পারবোনা। এ আমাকে দিয়ে হবেনা।
সোজা বলে দিলাম যখন ও বললো আমাকে ড্রাইভিং শিখতে হবে।
বলে রাখি, আমেরিকায় এসেছি মাত্র দু-তিন সপ্তাহ হল। আসার আগেই জানতাম অনেক কিছু দেশের থেকে ভিন্ন রকম হবে। যা ভেবেছিলাম,তার বেশিরভাগই মেলেনি।
শুনেছিলাম প্রতিবেশীরা হবে সাদা চামড়ার যারা গটর-মটর করে ইংলিশ বলবে। দোকান-পাট যেখানেই যাই আমাকেও গটর-মটর না হোক, ভাঙ্গা ইংলিশ বলতে হবে। ওমা, আশেপাশে তো দেখি চাইনীজ, ইন্ডিয়ান, আর মেক্সিকানে ভরা। চাইনীজ কি হিন্দি, স্প্যানিশ, এমনকি কোথাও কোথাও বাংলাও চলে।
প্রবাসী দুয়েকজনের কথায় না কিভাবে ধারনা হয়েছিল, বিদেশে চাল টাল একটু কমই পাওয়া যা্য়, হাবিজাবি খেয়ে দিন কাটাতে হয়। তা ঘরে চালের ছোট্ট পুটুলি না, একটা বড় বস্তাই দেখতে পাচ্ছি। মশুরের ডাল, টুকটাক মশল্লা, সবই আছে। আরো শুনেছিলাম দেশের বাইরে ছেলেরা নাকি রান্না করতে শিখে যায়। আরে বাবা, সেই আশাতেই তো আমেরিকা প্রবাসী পাত্রের গলায় মালা দিয়েছি। প্রবাসী পাত্রটি প্রথমদিন ডিমভাজি আর ডাল রান্না করে খাইয়েছিল বটে, কিন্তু সেই শেষ। পরদিন থেকে আমিই ল্যাট-ঘ্যাট যা পারি রান্না করতাম।
হুমায়ুন আহমেদের কোন বইয়ে, নাম মনে হয় নক্ষত্রের রাত, পড়েছিলাম পড়েছিলাম প্রচন্ড শীতের কথা, কিভাবে বরফের উপর হাটতে হয় তার ট্রিক। হা ভগবান, ক্যালিফর্নিয়াতে সামারে শীত কই, আর বরফ তো শুনলাম কখনই পরেনা। কোথায় ক্যালিফর্নিয়া কোথায় শিকাগো।
তা যাক, সব কিছু তো মেলেনা। কিন্তু আমাকে গাড়ি চালানো শিখতে হবে কেনো? আমার তিন কুল, পিতৃকুল, মাতৃকুল, এবং অধুনা প্রাপ্ত পতিকুলে(পতিকে বাদ দিয়ে) কেউ কোনোদিন গাড়ি চালানো শিখেনি। গাড়ি কেনার কথাতো স্বপ্নেও ভাবেনি। যদিও বা দু-একজন অতি দুর সম্পর্কের কারও গাড়ি আছে, তারা ড্রাইভারও রেখেছে মাসে মাসে বেতন দিয়ে। সাধারন মানুষের জন্য ট্রেন, বাস, সাইকেল, রিক্সা, এসবই যানবাহন। গাড়ি চালাতে গিয়ে যদি উল্টাপাল্টা কিছু মেরে দেই তাহলে কি হবে?
সুতরাং সোওজা বলে দিলাম, পারবোনা।
হায়, পারবোনা বললেই পার পাওয়া যায়না।
-- চলবে কি?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৩৮