somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই পোস্টটি কেবল মুক্ত চিন্তায় সক্ষম ব্লগারদের জন্য। কাজী রহমতুল্লাহ ভাইয়ের পোষ্টের জবাব।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংবিধীবদ্ধ সতর্কীকরনঃ
---------------------------------------------------------------------------------
আপনার ধর্মচিন্তা ও ধর্মশিক্ষার তুলনায় অহংবোধ বৃহত্তর হলে আপনাকে পোষ্টে ঢুকতে চরম ভাবে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
এটি কোন সাম্প্রদায়িক পোষ্ট নয়।
কেবলমাত্র সুস্থচিন্তা ও মানসিকতা থেকে যুক্তি বোঝার, প্রয়োগের ও খণ্ডনের সদিচ্ছা থাকলেই আপনার মন্তব্যের উত্তর দেয়া হবে।
যে কোন ধরনের অশালীন মন্তব্যকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে কমেন্ট মুছে দেয়া হবে ও "ব্লক" করা হবে।

কাজী রহমতুল্লাহ ভাইয়ের পোষ্ট

ভাই, আমি আপনার প্রশ্নটার উত্তরে যাবার আগে একটু প্রশ্নটাকে বিশ্লেষণ করতে চাই। তাহলে আমাদের আলোচনায় ঢুকতে সুবিধা হবে।

আপনি বলেছেনঃ
কোন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে সম্পর্কহীন সাধারন এক মেষপালক, যে ভ্রমন থেকে পাওয়া লোকায়ত জ্ঞানের সাথে ঈশ্বর ধারনার কুশলী মিশেলে খণ্ডনযোগ্য দৈববাণী তৈরি করেছিল কেবলই নিজ ও নিজ গোত্রের অবস্থান সংহত করতে, আজ ১৪০০ বছর পরেও পুরো পৃথিবী জুড়ে ভিন্ন ভিন্ন ভূখণ্ডে, ভিন্ন ভিন্ন বয়েসের, শিক্ষার, সংস্কৃতির মানুষের কাছে কেন সে এত অনুকরণীয়?

আপনার লেখার প্রথম এই অংশটুকুতে দুইটি বিষয় রয়েছে। তার প্রথমটি হচ্ছে আপনি স্বীকার করে নিচ্ছেন যে মুহাম্মাদ কোন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে সম্পর্কহীন সাধারন এক মেষপালক ছিল। সে ভ্রমন থেকে পাওয়া লোকায়ত জ্ঞানের সাথে ঈশ্বর ধারনার কুশলী মিশেলে খণ্ডনযোগ্য দৈববাণী তৈরি করেছিল এবং সে এটা করেছিলো কেবলই নিজ ও নিজ গোত্রের অবস্থান সংহত করতে।

অথবা আপনি নিজে স্বীকার না করলেও একজন নাস্তিক এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ব্যাপারটাকে দেখবে ধরে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাচ্ছেন। এবং যেহেতু উত্তরটা একজন নাস্তিকের দৃষ্টিকোন থেকে কি আসে তা জানতে চাচ্ছেন, তাই আমিও একজন নাস্তিকের দৃষ্টিকোণ থেকে এর উত্তর দেবার চেষ্টা করব। এবং “সে এটা করেছিলো কেবলই নিজ ও নিজ গোত্রের অবস্থান সংহত করতে” এই অংশটুকুর সাথে পুরপুরি একমত না হয়েও আমিও আপনার এই প্রথম অংশটুকুকে স্বীকার করে নিয়েই সামনে এগিয়ে যাব। কারন আপনার মুল প্রশ্নের আলোচনায় এর প্রভাব থাকবে খুব কমই।

আর পরের অংশটি হচ্ছে আপনার সত্যিকার আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দু। কেন মুহাম্মদ ১৪০০ বছর পরেও অনুকরণীয়। আপনার ভাষায় বললে, “আজ ১৪০০ বছর পরেও পুরো পৃথিবী জুড়ে ভিন্ন ভিন্ন ভূখণ্ডে, ভিন্ন ভিন্ন বয়েসের, শিক্ষার, সংস্কৃতির মানুষের কাছে কেন সে এত অনুকরণীয়?”

আমি আপনার এই প্রশ্নের উত্তর দুই প্রস্থে দিব।
১। মুহাম্মদকে কি আদৌ অনুকরন করা হচ্ছে? হলে তা কতটা?
২। যদি অনুকরন করা হয় বলে আমরা ধরে নেই (যে ভাবে অথবা যতটুকুই হউক), তবে তা কেন করা হচ্ছে?

আমি পোষ্টের আকৃতি বিবেচনায় রেখে এই পোস্টে শুধু প্রথম অংশের উত্তর দেবার চেষ্টা করবো। এবং বাকি অংশ পরের পোষ্টে দিব।

আমার উত্তরঃ
আমার সরলীকৃত উত্তর হচ্ছে মুহাম্মদকে বা তার শিক্ষাকে অনুকরন করা সম্ভব নয় এবং বিচার বুদ্ধি সম্পন্য মানুষ তা করেও না। তবে এই বিষয়টা এতো সহজে প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। একটু বিস্তারিত বলতে হবে।
একটু দেখে আসি কোরআন কি বলে মুহাম্মদকে অনুসরণ করার ব্যাপারে।
‘তুমাদের জন্য নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম দৃষ্টান্ত’ (VERILY, in the Apostle of God you have a good example for everyone) (সুরাহ আহযাব, আয়াতঃ ২১)

বাস্তবিক, একথা অনস্বীকার্য যে কিছু ধর্মপ্রাণ মানুষ চেষ্টা করে প্রতিটি কাজে মুহাম্মদকে অনুসরণ করতে এবং সেটা করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করে। আমার বিশ্যবিদ্যালয়ের এক তাব্লিগী বন্ধুকে দেখেছি অনেক মানুষের সাথে এক থালায় খাবার খেতে। ব্যাপারটা কতটা স্বাস্থসম্মত জিজ্ঞেস করায় জবাব পেয়েছি এটা নবীর সুন্নাত। অস্বাস্থকর কিছু হতেই পারে না।

এখন তর্ক এটা নয় ইহা কোন হাদিস গ্রন্থে আছে কি নাই, কথা হচ্ছে সে জানে নবী এটা করেছেন তাই সে তা করতে চায়। সুতরাং এটা আমি বলতে পারব না যে মুহাম্মাদ কে কেউ অনুসরন করে না বা করতে চায় না। কিন্তু আমি অবশ্যই কিছু বিষয় স্পষ্ট করব যা আমদের একটা ধারনা দিবে, এই অনুকরন বা অনুসরন কতটুকু জেনে বুঝে করা, এবং তার জন্য মুহাম্মদের অবদান কতখানি এবং সেটুকু তাঁর শিক্ষাকে বর্জন করার বিরুদ্ধে কোন হুমকি বা ফ্যাক্টর হতে পারে কিনা।
যদি বুঝতে চাই আমরা মুহাম্মদকে কি কি ভাবে অনুসরণ করি? একজন মুসলমানের উত্তর হবে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত আমরা তাঁর মত করে কাটাতে চাই। এর অর্থ মুসলমানের জিবন যাপন পদ্ধতির পুরোটাই এর মধ্যে পড়তে পারে। এবার চলেন একটু কাটা ছেরা করি।

অনেক কাজ আছে যা আপনাকে করতেই হবে আপনি যে ধর্ম বা গোত্রের হয়ে থাকেন না কেন। যেমন খাওয়ার আগে হাত ধুয়া, বাঘের সামনে পড়লে দৌড় দেয়া, চলার পথ নোংরা হলে পাশ কাটিয়ে যাওয়া, এরকম হাজারো কাজ যা মুহাম্মদের আগেও মানুষ করে এসেছে এবং এখনো করছে এবং এগুলুর প্রচলনে মুহাম্মদের কোন ভুমিকা নাই। কিন্তু এই রকম তাৎক্ষনিক এবং সেলফ ডিটারমিন্ড কাজ মানব জীবনের মুষ্টিমেয় অংশ। তাই আমরা যদিও বলি ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান, আসলে একটি জীবনের প্রতিটি বাঁককে সংজ্ঞায়িত করে তাঁর বিধান সৃষ্টি করা কত বড় কাজ সে সম্পর্কে আমাদের ধারনা নাই। যেমন ধরেন, আমরা হাঁচি দিলে বলি আলহামদুলিল্লাহ, কিন্তু কাশি দিলে কি বলব তা কিন্তু প্রচলিত হয় নি। চুরি করলে হাত কাটতে হবে কিন্তু ধর্ষণের কি সাস্তি তা বলা নাই (আশা করি আপনি যুক্তিবাদি মানুষ হয়ে ইজমা কিয়াস নিয়ে আসবেন না কারন তা মানব সৃষ্টই হয়ে যাবে)।
তারপর ধরেন অনেক কিছু আবার অপ্রয়োজনীয়ও রয়েছে। যেমন ধরেন পায়ু পথে বায়ু নির্গত হলেও নিজেকে পুনরায় পবিত্র করার বিধান হল অজু নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যা ওই এরিয়াকে কভার করে না। অথবা পানি না পাওয়া গেলে শরিরে মাটি ঘষে শরির পবিত্র (?) করা।
যা হোক আমাদের কাজ বিধানের সমালোচনা নয় বরং বিধান মানা হয় কি না তা খুঁজে দেখা।
আবার অনেক কাস্টমস আছে যেগুলো মুহাম্মদ আসার আগে থেকেই প্রচলিত ছিল এবং মানুষ ধর্মীয় কারনে নয় বরং বংশ পরম্পরায় পালন করে আসছে। যেমন সারকামসিজনের ব্যাপারটা। এটা অনেক আগে থেকেই প্রচলিত। তেমনি মক্কাকে ঘিরে উপাসনা, ইহুদিদের ‘Yom Kippur’ থেকে রোজা রাখার প্রচলন ইত্যাদি।

এইবার আসেন এমন কিছু কাজের ব্যাপারে যা যে কোন ভাবেই করা যায়, আমরা কেবল একটা চয়েজ ইনহেরিট করি। যেমন ধরেন প্রস্রাব আপনি দারিয়ে করতে পারেন আবার বসে করতে পারেন। আমরা ইনহেরিট করেছি বসে করব (যদিও তা কতটুকু মানা হয় বা কারা মানে তা আপনি আমি সবাই জানি)। আবার আপনি যে কোন দিকে পা দিয়ে ঘুমাতে পারেন। আপনার খাটে ঘুমানোর জন্য একটা এক্সিস বরাবর আপনার ফ্রীডম আছে। তাই পূর্ব পশ্চিমে খাট রাখা হলেও আপনার পশ্চিমে পা দেয়া এড়ানো কোন ব্যাপার না। তাই এটাও সংস্কার ছাড়া কিছুই নয়।
যেমন আমার এক হিন্দু বন্ধুকে দেখেছি, গল্পে ডুবে থাকা অবস্থায়, আমাদের সাথে পথ হাটতে গিয়েও যদি কখনো কোন মন্দিরের সামনে দিয়ে যেত, ওর মাথা অবচেতন ভাবেই নুয়ে পরত এবং সে হাত কপালে ঠেকিয়ে একটা প্রনাম ঝেরে দিত। তো এগুলোর ব্যাপারে আমি বলব আমরা অভ্যাশ, সংস্কার ইত্যাদির বশবর্তী হয়েই কাজগুলু করি, যা আবার মুহাম্মদের প্র্যাকটিস বলেও চালানো যায়।

আমি চার বছর বয়সে বাবার সাথে মসজিদে যেতাম। আমার কাছে নামাজের কি অর্থ, মুহাম্মদের আদর্শের কি অর্থ তখন ছিল? আমার কেবলি মনে হয়েছে এটাই নিয়ম। আমার বাবা করেন, সবাই করেন আমিও করছি। আমি প্রশ্ন করতে শিখেছি অনেক পরে। দুঃখের বিষয় আমাদের বিশাল এক অংশ কখনো প্রশ্ন করার সুযোগ পায় না। জীবন চাকা ঠেলতে গিয়ে একসময় আবিষ্কার করে সূর্য ডুবন্ত। অল্প কিছু ভাগ্যবান যদিও প্রশ্নটা খুঁজে পায়, নরক ভয়কে অতিক্রম করে সত্যকে স্বীকার করতে সাহস করেনা। তাই নিরাপদ মনে করে পূর্ব পুরুষের ধারনাকে আঁকরে ধরে রাখে। তাই গনহারে এই যে আচার অনুষ্ঠান পালন এই গুলাকে কঠিন ধর্মীয় রিচুয়াল গুলু থেকে আলাদা করেই বললাম। এবং আমার জুরালো মত এগুলো যতটা ধর্মীও তার চেয়েও বেশী সংস্ক্রিতিক। নামাজ পরে না কিন্তু রোজা রাখে, পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ আদায় করে না কিন্তু ঈদের ওয়াজিব মিস করেনা এমন মানুষই আমি বেশি দেখি। তাই আপনি দ্বিমত করতে চাইলে যুক্তি দেখাবেন আশা করি।

