"নিজস্ব সম্পত্তি বলতে আমার যা কিছু আছে তার মালিক হবে নাৎসি পার্টি।পার্টির অস্তিত্ব যদি বিলুপ্ত হ্য়,তবে জার্মান রাষ্ট্রই হবে সে সবের অধিকারী।আর রাষ্ট্রই যদি না থাকে, তবে আমার বলার কিছু নেই।"
এইটুকু বলার পর পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখ দুটো মুছলেন পরাক্রমশালী হিটলার।মাথা উচুঁ রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করলেন।কিন্তু সম্ভব হলো না।ভারী মাথাটা বার বার ঝুঁকে পড়তে লাগলো সামনে।শক্ত দেহ কুজোঁ হয়ে গেল।অবাধ্য চুলগুলো কপাল ছাড়িয়ে বাম চোখটাকে ঢেকে ফেলতে লাগলো।হাত দিয়ে কয়েকবার সরিয়ে দিলেন তিনি শক্ত চুলগুলো।চোখ মুছে নিলেন আর একবার।তারপর একটা লম্বা নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন,-
"জার্মানীর শাষন - ক্ষমতা যার হাতেই আসুক না কেন,আমি তাকে একটা অনুরোধ করবো।যুগ যুগ ধরে আমি যেসব চিত্র সংগ্রহ করেছি, যক্ষের ধনের মত যেসব শিল্পকলা সংরক্ষণ করেছি, তার পিছনে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য কাজ করেছিল।আমি চেয়েছিলাম, দানিয়ুব নদীর তীরে আমার জন্মভূমি লিনৎসে একটা আর্ট গ্যালারী স্হাপন করবো।আমার মনের সেই সুপ্ত বাসনা সুপ্তই রয়ে গেছে।বাস্তবায়িত করার অবকাশ আমি পাইনি।আমি যা পারিনি মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে অনাগতদের কাছে সবিনয়ে অনুরোধ করবো, তারা যেন আমার সে সাধ পূরণ করেন।
আগামীতে অনেকেই হয়তে আমকে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের নায়ক হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করবে।সকল দোষ চাপাবে আমার ঘাড়ে।তখন আমার পক্ষ থেকে জবাব দেবার কেউ থাকবে না।তাই মৃত্যুর আগে আমি স্পষ্টভাবে বলে যেতে চাই যে,আমরা - জার্মানবাসীরা ১৯৩৯ সালের যুদ্ধ চাইনি।ওটা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল।আমরা চেয়েছিলাম- প্রথম মহাযুদ্ধের গ্লানি কাটিয়ে উঠতে। একটা আত্নমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে।আমরা চেয়েছিলাম, আমাদের জাতীয় অবমাননার দলিল "ভার্সাই চুক্তি" বাতিল করতে।গ্রেট ব্রিটেন আর ফ্রান্সকে বন্ধু হিসেবে গ্রহন করতে।
কিন্তু ইহুদি বংশসম্ভূত না হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কতিপয় রাষ্ট্রনায়ক ইহুদিদের স্বার্থরক্ষার জন্যে আমাদের উসকানি দিয়েছিলেন মারাত্নক পথে ধাবিত হতে। বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতি অনুরোধ করেছি অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তি সম্পাদন করতে।কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি।অথচ আমি জানি, সকল দোষ চাপানো হবে আমার ঘাড়ে।"
চলবে............
২য় পর্ব এখানে
মহামতি হিটলারের শেষ ভাষণ (২য় পর্ব)....