somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার টিকিট ভাগ্য

২০ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ট্রেনে চইড়া ভ্রমন করেন নাই এমন লোক বিরল।লোকাল ট্রেনের কথা না দূর ভ্রমনের কথা কইতাছি। লাইনে খাড়াইয়া আগাম টিকিট কাইটা দূর ভ্রমনের মজাই আলাদা।
এখন লাইনে খাড়াইয়া আগাম টিকিট কাইটাই, মানে রিজার্ভেশন না কইরা ট্রেনে যাওন যায় না।আগাম টিকিট না পাইলে তৎকাল কাইটাও যাওন যায়।তৎকালের রকমফের আছে। লাইনে না খাড়াইতে চাইলে, ঘরে বইসা ই-টিকিট কাইটাও টিকিট পাইবেন । তবে তৎকাল পাইবেন না, সার্ভার কামই করবোনা, সার্ভারের চাকা ঘুইরাই যাইবো।
কইতাছিলাম টিকিটের কথা। থাকি উত্তরবঙ্গে, কলকাতায় যামু, প্রায় দশদিন আগেই লাইনে গিয়ে খাড়াইলাম। কাউন্টারের কাছাকাছি আইতেই লিঙ্ক ফেইল হইয়া গেল।খাড়াইয়া আছি, খাড়াইয়াই আছি - এই বুঝি লিঙ্ক আইল, মেজাজ বিগড়ানোর ঠিক আগে লিঙ্ক আইল আমিও কাউন্টারের সামনে, ঠিক তখন তখনই গেট বন্ধ - টিকিট বাবুগো রিসেস টাইম। আধা ঘন্টা আরো খাড়াইয়া থাকো।
খাড়াইয়া খাড়াইয়া হা-হুতাশ করা ছাড়া গতি নাই। সিগারেট খাওন যাইবোনা, খাইয়া ধরা পড়লে দুইশত টেহা ফাইন। দুইবার ফাইন দিছি, একবার শিয়ালদহ ইষ্টিশানে, একবার ট্রেনের ঠিক টয়লেটের সামনে।সেই থিকা, মনটা নিস-পিস করলেও ইষ্টিশানের ধারে কাছে আর সিগারেট খাইনা - নেড়া বেল তলায় কয়বার যায় কন?
দুইখান টিকিট পাইলাম, পিছনের লোকের গুতা খাইয়া কি টিকিট পাইলাম দেখি নাই। বাড়ী আইতেই পন্ডিতে (আমার অর্ধাঙ্গিনী) কইলো কি টিকিট পাইলা, এত দেরী হইলো ক্যান? দেরীর কথা কি কমু কন? টিকিট খানি বাড়াইয়া দিয়া গামছাখান লইছি কি লইনাই একখানা ঝঙ্কার শুইনা খাড়াইয়া গেলাম। আবারো তুমি টয়লেটের সামনে টিকিট কাইটা লইয়া আইছ? তাও আবার দুইখানই আপার বাঙ্ক।(থ্রি-টিয়ার-স্লিপার কোচ- এসি-র টিকিটতো আর আমাগো মতন সাধারণ মানুষের জন্যনা-দালালরা-টিকিটবাবুরা মিল্যা সব টিকিট আগাম বুক কইরা রাখে বইলা শুনতে পাই)।
আমার পন্ডিতের হাটুতে গন্ডগোল আছে, আপার বাঙ্কে উঠবো কেমন কইরা? খাইছে।
আমি কইলাম সময়তো আছে, টিকিট পাল্টাইয়া আনুমনে।
কি কইরা আনবা, আমার বাপের বাড়ীর কেউতো আর রেলে কাম করেনা।
আমি কইলাম চিন্তা কইরোনা, একটা ব্যবস্থা করুমনে। ট্রেনে উইঠা কারো লগে ম্যানেজ কইরা নিমুনে।
আর টয়লেটের ব্যাপারটা - কি কমু কন? আমরা ট্রেনে উইঠা টয়লেট ব্যাবহার কইরা কেউ ফ্লাস টানিনা, 'ইয়ের গন্ধে থাকা যায়না।
কইলাম, যাইহোক একটা কিছু করুমনে। তুমি আমার ভাত বাড়ো, আমার অফিসের দেরী হইতাছে। কোনোমতে কাটান দিয়া অফিস পালাইয়া সেই যাত্রার মতো নিজেরে বাঁচাইলাম।
ফেরার টিকিটের কাটার পালা, আমার মনটা ধুক-পুক।
আমার মাইয়া (কইলকাতায় থাইকা পড়ে - কইলকাতার ভাষায় কথা কয়) কইলো, বাবা - চিন্তা কোরোনা, আমি বাড়ীতে বসে ফেরার -ই-টিকিট কেটে দেবো।
নিশ্চিন্ত হওয়া গেলো, যাওনের দিন আইতে মাইয়ারে কইলাম, টিকিট কইরে?
