somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট মাথায় বড় চিন্তা !

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখি নাই । মুক্তিযুদ্ধের প্রায় ১৫ বছর পর আমার জন্ম । তাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার উৎস বিভিন্ন ক্লাশের পাঠ্যবই । আমার মুক্তিযোদ্ধা চাচা এবং বাকি পরিবারের ভারতে পালিয়ে থাকার গল্প শুনে শুনে । এর বাইরে প্রতি স্বাধীনতা দিবস , বিজয় দিবস এর অনুষ্ঠান থেকে কিছু কিছু জানতে পারি । পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের গল্প পড়ার সময় কল্পনা করতাম একদিন পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিব । মাঝে মাঝে দিবা স্বপ্নে গুপ্ত ঘাতক দল বানিয়ে রাজাকারদের এক এক করে মারতে শুরু করে দিতাম । বাবার কাছে গল্প শুনতাম মুক্তিযুদ্ধের সময় কিভাবে গোটা পরিবারকে সবকিছু ফেলে ভারতে চলে যেতে হয়েছিল ; যার জন্য দায়ী ছিল যতটা না পাকবাহিনী তার চেয়ে বেশি ছিল গ্রাম্য রাজাকার আলবদরদের ভয় । ভারতের কাটানো দিনগুলির গল্প শুনতে আমার মোটেই ভাল লাগত না । কারন সেসব কাহিনী ছিল অবমাননার , লজ্জার । রিফিউজিদের সঙ্গে ভারতীয়রা খুব ভাল ব্যবহার করেছে এমন কাহিনী শুনি নাই । তবু তারা আমাদের আশ্রয় দিয়েছিল । তাই এখন রোহিঙ্গাদের দুঃখটা বুঝতে পারি , যদিও আমরা তাদের আশ্রয় দেই নি । আমার বরং ভালো লাগতো চাচার গল্প শুনতে । যদিও তিনি খুব বড় ধরনের কোন অভিযানে যান নি কিন্তু অন্যের গল্প ঠিকই বলতেন । স্বাধীনতার পরে গ্রামে এসে আমার পরিবার দেখে বাড়ির কিছুই নাই , সব রাজাকারের দল ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে । যুদ্ধ শেষে চাচা কিভাবে একাই অস্ত্র নিয়ে গিয়ে সেগুলো উদ্ধার করেছেন , তা শুনে আমার খুব উৎসাহ হত । সাথে একটু হতাশাও থাকতো কেন চাচা তাদের তখন শাস্তি দিলেন না ! আস্তে আস্তে বড় হবার সঙ্গে সঙ্গে অনেক মতের সাথেই পরিচয় হয়েছে । যেমন পাকিস্তান ভাঙ্গাটা ভারতের একটা সুপরিকল্পিত ঘটনা কারন পাকিস্তান এক থাকার সময় ভারতের সীমান্ত রক্ষায় অনেক বেশি খরচ হত , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কখনো পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা চান নি , তিনি স্বাধীন্তার পর যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছেন ইত্যাদি ইত্যাদি । এইসব পাকিস্তানী অন্তপ্রান মতবাদ শুনে খুবই আশ্চর্য হতাম , বুঝতে চেস্টা করতাম তাদের এই পাকিস্তান প্রীতির কারণটা কি ? অনেক চিন্তা করেও ধর্ম ছাড়া আর কিছু খুজে পাইনি । গ্রাজুয়েশন এর জন্য রাজশাহী গেলাম । আগেই জানতাম রাজশাহী শিবির আর জামাতের ঘাটি । গ্রাজুয়েশন এর কয়েক বছরে দেখলাম শিবির কিভাবে গ্রাম্য , ধর্মপ্রাণ , অপেক্ষাকৃত স্বল্প আয়ের পরিবার থেকে আসা ছেলেদের টার্গেট করে ব্রেন ওয়াশ করে ধর্মের নাম দিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করছে । আজকে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল যা করে শিবির তার সবই করে কিন্তু গোপনে এবং এদের কাছে রাজাকার বলে কিছু নেই । এরা বিশ্বাস করে জামাত এর কোন নেতা ৭১ এ স্বাধীনতার বিরোধিতা করে নি । কি আজব এক পরিস্থিতি ! যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হতেই শুনলাম সরকার কোনদিন এর বিচার করতে পারবে না , করার চেস্টা করলে সৌদি আরব , কাতার , ওমান সহ সব মধ্যপ্রাচ্যের দেশ নাকি লাখ লাখ বাংলাদেশিকে দেশে পাঠিয়ে দেবে । বিচারের অনেকদিন পর্যন্ত বি এন পি মুখ বন্ধ রেখে মাঝখানে শুরু করলো তারাও বিচার চায় কিন্তু তা হতে হবে স্বচ্ছা, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহণযোগ্য । মাঝখানে স্কাইপি বিতর্ক , সাঈদীর প্রেমালাপ । এরপর ২১ জানুয়ারী এল প্রথম রায় ।
আমার মাথা খুবই ছোট , রাজনীতির গন্ধ পাইলে আমি তার থেকে হাজার মাইল দূরে থাকতে চাই । কিন্তু একজন বাংলাদেশে বসবাস করে কিভাবে রাজাকার , আলবদর দের সমর্থন করে তা আজও বুঝলাম না । বি এন পি কেন এখনও সেই আগের বুলি আউরাচ্ছে তাও আমার মাথায় ঢুকে না । বি এন পি যদি আওয়ামী লীগকে এখান থেকে রাজনৈতিক ফায়দা দিতে না চায় , তাহলে তো তাদের আয়াওমীলীগের চেয়েও জোরালো ভাবে বিচার চাওয়া উচিত ।
আমি কোনদিন রাজনৈতিক নির্বাচনে ভোট দিতে যাই নি । আগামী নির্বাচনেও যাবো না কারন আওয়ামীলীগের এইবারের কাজকর্মে চরম হতাশ (একমাত্র যুদ্ধাপরাধীর বিচার ছাড়া) আর জামাত সহ বি এন পি কোনদিনও আমার বিকল্প হতে পারবে না ।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×