somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঙালির আবেগ-অনুভূতি

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আরসা নামের এক আরাকানি সশস্ত্র সংগঠন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করে। প্রতিক্রিয়ায় সে দেশের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালায়। দেশান্তরি হয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা। বাংলাদেশের মানুষ নিজেরা না খেয়ে, না পরে হলেও ওদের পাশে থাকবে মর্মে শপথ নেয়। ঘটনার কিছুকাল পর আর এই দরদ থাকেনি। কেন থাকেনি, সে কথা বলাই বাহুল্য।

চিনের মুসলিম অধ্যুষিত হুয়েই প্রদেশে চিনা সেনাবাহিনী হামলা করেছে; এমন নজির নেই। তবে শিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলমানদের ওপর দমনপীড়ন চালিয়ে যাওয়ার খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে আসে। তবে অতি জাতীয়তাবাদের জোশে কাশ্মীরের মুসলমানদের ওপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর আক্রমণের খবরে ওই ঘটনা চাপা পড়ে যায়। কেউ জিগ্যেস করে না হুয়েই প্রদেশে দমনপীড়ন হয় না অথচ শিনজিয়াং প্রদেশে কেন হয়?

ফিলিস্তিনের দুটো অংশ। পশ্চিমতীর আর গাজা। পশ্চিমতীর পিএলও'র নিয়ন্ত্রণে। আর গাজা হামাসের। যদিও জানা যায় পিএলও'র বিপরীতে ইসরায়েলই হামাস গঠনে পৃষ্ঠপোষকতা দান করে। যাহোক, পশ্চিমতীরে ইসরায়েল হামলা করে; এমন কমই শোনা যায়। অথচ যত গণ্ডগোল সব গাজায়।

সম্প্রতি ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায়। এ হামলায় রেকর্ডসংখ্যক লোক মারা যায়। ইসরায়েলের ৭৫ বছরের ইতিহাসে ফিলিস্তিনি হামলায় এত লোক মারা যায়নি। এঘটনায় অনেক মানুষ খুশি হয়েছে। তারা বোধহয় ভুলে গিয়েছে ইসরায়েল ছাড় দেওয়ার পাত্র না। যারা ইসরায়েলি হত্যায় খুশি হয়েছিল, তারা এখন গাজায় হামলায় শোকাহত।

গাজার অবস্থা ভয়াবহ। খাদ্য সরবরাহ বন্ধ। এখন বিদ্যুৎও নেই। রেডক্রস বলছে, গাজার হাসপাতালগুলো এখন মর্গে পরিণত হচ্ছে। হামাস ইসরায়েলে গিয়ে সেনাসদস্যসহ বেসামরিক লোকজন ধরে এনেছে; এ ঘটনায় খুশি হওয়া লোকজন এখন হা-হুতাশ করছে যখন দেখছে গাজায় বাছ-বিচারহীনভাবে হামলা চলছে। এই যে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালাল, ওরা কি বুঝতে পারল না ইসরায়েল নির্মম প্রতিশোধ নেবে? ওরা এমনিতেই খৃষ্টান-মুসলমানদের নিগ্রহের শিকার, সুযোগ পেয়ে আক্রমণ করা ছাড়বে কেন?

পৃথিবীটা একসময় জোর যার মুল্লুক তার নীতিতে চলত। ফরাসিরা, বৃটিশরা, পর্তুগিজরা, আরবরা একসময় দেশ দখল করত না? যদিও পরে অনেক অঞ্চল ছাড়তে হয়েছে। ইহুদিরা যে দেশ পেয়েছে, এর সর্বশেষ মালিকানা ফিলিস্তিনিদের হলেও দখল ছিল বৃটিশদের। তারা এ অংশটা ইহুদিদের দেয়। অটোমান সাম্রাজ্য কি শেষ পর্যন্ত টিকেছিল? অল্প একটা অংশ নিয়ে তুরস্ক টিকে থাকে। ফিলিস্তিনও তেমনই পরিস্থিতির স্বীকার। যতই বলা হোক সবটুকু ভূমি ফিলিস্তিনের, মুসলমানরা যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ দখল করেছে, সেসবও নিশ্চয়ই ওখানকার আদিবাসীদের? আমেরিকানরাও তো বহিরাগত। ওরা তো রেড ইন্ডিয়ানদের হত্যা করে বসতি গড়েছে। এখন কি কেউ বলে স্থানীয় আদিবাসীদের ভূমি ফেরত দেওয়া হোক?

কোনো দেশে যুদ্ধ লাগলে এ দেশের অনেকেই বাহবা দেয়। রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে যেমন দিল। ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতেও উসকায়। বুঝতে পারে না যুদ্ধ কী ভয়াবহ। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধেও উসকানি আছে। যুদ্ধ কী জিনিস; এটা তারা বুঝতে পারে না।

ভারত ইসরায়েলে থাকা তাদের ১৮ হাজার নাগরিককে ফিরিয়ে আনছে। আমেরিকা, ফ্রান্স তাদের নাগরিকদের নিয়ে চিন্তিত অথচ আমাদের দেশের উসকানিদাতারা ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তার কথা ভাবে না। ইসরায়েল তাদের জিম্মি নাগরিকদের বাঁচাতে চেষ্টা চালাচ্ছে। বলছে, তাদের ফেরত দিলে গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করবে। এমন উদ্যোগ কি কোনো মুসলমান রাষ্ট্র মুসলমানের জন্য নেয়?

ইরান-রাশিয়া-চিন-তুরস্ক যতই হুঁশিয়ারি দিক, লেবানন, সিরিয়া যতই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মারুক, তারা কি অতটা সহায়ক হবে মার্কিনিরা-বৃটিশরা যতটা সহায়তা করছে? হামাস ইসরায়েলে হামলা করায় ফিলিস্তিনের ক্ষতিই হয়েছে। ভোগান্তির শিকার ফিলিস্তিনিরাই, হামাস নয়। এ সংকটের সমাধান কোথায়? সবল দুর্বলের ওপর হামলা চালায়। ওদের উসকে দিয়ে আখেরে আরও ক্ষতি হচ্ছে। আমরা এই কাজটাই ভালো পারি।

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:২৪
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×