মাইয়া কইলো- টিকিটতো তোমার মোবাইল ফোনে দিয়ে দিয়েছি, তুমি দেখে নাও।
মাইয়া কয় কি? মোবাইল ফোনে টিকিট? কইলাম, টিকিট-চেকারে কমু কি?
মাইয়া কইলো - মোবাইল দেখিয়ে দেবে।
এইবারও টিকিট সেই টয়লেটের ধারে, তবে একখানা মিডল বার্থ, একখানা লোয়ার বার্থ।
খাইছে- করুমনে কি ।
মাইয়ারে কইলাম - তোর মারে কইসছ - তোর মায়ে কি কইল?
মা বললো, তোমার থেকে ভালো টিকিট হয়েছে।
পরেরবার কইলকাতায় যাবার সময় লাইনে খাড়াইয়া টিকিট কাটার কোনো রিস্ক লইলামনা।নামকরা একজন দালালরে ধইরা কইলাম দুইখান টিকিট কাইটা দেও, কামরার মাঝামাঝি যায়গায়, একখান অন্তত, লোয়ার বার্থ দিও;
দালালে কইলো - কাহা- আমাগো এইখান থিকা কইলকাতার যাওনের তো একখানই ট্রেন, ভীষণ চাপ। কইলকাতায় ক্রিকেট খেলা দেখার জন্য আরো চাপ।হকলেই খেলা দেখবো। ট্রেনের সীটতো আর বাড়েনা।
আমি কইলাম - আপনার ব্যবসা ভালোই চলতাছে কি কন?
দালালে কইলো - তা কাহা আপনাগো জন্য ব্যবসা ভালোই।
আমি কোনো রিস্ক না লইয়া কইলাম যাওনের আর আওনের দুইখানই কাইটা দেন।
দালালে কইলো- কাহা, একশ টাহা বেশী লাগবো কিন্তু- ভীষণ চাপ।
আমি কইলাম ঠিক আছে, বেশী দিমুনে, কিন্তু, টিকিট
দালালে কইলো - চিন্তা কইরেন না।
দালালে যাওনের আগে টিকিট দিলো - যাওনেরটা অন্য ট্রেনে, মানে অন্য শহর থিক্যা ট্রেনে চাপতে হইবো- মানে বাসে দুই ঘন্টার জার্নি। দুইখানই টয়লেটের ঠিক আগের খোপে মিডল বার্থ।
ফেরার টিকিট টা আর দেখতে সাহসই পাইলামনা।
বাড়ীতে আইয়া ঘোষণা দিলাম, যাওয়া হইবোনা, কোনো ট্রেনে টিকিট নাই।
তোমারেতো আগেই কইছিলাম - আগেভাগে টিকিট কাইটা রাখো । আমি জানিনা, আমি যামুই - যেমন কইরা হোক টিকিট আমার চাই।
আমি আমতা আমতা কইরা কইলাম, আগে টিকিট কাটলে কও- আগে টিকিট কাটলে টয়লেটের ধারে টিকিট পাও - পরে কাটলে কও আগে কেন কাটো নাই-
এহন আমি কি করুম কও-আমি গলা চড়াইয়া কইলাম
পন্ডিতে কইলো - তৎকাল কাটলে হয়না ?
আমি কইলাম - হয় - তবে আমাগো এই ট্রেনের টিকিট তৎকালেও নাই তবে দালালরে কইয়া অন্য ট্রেনে টিকিটের ব্যবাস্থা করন যায় কিনা দেখুমনে।
তয় বোঝলেন - আমার নসীব আমি কই টিকিট-ভাগ্য । কি করন যাইব - অগত্যা অন্য ট্রেনের টিকিটই- সই।
বিশ্বাস করেন আর নাই করেন, ফেরার টিকিটখান এখনও দেখি নাই।
কপালে থুরি - ভাগ্যে কি আছে জানিনা।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×