আসার সময় হাস্নাহেনা নিয়ে আসবা একমুঠো আর যদি না পার তো আসবানা। আজব এক শর্ত দিয়ে দিল। এখন এই ধুলোবালি আর ইট কাঠের শহরে হাস্নাহেনা কোথায় পাবো ? আমি কোনোকিছুই শুনতে চাইনা যদি দেখা করতে চাও তো হাস্নাহেনা নিয়ে আসতে হবে। এই কথা বলে ফোনটা কেটে দেয় তিন্নি।
তপু জানে হাজার বার ফোন করলেও আর ফোন ধরবেনা তাই এই চিন্তা বাদ দিয়ে হাস্নাহেনার গন্ধে উতলা হবার চাইতে হাস্নাহেনা খুঁজার জন্য উতলা হবার চিন্তায় মন দিল তপু।
তিন্নি জানে তপু অনেকক্ষণ ভাবার পরে ওর মনে পড়বে ওর বাসা থেকে মাত্র চারটা বাসা পরেই কামাল চাচার বাসায় একটা হাস্নাহেনা গাছ আছে।
হাস্নাহেনা ফুলের গন্ধে নাকি সাপ আসে এই ভয়এ কখনো রাতে হাস্নাহেনা গাছের নিচে যাইনি তপু। ও সাপ ভয় পায় অনেক। শেষ পর্যন্ত এই সাপের কামড়েই মরতে হবে ওকে। সাপের কথা ভাবতে ভাবতে ও ভুলেই গেছে আগেতো হাস্নাহেনা খুঁজে পেতে হবে পরে না হয় সাপ নিয়ে ভাবা যাবে কিন্তু হাস্নাহেনা কোথায় পাওয়া যাবে। হঠাৎ খুশিতে লাফিয়ে উঠল তপু, কামাল চাচার বাসায়ইতো হাস্নাহেনার গাছ আছে! তখনই রওয়ানা হল তপু কারণ কামাল চাচা অনেক ভোরে উঠেন ধরতে পারলে পরপারে পাঠাই দিবেন। কোনোরকমে দেয়াল টপকে কামাল চাচার বাসাই ঢুকে অতি সাবধানে গাছটা কাছে যেতেই হাস্নাহেনার গন্ধে মনটা অন্যরকম হয়ে গেল, অবাক হয়ে তিন্নিকে মনে মনে একটা ধন্যবাদ দিলো তপু কারণ এইরকম ভালো খুব সময়ই লাগে। গাছটাকে একটু ভালো করে দেখে নিলো সাপ আছে কিনা! নাহ নাই। অনেকগুলো ফুল নিয়ে বাসায় ফিরে গেল তপু।
তিন্নি ভাবছিল হাস্নাহেনার কথা কাল যখন তপু কাছুমাছু মুখ করে ফুলগুলো এনে তার হাতে দিবে তখন কেমন লাগবে ওর কাছে, অদ্ভুত আবেগে মনটা শিহরিত হয়ে উঠে। আর তখনই মনে হয় ও শুনেছিল হাস্নাহেনা ফুলের গন্ধে সাপেরা আসে, মনে হতেই অজানা আতঙ্কে কেঁপে উঠে তিন্নি। ফোন করে আর তপু ফোন ধরেই অবাক হয়ে বলে তুমি! তিন্নি এক নিশ্বাসে বলে তুমি ফুল আনবানা এমনিই আসবা আমার ফুল লাগবেনা। তপু বুঝতে পেরে শুধু ঠিক আছে বলে ফোন টা রেখে দেয়।
লাল শাড়িতে তিন্নিকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে আর লজ্জা লজ্জা মুখ করে লাল পাঞ্জাবী পরে তপু আসছে। এসেই তিন্নিকে চোখ বন্ধ করতে বলে ওর খোঁপায় হাস্নাহেনার মালাটা পরিয়ে দেয় আর হাতে একমুঠো হাস্নাহেনা ফুল।
তিন্নির চোখে পানি চলে আসছে আর এই পানি আটকানোর ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই থাকে.........।