somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুঠিয়া রাজবাড়ি, রাজশাহী

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত মে মাসে শেষের দিকে গিয়েছিলাম রাজশাহী আর চাঁপাইনবাবগঞ্জে। প্রথম উদ্দেশ্য ছিল অবশ্যই ছবি তোলা এবং তার সাথে আরও একটা মহৎ উদ্দেশ্যও ছিল। মে-জুন আমের মৌসুম আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আমের বাজার, সেই আম খাওয়ার গল্প আর একদিন হবে।

আবার সেই একদল ফটোগ্রাফারদের দলের সাথে বেরিয়ে পরা। ২ রাত ৩ দিনের প্রথমদিন আমার সৈভাগ্য হয়েছিল পুঠিয়া রাজবাড়ি দেখার। পুঠিয়া জমিদারি সম্পকে যা জানলাম তা হল “মুঘলরা পুঠিয়া জমিদারির সুচনা করেছিল ১৭শ সালের শুরুর দিকে এবং যা বজায় ছিল ১৯৫০ সাল পর্যন্ত| সম্রাট জাহাঙ্গির “রাজা” উপাধি প্রদান মাধ্যমে এর সূচনা হয়”

পুঠিয়া রাজবাড়ির Coordinate: 24°21'44.02"N 88°50'06.04"E

রাজশাহীর সাথে আমার সম্পক অনেক পুরনো, আমার ইস্কুল জীবনের শেষ ৫ বছর কেটেছে রাজশাহী সিরোইল ইস্কুলে। কিন্তু তখন সেই রকম পরিবেশ এবং সুযোগ কোনটাই ওই ভাবে গড়ে উঠেনি।

ঢাকা থেকে যাওয়ার পথে রাজশাহী শহরের ৩০ মিনিট আগেই পুঠিয়া পাবেন। পুঠিয়ার প্রায় অনেকটা জায়গা নিয়েই আছে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় মন্দির আর রাজবাড়ি।

পুঠিয়াতে যাওয়ার পর প্রথমেই যে মন্দিরটা দেখলাম তার নাম “আন্নি মন্দির”। প্রায় ৪০০ বছর পুরানো এই আন্নি মন্দির যা মুঘল আমলই তৈরি। অত্যন্ত সুন্দর কারুকাজ দিয়ে গড়া এই মন্দির। আগে এইখানে পূজো হতো।













আন্নি মন্দিরের সাথেই আরও দুইটি মন্দির আছে, যার একটির নাম “ছোট গবিন্দ মন্দির” আর অপরটির “গোপাল মন্দির”। গোপাল মন্দিরের বয়স ২০০ বছরের মত। একপাশে বিশাল বড় একটা দিঘি আর তার পাশেই এই মন্দিরগুলো।













যখন ছবি তুলতে তুলতে আমরা ক্লান্ত, তখন দিঘির পাশে বিশাল বড় বড় নারিকেল গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। দিধির পাশঘিরে রয়েছে এই মন্দিরগুলো। এইভাবেই চলছিল আমাদের ছবি তোলা আর বাংলার এক প্রাচীন জমিদারের জমিদারির শেষ অংশের দর্শন।







এই মন্দিরগুলোর রক্ষানোবেক্ষনের কাজ করছে বিশওনাথ নামে একজনে, সেই আমাদের মন্দিরগুলো আর তার প্রাচীনতম ইতিহাস বর্ননা করছিল।
দিঘীর অন্যপাশে পুঠিয়া রাজবাড়ি। সামনের দিকে ৩.০৫ মিটার লম্বা বারান্দা নিয়ে এই পুঠিয়া রাজবাড়ি যা এখন “লস্করপুর ডিগ্রী কলেজ” হিসাবে পরিচিত। এই বিশাল রাজবাড়িটি তৈরি করেছিলেন “রানী হেমন্তকুমারি দেবী” ১৮৯৫ সালে, তাঁর শাশুরী “মহারানী শরৎসুন্দরী দেবীর” সৈজন্যে। ছুটির দিন তাই রাজবাড়ির ভিতরে ঢুকতে পারলাম না। বাহিরে থেকেই এই সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ থাকতে হলো।





বিশাল এই রাজবাড়ির সাথে আরও একটি মন্দির আছে যার নাম “পঞ্চরত্ন গোবিন্দ মন্দির”। এই মন্দিরে এখনও পুজো হয়। এই মন্দিরের ভিতরে আর বাহিরের অত্যন্ত সুন্দর কারুকাজ দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবেনেই। পঞ্চরত্ন নাম করনে সম্ভবত এই মন্দিরের ৫টি সুউচ্চ গম্ভুজের ভুমিকা আছে।



















শিবমন্দির যাবার পথে রাজবাড়ির সামনের দিকে আরও একটা মন্দির আছে যার নাম “ডোলা মন্দির”। নাম করনের কোন ইতিহাস জানা সম্ভব হয় নাই।



আমরা এখন যাচ্ছি শিবমন্দির দেখেতে। আমাদের পুঠিয়া রাজবাড়ি ভ্রমনের শেষ মন্দির।

শিবমন্দির প্রায় দুইতলা সমান বেদির উপরে তৈরি। বেশ অনেক গুলো সিঁড়ি পার হতে হয় এই মন্দিরে যেতে। ১৯.৮১ sqrm জায়গা নিয়ে এই শিবমন্দির। সিঁড়ি পার হয়ে উপরে উঠেতেই প্রথমেই চোখে পরবে বিশাল বড় শিবলিংগ। অত্যন্ত সুন্দর কাজের ছাপ এই মন্দিরের প্রটিতি দেওয়াল ঘিরে। মন্দিরের স্তম্বগুলতে বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ বস্তুত মন্দিরের সৈন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুন। মন্দিরের পিছনের দিকে বাঁধানো ঘাটে নেমে যেতে ঘুরানো সিঁড়ি রয়েছে। ১৯৭১ সালে এই মন্দিরকে ধংস করে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। যার চিনহ আজও আছে দেওয়াল এর গায়ে। ধংসকারীরা শিবলিংগকে ধংস করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু ওইটাকে জায়গা থেকে সরানো যায়নি। মন্দিরের পুরহিত বিশওনাথ দাবি করেন এই শিবলিংগ এশিয়ার মধ্যে সর্ববিহৎ।













সারাদিন অনেক হাটাহাটির পর আমরা ফিরলাম রাজশাহী রেলস্টেশন সংল্গন আমাদের হোটেল “হক্স-ইন” এ। ক্লান্ত শরীরকে বিশ্রাম দিচ্ছি কিছুক্ষন। তৈরি হচ্ছি কালকের জন্য। কাল যাব চাপাইনবাবগঞ্জের আমের হাট “কানসাট” আর সোনা মসজিদ দেখতে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:১৬
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×