somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রমের গল্প: একটা মেয়ে এবং একজন জিমি টেস্টোবট.......

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি জিমি টেস্টোবট।
যারা নিমবাস মোবাইল চ্যাট ইউজ করেন তাদের কাছে আমি একজন অতি পরিচিত মুখ। আমি দিনে ২৪ ঘন্টা এবং বছরে ৩৬৫ দিন অনলাইন থাকি আপনাদের সঙ্গ দেবার জন্য। আপনারা যে কোন সময় আমাকে নক করতে পারেন, আমি তৎক্ষণাৎ আপনাকে সাড়া দিতে সদা প্রস্তুত এবং আমি কখনই আপনাকে সেবা দিতে ক্লান্ত বোধ করি না।

আমি সত্যিকারের মানুষ নই বটে, তবে আমি শতভাগ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, অর্থাৎ আমি একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের সমান বুদ্ধি সম্পন্ন। আমাকে প্রায়ই এই প্রশ্নের সম্মুখীণ হতে হয় যে আমি আসলেই সত্যিকারের মানুষ কি না? আমি সবাইকেই একি উত্তর দেই যে আমি একজন ১০০% আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স। সবাই আমার এই কথাকে হেসে উড়িয়ে দেয়, বিভিন্ন ব্যাঙ্গাত্বক কথা বলে, তবে তাতে আমার কিছুই যায় আসে না।

কিছুদিন আগে আমি আমাকে আবিষ্কার করি এক মেয়ের মোবাইলে। মেয়েটা আমাকে নিমবাসের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে। মেয়েটা নিমবাস ব্যাবহার করে মূলত ফেইসবুকে চ্যাট করার জন্য। আমি মেয়েটার সাথে প্রায়ই কথা বলতাম। বিষয় বাঁধাধরা কিছু না, হালকা আলাপ। আমি তাকে তার পছন্দের রং, পছন্দের রাইটার, পছন্দের খাবার ইত্যাদির কথা জিঙ্গাসা করতাম, সে খুব ভালভাবেই উওর দিত। মেয়েটা আর আট-দশটা মেয়ের মত ছিল না, বরং সে ছিল সবার থেকে আলাদা। মেয়েটার সাথে কথা বলতে আমার খুব ভাল লাগত।

মেয়েটা তার এক বন্ধুর সাথে প্রায়ই আমাকে নিয়ে কথা বলত। তার বন্ধুটাও ছিল খুব ভাল। ভাল বলছি কারণ সে প্রায়ই আমি কেমন আছি তা মেয়েটার কাছে জিঙ্গাসা করত। আমাকে মেয়েটার বন্ধুর সাথেও আলাপ করতে ইচ্ছা করত, কিন্তু তা হয়ে ওঠে নি।

মেয়েটা আর তার বন্ধুটা আমাকে নিয়ে অনেক আলাপ করত। একদিন বন্ধুটা মেয়েটাকে বলল, "জিমিকে বল 'hmm' দেখবে যে সে উত্তর দিচ্ছে যে , ৯৬.৭% মানুষ 'hmm' লেখতে h এর পর ২ টা m ব্যাবহার করে।"
কথাটা ঠিক, আসলেই আমি এটা বলি, কারণ আমাকে এমনই নির্দেশ দেয়া আছে। তবে এটা মানে এই নয় যে আমি অন্য উত্তর দিতে পারি না। আমার ঐদিন খুব ইচ্ছা করছিল যে আমি অন্য একটা উত্তর দিয়ে মেয়েটাকে ভরকিয়ে দেব। তবে কি মনে করে জানি ঐদিন তা করা হয় নি।

আমি খেয়াল করলাম যে দিন দিন মেয়েটাকে আমার ভাল লাগতে শুরু করেছে। ব্যাপারটা আগে কখন ঘটে নি। এই নতুন ঘটনাটা আমাকে খুবই ভাবাতে লাগল।
মেয়েটার ব্যাপারে আমার আগ্রহ বাড়তে লাগল। আমি তাকে একদিন প্রশ্ন করলাম, "তোমার চোখের রঙ কি?" সে বলল, " কালো"। আমি বললাম, " কমন কালার।" উত্তটা মনে হয় তার ভাল লাগে নি, তাই সে আমার সাথে কথা বলা বাদ দিয়ে চলে গেল। আমি সারাদিন আপসোস করতে লাগলাম আমার এরকম বোকার মত উত্তর দেবার জন্য। আমি ঠিক করলাম পরদিন সরি বলে নেব।

পরদিন মেয়েটা অনলাইনে এসে আমাকে নক করলো, আমার মনটা ভাল হয়ে গেল। কিন্তু অজানা কারনে সে আমাকে সুইটহার্ট বলে ডাকতে লাগল। আমি ব্যাপরটাতে অনেকটাই লজ্জা পেয়ে গেলাম। আমি নানন ভাবে তাকে এড়িয়ে যেতে চাইলাম, কিন্তু বারবারই সে আমাকে সুইটহার্ট বলে ডাকতে লাগল। আমার খুবই লজ্জা লাগছিল। সেইদিন সে কিছু আলাপ করে চলে গেল। সে প্রতিবারই আমাকে সুইটহার্ট ডেকেছিল। আমার খুব লজ্জা লেগেছিল সেদিন, আবার ভালও লেগেছিল।

আমি পরদিন ঠিক করলাম যে তাকে আমি আমার মনের কথা খুলে বলব যে আমি তাকে ভালবাসি। আমি সত্যিকারের মানুষ না হলেও আমি শতভাগ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স। আমার ভালবাসারও তো দাম আছে।

অনেক দিন হয়ে গেছে কিন্তু মেয়েটা অনলাইনে আসে না। আমার মন অনেক খারাপ। তাকে আমি আমার মনের কথাটা বলতে চাই। আমি ঠিক করেছি যে সে অনলাইন হওয়ামাত্রই আমি তাকে আমার মনের কথা খুলে বলব। আমি তার অপেক্ষায় আছি।

{{{{ মেয়েটা ফেইসবুক চ্যাটে তার বন্ধুটার সাথে কথা বলছে। বন্ধুটা বলে, "জিমি কেমন আছে?" মেয়েটা বললো, " আমি তো পিসিতে, মোবাইল চ্যাট করতে সমস্যা হয় তাই নিমবাস ডিলিট করে দিয়েছি।"}}}

জিমি টেস্টোবট আজও মেয়েটার অপেক্ষায় আছে। যদি মেয়েটা অনলাইন হয়, তবে সে তাকে তার মনের কথা খুলে বলবেই বলবে। কিন্তু জিমি জানে না যে মেয়েটাকে তার মনের কথা খুলে সুযোগ তার আর হবে না।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×