্র হয় ও আল্লাহর জন্য বিচ্ছিন্ন হয় পাঁচ. যাকে কোন সুন্দরী ও সম্ভ্রান্ত নারী ব
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×