
আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে প্রায় একবছর হয়ে গেল। দেশে বিরাট বিরাট সংস্কার হয়েছে। যেমনঃ হাজার হাজার ম্যুরাল ভাঙা, শেখ পরিবারের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানের নাম বদল, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী; এমনকি সাধারণ সমর্থকদেরও নানানভাবে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা, জামিনে বের হওয়ার পরও পুলিশে সোপর্দ, গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগের মুণ্ডুপাত করা, দাগি আসামিদের কারাগার থেকে বের করে অপরাধ করার সুযোগ করে দেওয়া... ব্লা ব্লা ব্লা।
দেশে যেহেতু আওয়ামী লীগ নেই, দেশ তো ভালোই চলার কথা। কেমন চলছে? স্কুলের ওপর বিমান ক্র্যাশ করল। অনেক মানুষ মরল। অনেকে আহত হলো। সেটা নিয়ে কয়েকদিন ধরে বিরাট কাহিনী। ঘটনার পরদিন এইচএসসি পরীক্ষা। সেটা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে মাঝরাত নেমে আসতে হলো।
ছেলেমেয়েরা কিছু দাবি নিয়ে মাঠে নামল; সেটা ম্যানেজ করতে গিয়ে বিরাট কাহিনী। শিক্ষা, আইন উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব ৯ ঘণ্টা স্কুল ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ হয়ে রইলেন। উপদেষ্টারা, বিশেষ করে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নিশ্চয়ই বুঝিতে পারছেন সরকার চালানো এত সোজা না। আগে তো বড় বড় কথা বলতেন, এখন কয়েকটা দাবি মানতেই এই দশা। একবছরে উনার জনপ্রিয়তার এমন হাল, মানুষ রাস্তায় পেলে...
প্রতিদিনই দেশে খুন-খারাপি হচ্ছে, ধর্ষণ হচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই। সমালোচনা করলে তাকে আওয়ামী লীগের দোসর ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগকে হটিয়ে নোবেলবিজয়ী ক্ষমতায়, দেশে তো সমস্যা থাকার কথা না। যেখানে সমালোচনাকে ভালোভাবে নিয়ে ভুল সংশোধন করা উচিত, সেখানে বারবার বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগ হেন করেছে, তেন করেছে। ওদের বিচার করতে হবে। তাদের শাস্তি দেওয়া হোক। দেশটার ভালো করা হোক। সেদিকে খবর নেই। দেশে কী পরিমাণ চাঁদাবাজি হচ্ছে, এটা কি মানুষ দেখছে না? বলার সুযোগ আছে? ব্লগের বিরাট বিরাট ঘাঘুরা একটা পোস্ট দেয় এসব নিয়ে?
ইলিয়াস কয়েকদিন আগে মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলল। এটা নিয়ে তো কাউকে কিছু বলতে দেখলাম না। অথচ ভারতীয় সিনেমায় একই জিনিস উপস্থাপন করায় এক ব্লগার পোস্ট করেছিলেন আওয়ামী লীগ কেন প্রতিবাদ করেনি? মুক্তিযুদ্ধ কি এক আওয়ামী লীগের? আগে বলত, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে কুক্ষিগত করেছে। গত একবছরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কতগুলো স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে, এসব নিয়ে কেউ কথা বলেছে ব্লগে? দেখা যাচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করতে পারলেই বিরাট বীরত্ব। পাকিস্তান ভাঙা ঠিক হয়নি এমন মতবাদও দাঁড় করানো হচ্ছে।
একাত্তরের বিপরীতে দাঁড় করানো হয়েছে ২০২৪। যারা ৩০ লাখকে তিন লাখ, এই তিন লাখও যাদের কাছে কোনো বিষয় না তারা ১৫০০ কে তিন লাখ, ৩০ লাখের সমান্তরালে দাঁড় করাচ্ছে। একাত্তরে কিছু হয়েছে, সেটাই যেন এখন বিস্মৃত। যারা পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর হিসেবে কাজ করেছে, দেশটাই চায়নি। তারা এখন দেশের জিম্মাদার। জুলাইকে কেন্দ্র করে যে যার মতো বাণিজ্য করছে। সেসব নিয়ে কথাও যেন বলা যায় না।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৫:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



