প্রথম প্রকাশের পর
মঞ্চ একটা তৈরী হয়েছে কিন্তু কোনো রাজনৈতিক নেতরা কেউ নেই। আমি ভাবতেই পারছিনা - যে এরকম একটা জমায়েতে কোনো রাজনৈতিক নেতা নেই এটা আমরা এ বাংলায় কল্পনা করতে পারিনা । তাহলে কারা ঘোষণা করছেন? ওই সব ব্লগাররা নানা ঘোষণা করছেন। যারা রাজনীতির সাথে আছেন তারা এলেও সসন্মানে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ।
চূড়ান্ত বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম যে দেখতে দেখতে এই আন্দোলনের ঢেউ বাংলাদেশের নানা শহরে, গ্রামে গঞ্জেই শুধু নয়, সারা বিশ্ব ছড়িয়ে পড়ছে, সারা বিশ্বে যেখানে মুক্তকামী মানুষ আছেন তারা প্রত্যেকেই এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করেছেন।
যেদিন শিলাবৃষ্টি হলো, শীতল হাওয়া বইছিল, আমি ঠান্ডায় কাঁপছিলাম, ভাবছিলাম এবার বোধহয় চত্বরটা ফাঁকা হয়ে যায়ে - অপার বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম এরা কেউ শাহবাগ ছেড়ে যায়নি - শত্রুদের প্রতি তীব্র ঘৃণা থেকেই এরা এই প্রবল শক্তি পেয়েছেন ।
এমনিতে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল গুলো এপার বাংলায় দেখা যায়না, অনেক আগে চ্যানেল আই বলে একটা চ্যানেলে বাংলাদেশের জনপ্রিয়তম সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের একটি টেলি নাটকের তোতোপাখির একটি সংলাপ মনে পড়ে গেলো "তুই রাজাকার - তুই রাজাকার"।
আমি অবাক হয়ে দেখলাম এই একটি মাত্র সংলাপই এই আন্দোলনের মূল প্রাণ-ভোমরা। হাজার হাজার কন্ঠ চেচিয়ে চেচিয়ে বলছে তুই রাজাকার - তুই রাজাকার । এই দু'টি শব্দই এই আন্দোলনকে নতুন জীবন দিয়েছে।
আমি অবাক হয়ে দেখছি ছোটো বড় সবার মাথায় ফেট্টি বাঁধা, তাতে লেখা "রাজাকারের ফাঁসি চাই। দুর্ভাগ্য আমাদের আমরা এই বাংলায় (পশ্চিম বাংলায়) চেচিয়ে বলতে পারবোনা -"তুই ধর্ষক" - তোর ফাঁসি চাই - তুই মৌলবাদী - তোর ফাঁসি চাই - কিন্তু অবাক বিস্ময়ে দেখছি বাবার কোলে চড়ে দু'বছরের শিশু আধো উচ্চারণে বলছে "রাজাকারের ফাঁসি চাই' - যে শিশু ভালো করে কথা বলতে শেখেনি, বড়দের দেখে বলতে শিখে গিয়েছে।
মহাসমাবেশ শাহবাগে। শাহবাগ ডাক দিয়েছে --
দেশের অগুন্তি মানুষ সে ডাকে সারা দিয়েছেন। দিয়েছেন নিজেদের প্রাণের তাগিদে। দিয়েছেন ভবিষ্যত বাংলাদেশের জন্য- যে বাংলাদেশে তাদের সন্তান-সন্ততি মুক্ত বাতাসে বুক ভরে নিঃশ্বাস নেবে - আঃ বাংলাদেশ। সোনার বাংলাদেশ। "আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি" এই জাতীয় সঙ্গীত বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের সঙ্গীত - বাংলাদেশের মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গীত - রাতের পর রাত এই শাহবাগ চত্বরে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গাইতে সংকল্পে অটল থাকতে দেখেছি হাজার হাজার মানুষকে।
"ও আমার বিদ্রোহিনী বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি" কলকাতার মানুষ এভাবেই সংহতি জানিয়েছে শাহবাগকে। মৌলবাদের বিরুদ্ধে একসাথে আমরা - আমরা দেখেছি বাবরি মসজিদ ভাঙতে - আমরা দেখেছি আমাদের দেশের মানুষের মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। তাই আছি শাহবাগের পাশে । তোমার আমার ঠিকানা - শাহবাগের মোহনা ।
কিন্তু মৌলবাদ ?
দেশে দেশে কালে কালে মৌলবাদীরা সহজে পরাজয় মেনে নেয়নি - মেনে নেয়না । দেখলাম এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
একজন ব্লগারকে প্রাণ দিতে হলো। সমাবেশের হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ আরো প্রতিবাদী হলেন । সংকল্পে দৃড় হলেন।
মৌলবাদীরাও নাছোড় - তারা প্রত্যাঘাত করতে শুরু করেছে। সারা দেশে তারা বিশৃঙ্খলা শুরু করে দিয়েছে। (এরা আমাদের দেশেও সক্রিয় - এদের চরিত্র সারা পৃথিবীতে একই) - এরা মুখোশ খুলতে শুরু করেছে। এরা বিদেশ থেকে অর্থ পেয়ে থাকে বলে শুনেছি - আমাদের দেশেও তাই - এদের বিদেশ থেকে যেমন অর্থের যোগান আসে, তেমনি দেশের আভ্যন্তরীণ শক্তিও এদের অর্থ যোগায়।
আমার বিশ্বাস -
আমার বিশ্বাস জাগ্রত জনতার কাছে মৌলবাদীদের অপপ্রয়াস কখনো সফল হয়নি।শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ কখনোই এসব মেনে নেয়না। দেশে দেশে কালে কালে এটা সত্যি। আমার বিশ্বাস মিশরের তাহরির স্কোয়ার বা টিউনিসিয়া, কিংবা চীনের তিয়েন-মিন স্কোয়ার বা ভিয়েতনাম, ভেনেজুয়েলা-র সাথে আরেকটি নাম যুক্ত হলো তার নাম শাহবাগ । শাহবাগের লড়াই পৃথিবীকে অনুপ্রাণিত করবে ।
শাহবাগ প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জাগ্রত প্রতিনিধি ।
শাহবাগ আছো আমার ভিতর ও বাহিরে, আছো আমার অন্তরে অন্তরে, থাকবে তুমি হৃদয় জুড়ে ।
জয় বাংলা, জয় বাংলাদেশের জয়।
মানুষই শেষ কথা বলেন।
আলোচিত ব্লগ
লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা
ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।
মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিল্টন সমাদ্দার
অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না
নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা
সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১
নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন