somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুঁজিবাদী মননের বীজ বপন? বেবি লুনি টিউনস এবং আমেরিকান চিন্তাধারা

০১ লা অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেবি লুনি টিউনস অনেক পরের দিককার একটা কার্টুন। আমরা যখন কার্টুন দেখার বয়স পার হয়ে এসেছি প্রায় তখন কার্টুন নেটওয়ার্কে এর জন্ম। লুনি টিউনস ক্লাসিক পর্যায়ের একটা কার্টুন। টম এন্ড জেরির সত্যিকারের প্রতিদ্বন্দ্বী কিন্ত বাগস, ড্যাফি, রোড রানার আর কায়োটি, সিলভেস্টার আর টুইটি.............এরাই। এছাড়া আর যত কমেডি ছিলো সেসময়কার, সবই আমেরিকান জীবনযাত্রার সাথে কোন না কোন ভাবে সম্পর্কিত, ডেক্সটার, জনি ব্রাভো.........। পিওর সার্বজনীন সিটকম হল টম এন্ড জেরি, লুনি টিউনস আর হোয়াট আ কার্টুন শো। তবে সেটা আরেক প্রসঙ্গ।

প্রথম প্রথম ছোট ভাই-র সাথে বসে বসে দেখতাম বেবি লুনি টিউনস। ভাদাইম্যা লোকেদের অনেক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ থাকে। তো ওদের দেশে একটু ছোটদের জন্য কার্টুন মানেই শিক্ষামূলক। মরাল এডু। এক পর্যায়ে বিরক্তি ধরে যায়। কার্টুন নির্মাতারা নিজেদের এরিস্টোটল প্লেটো মনে করতে থাকে। এটা ঠিক, ওটা ভুল হ্যানাত্যানা........এরই মাঝে হঠাৎ একটা এপিসোড দেখে ধাক্কা খেলাম।




গল্পটা এরকম যে ছোট লুনি টিউনসদের দিদিমা তাদের প্রতিদিন ঘরের কাজকর্ম করার জন্য চারআনা করে দেয়। তা দিয়ে প্রত্যেকে প্রতিদিন আইসক্রীম কিনে খায়। তো এদের মধ্যে একটি মেয়ে (শূকরী), পিটুনিয়া, টাকাটা খরচ না করে জমিয়ে রাখে। সবাই এটা নিয়ে হাসাহাসি করে। তারপর হঠাৎ একদিন আইসক্রীমওয়ালা এসে বলে "আজকে রয়েছে একটা স্পেশাল........ডাবল স্কুপ ট্রিপল ড্রিপ ইত্যাদি".....বলে বিশাল একটা আইসক্রীম বের করে বলে, "কিন্তু এটার দাম বারোআনা!"

তখন বাকি ছেলেমেয়েগুলো ভ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে থাকে এবং পিটুনিয়া একটা কিনে নিয়ে যায়। পরে অবশ্য সে বাকিদের সাথে আইসক্রীমটা ভাগ করে খায় (কারণ অতো বড়োটা তার পক্ষে একা খাওয়া সম্ভব না)।

গল্পের মোরালঃ সঞ্চয়ের মাহাত্য।

আমার প্রশ্নঃ
১। আইসক্রীমটা যখন একজনের খাবার জন্য একটু বেশিই বড়, তখন ছ'জন মিলে দু'টো আইসক্রীম তো কিনতেই পারতো? সমবায়টা কি ট্যাবু আইডিয়া?

২। বাকি বন্ধুরা যখন প্রতিদিন আইসক্রীম কিনে খেয়েছে তখন পিটুনিয়া কষ্ট করে না খেয়ে থেকেছে, এর মানে কি এই, যে যারা scrooge তাদের পুরষ্কার বেশি হবে? (এমন কিন্তু নয় যে কেউ কাজ কারো থেকে কম করেছে)।

৩। প্রতিদিনের সাদামাটা চারআনার ললি, কাপ বা চকোবারের থেকে ওই বারোআনার ডাবল স্কুপ ট্রিপল ড্রিপটাই কি বেশি বাঞ্ছনীয়, যদিও সেটা খেতে হলে আমাকে প্রতিদিনের আনন্দ বিসর্জন দিতে হবে?

আমার এই আলোচনার প্রতিপাদ্য আদৌ এরকম নয় যে আমেরিকানরা ষড়যন্ত্র করে এসব আইডিয়া সার্কুলেট করছে (দুঃখিত, NWO theorist বন্ধুরা), বরং আমি বলতে চাইছি যে তারা সজ্ঞানে হোক আর অবচেতনে হোক নিজেদের অর্থনৈতিক মোরালগুলো
পরের প্রজন্মের হাতে ঠিকই ধরিয়ে দিচ্ছে। আমাদের সমাজের চিন্তাভাবনাগুলো কিন্তু এরকম নয়, একটু ভিন্ন। ভালো কি মন্দ সেই তর্কে আমি যাবোনা। ছোটদের হাতে সেগুলো তুলে দেওয়ার মতো কোন কাজটা আমরা করছি?

১। শিশুতোষ অনুষ্ঠান বলতে বিদেশী প্রোগ্রামের ডাবিং বা (একটা ধাপ এগিয়ে, সিসিমপুর) বাংলা ভার্সন।

২। "প্রগতিশীল" নামক চলচ্চিত্রনির্মাতাদের "পরের বউকে কিভাবে **গাতে হয়" শীর্ষক সুস্থধারার ছবি নির্মাণ যেখানে "ফার্মেসীতে গিয়ে বেলুন কিনতে লজ্জা পেলে হয়না" শিক্ষাপ্রাপ্তি, এবং মধ্যবিত্তের এই উপলক্ষে সপরিবারে সিনেমা হলে প্রত্যাবর্তন।

৩। হিন্দি সিরিয়ালের পদাঙ্ক অনুসরণে অসংখ্য "লাল নীল সবুজ হলুদ" মেগাসিরিয়াল যেখানে উচ্চবিত্ত, উচ্চমধ্যবিত্তের (ভাদাইম্যা+বাপের অনেক টাকা+নর্মালি **গাইতে আর ভাল্লাগেনা) মনস্তত্ত্ব নিয়ে ব্যাপক গবেষণা।

তো এসবের ভীড়ে আমরাও বড় হইসি (আমাদের সময় আরও ছিলো জাহিদ হাসানের বিড়ির য়্যাড) আর আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও হইতেসে। সমধানটা কি?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:৩৪
৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×