somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিরবে চলে গেল ১৩ ডিসেম্বর আজ ছিল চৌধুরীবাড়ী মুক্ত দিবস।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



[সেন্টার ফর কমিউনিটি ইনফরমেশন এন্ড ক্রিয়েটিভ মিডিয়া-অন্যমাত্রা থেকে প্রকাশিত মাসিক মাত্রা’র ২০০৬ সালের ডিসেম্বর সংখ্যায় নূর-ই-আলম লিপু মুক্তিযোদ্ধা বাবা আব্দুর আজিজ-এর কাছে শোনা কথা গুলো আমাদের জানিয়েছিলেন এভাবে...]

৬৯ এ আন্দোলন হলেও এর চরম পটভুমি শুরু হয়েছিল ৫২তেই। তখন থেকেই শুরু হয়েছিল বিজয়ের খেলা। লাল শ্বাস বের করে দিয়ে জিততে চাই জীবন এ শপথে মেতেছিল প্রতিটি হুংকার কম্পনীতে প্রাণ । আর তারই বহিঃপ্রকাশ হল ৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বর । ৩০ ল প্রাণ বিলিয়ে লাল রং এর নদী বইয়ে পেলাম সবুজের প্রান্তর। সোনালী রবির আলোর, রুপালী করের দেশ, বাংলাদেশ।
প্রতিটি শিশুর জন্মগ্রহণ করতে সময় লাগে ১০ মাস ১০ দিন ঠিক তেমনি বাংলাদেশেরও জন্মগ্রহণ করতে সময় লেগেছিল ৮ মাস ২১ দিন । বাংলার জমিতে বাংলাদেশের জন্ম। এ জন্মের পিছনে যাদের সবচেয়ে বড় অবদান তাদের আরো একবার জানাই সালাম। নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গোদনাইল ইউনিয়নের ছোট একটি গ্রাম যার নাম তাতঁখানা। তারই বুকে নতুন করে বেড়ে উঠা যে শব্দটি তাহলো চৌধুরীবাড়ী। এ নামে শুধু একটি বাড়ীকে সম্বোধন করে না বরং গোটা ইউনিয়নকে সম্বোধন করে। আর তার ইতিহাস ঘাটতে গেলেই দেখা যায় এখানেও ছিল সেই বিজয়ের কিছু নায়ক।
বাংলাদেশ যাদের নাম দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা। যাদের ল ছিল একটাই স্বাধীনতা। দস্যুতা ধ্বংষাত্বাতা রাত গিয়ে দিন এসেছে। দিন গিয়ে মাস, তবুও তাদের শক্তবাহুর শক্তি যায়নি একটি পলকের জন্য। তাদেরকে নিয়েই আমাদের আয়োজন। মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বলতে গেলে প্রথমেই যাদের কথা আসে তারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন, নূরুল ইসলাম, আবদুল কাদের , কামাল সাহেব, আয়েত আলী গাজী, জহির উদ্দিন, জহিরউদ্দিন চেয়ারম্যান, হযরত মেম্বার, আবদুর রহিম মোঃ হোসেন প্রমুখ। নিজেদের বুকের রক্ত বিলিয়ে গায়ের সকল শক্তি লুটিয়ে নীল আকাশের নীচে শীতল বাতাসে বরফন্যায় কাদামাটি জড়িয়ে লড়ে গেছে লড়াই। এ দেশ এ মাটিকে শক্ত করে আপন করে নেয়ার তরে তাদের সাথে যারা বুদ্ধি, যুক্তি এবং সাহস দিয়ে পথবের দিয়েছিলেন তাদেরকে আমরা বলি বুদ্ধিজীবি, কমান্ডার। এ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের পেছনে যারা এ সকল বিষয় লুটিয়েছেন. তাদের মধ্যে ইসমাঈল সাহেব, মুসলেউদ্দিন কমিশনার সাহেব , সুরুজ সাহেব প্রমুখ। বাংলার এই সাহসী প্রান, রক্তবায়ী দেহমাংস সম্পূর্ন চালকদের থাকার জায়গাটি কখনও স্থায়ী ছিলনা। অস্থায়ী ভাবে চলতে হয়েছিল ঐ দূর্গম দিন, রাতগুলোতে। কখনও কোন বাসায় অন্ধকারে, কখনও পুরনো কোন কারখানায়, কখনও খোলা আকাশের নীচে বন জঙ্ঘলে। যে ভাবে যেখানে পেরেছে থেকেছে, যা পেয়েছে গিলেছে চোখবুঝে। তাদের দূঃসাহসীক কাজগুলো চলেছিল একের পর এক কখনও রাস্তার উপরে ফেলা, কখনও বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া , কখনও ব্রীজ, কালর্বাট বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া । এমনি হয়েছিল সে দিন আইলপাড়া রেল লাইন বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় দস্যু ঘায়েলের জন্য। ভাগ্য কারো সহায় কারো অসহায় হয়েছিল। অপারেশন সাকসেসফুল হলেও মহিউদ্দিন সাহেবের হাত চলে যায় আগুনের গোলার সাথে। এভাবেই তারা তাদের শেষ নিঃশ্বাস দিয়েও রা করেগেছে বাংলার স্বাধীনতা।গোটা ইউনিয়নে জি, এম, সি, নামক জুটমিলে বাসস্থান নিয়েছিল দুস্যুদল। রাত হলেও নেমে আসতো নীরব একটি গ্রামের উপর । চলতো, আক্রমন, অনাচার, অত্যাচার নিরহ মানুষের প্রান, জান নিয়ে পার করত সারা রাত। লুটে নিয়েছে মা বোনদের অমূল্যবান ইজ্জত। কেড়ে নিয়েছে কিছু মানুষের বেচেঁ থাকার স্বপ্ন, ভাললাগা ভালবাসা দিয়ে সাজানো সুন্দর বাসরটুকুও। মুক্তিযোদ্ধা শুধু তাদেরকেই বলা যায়ন যারা অস্ত্র হাতে রাত দিন পরিশ্রম করেছে। আরো বলা যায় যারা তাদের পাশাপাশি, সাহায্য সহযোগিতা, বিভিন্ন রকম তথ্য, খবর এনেদিয়েছে, এনেদিয়েছে খাবার পানি ও অন্যান্য উপকরন. থাকতে দিয়েছে এক ঘন্টার জন্য হলেও। তাদের সবাই কে মুক্তিযোদ্ধা বলে সংঘায়িত করা যায়। এমন লোকের সংখ্যা অনেক , বরং বলা যায় গোটা ইউনিয়নের কিছু সংখ্যক লোক ছাড়া বাকীরা সবাই শুধু সাহায্য নয় জানের উপর বাজী রেখে লাড় গেছে নীরবে। দস্যুদলের পেছনে খবর টুকু এনেদেয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল বারবার। এমনি একজনের নাম আবদুল আজিজ। যিনি সারাদিন কাজ করতেন এবং রাতের বেলা বিভিন্ন স্পটে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন তথ্য, বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ে জ্ঞাত করেছেন। তাদের খাবার, কাপর বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস এনে দিয়েছিলেন এমন করে আরো অনেকে আছেন তার মধ্যে, আবদুল হাসেম, জুলহাস, জয়নাল, আবদুল মালেক প্রভৃতি। যারা অস্ত্র হাতে নেয়নি তবে নিজের প্রানটা বুকের ভেতর থেকে বের করে হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াত এবং প্রয়োজনে সেটা দিতেও পারতো। আর এভাবে অনেকেই দিয়েদিয়েছিল তাদের প্রান ওদের বুলেটের আঘাতে, দিতে হয়েছিল দুচোখের উজ্জল সোনালী ভবিষ্যৎ এবং কাঙ্খিত স্বপ্নের মালাখানি। মতিউর, হামিদ, সালাম, বরকত, কে যেমন আমরা ভুলবোনা তেমনি ফারুখ, মান্নন,, হাফিজদের কেও আমরা ভুলবোনা। মুক্তিযোদ্ধা হতে হলে লাগে সাহস ,আর একনিষ্ট মনোবল। কোন বিপদের পেছনে নয় সামনে থেকে মোকাবেলা করার প্রয়াশ। এসব ধরনের গুনগুলো ছিল চৌধুরীবাড়ীর তথা গোটা ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের । এক কথায় ইউনিয়নের প্রতিটি ঘরেই ছিল একজন করে হলেও মুক্তিযোদ্ধা। এমনও হতে পারে একজন মানুষ বাহির দিয়ে কোন প্রস্তুতা না দেখিয়ে মনে মনে প্রার্থনা হাকিয়ে যাচ্ছে স্বাধনতার জন্য তাকেও আমরা সম্মান করি। মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা এক কথায় অনেক, প্রায় ১১,০০০(এগার হাজার) এর উপরে হলেও অস্ত্র হাতে যোদ্ধ করেছেন এমন সংখ্যা প্রায় ৩৪জন এবং তাদের সঠিক মনোবলে অন্ধকার রাত সুন্দর ভোর হয়ে আসে ১৩ই ডিসেম্বর । আরো কিছু মুক্তিযোদ্ধাদের কথা না বললেই নয় যারা খুবই শক্তহাতে অস্ত্র ধরে মাঠে নেমেছিল দুস্যু হঠাও বলে , একই সুরে এ গান ধরে মোরা একটি ফুলকে বাচাবো বলে যুদ্ধকরি। তেমনি কয়জনা হলেন, ইলিয়াস ভুঁইয়া, নূর হোসেন,শামসুদ্দিন প্রমুখ। এ দেশকে সুন্দর করে সাজাবো বলে অস্ত্র ধরে ছিল এ দেশের ৭কোটি মানুষ অত্র ইউনিয়নের ১৫ হাজার মানুষ দেশ স্বাধীন হয় , সবুজ আরো সবুজ হলো সোনালী সঙের সূর্যটি ও পূবদিকে উঠে পশ্চিম দিকে অস্ত যায়, আমরা কি এখনও স্বাধীন হতে পেরেছি? আজ পূনরায় মুক্তিযোদ্ধারা একইসুরে বলেছেন , স্বাধীন ভূমত্ব চাই, স্বাধীন ভাষা চাই, সুন্দর করে বাচতে চাই, নৈরাজ্য আর অনাদারের প্রষ্ঠতলে থাকতে চাই না, প্রয়োজনে আবারও রক্ত দিব, আবারও অস্ত্র হাতে নেব তবও এ দেশকে প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা করবোই। তাদের সাথে আমরাও একই সুরে বলতে চাই,সুুন্দর একটির হাসির জন্য এ দেশকে চাই, সুন্দর করে বাচার এ দেশকে চাই।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×