এবার আসেন আমরা মুহাম্মদের সিরাত থেকে কি অনুসরন করতে পারি তা এক পলক দেখে আসি।
যদিও কোরআন বলছে, ‘Most examplary character (33:21) (68:4)’, কিন্তু এই কোরআনই আবার বলছে, মুমিনদের জন্য সরবোচ্চচ চারটি বিবাহ যদিও মুহাম্মদের জন্য এই লিমিট শিথিল করা হয়েছে।
O Prophet! We have made lawful to thee thy wives to whom thou hast paid their dowers; and those whom thy right hand possesses out of the prisoners of war whom God has assigned to thee; and daughters of thy paternal uncles and aunts, and daughters of thy maternal uncles and aunts, who migrated (from Makka) with thee; and any believing woman who dedicates her soul to the Prophet if the Prophet wishes to wed her; - this only for thee, and not for the Believers (at large); We know what We have appointed for them as to their wives and the captives whom their right hands possess; - in order that there should be no difficulty for thee. And God is Oft-Forgiving, Most Merciful. (33:50)

হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি,খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে।কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল।এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে।মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিতকরেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। (33:50)


সুতরাং এক্ষেত্রে অনুকরন করার উপায় নাই। এবার আসেন চার বিবাহের কথায়। আমার ওই তাব্লিগি বন্ধুটি কিন্তু চার বিবাহ করবে না কারন এটা তার নৈতিকতাকে আহত করবে। এই উদাহরন থেকে আমি বুঝাতে চাইছি যে মানুষ কি করবে কি করবে না তার জন্য তার মূল্যবোধ অনেক বেশি দায়ী।
তারপর আসেন concubine (right hand possessions) রাখার কথা। এটা এখন কয়জন অনুসরন করে বলেন? না করলে কেন করে না? তারপর ধরেন পালক পুত্রের বৌকে তালাক করিয়ে নিজে বিয়ে করা, এটাই বা কয়জন অনুসরণ করে? আমীতো মণে করি এই এক্সাম্পল যে কোণ সমাজে রেয়ার। কিন্তু তিনি বলেছেন এটা তিনি করেছেন মোমিনদের বাধা দূর করতে, যেন তারা পালক ছেলের বৌকে বিয়ে করতে কখনো বাঁধা অনুভব না করে।
When thou saidst to him whom God had blessed and thou hadst favoured, 'Keep thy wife to thyself, and fear God,' and thou wast CONCEALING WITHIN THYSELF what God should reveal, FEARING OTHER MEN; and God has better right for thee to fear Him. So when Zaid had accomplished what he would of her, THEN WE GAVE HER IN MARRIAGE TO THEE, so that there should not be any fault in the believers, touching the wives of their adopted sons, when they have accomplished what they would of them; and God's commandment must be performed. ( 33:37)
আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন; আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তাকে যখন আপনি বলেছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর।আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করাউচিত। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে। ( 33:37)


কথা হচ্ছে, স্বয়ং আল্লাহ স্বপ্রনদিত হয়ে নবীকে দিয়ে এমন বিতর্কিত কাজ করিয়ে উদাহরন সৃষ্টি করালেও মানুষ কিন্তু সেটাকে খুব বেশি গ্রহন করেনি।
তারপর ধরুন, দাসীর ঘর থেকে যখন কোন মমিনের ঔরসে কন্যা সন্তান জন্ম নেয়, এবং সেই কন্য সাবালিকা হলে তার সাথে সেক্স করা যাবে না এই বিষয়টা প্রচলন করেছেন ওমর এবং তা মুহাম্মদের ম্রিত্যুর পর। তাহলে সে একদিকে যেমন যা করে গেছেন তার সবই আমরা অনুসরণ করি না। অন্যদিকে সমাজের অনেক কিছু রয়েছে যে ব্যাপারে তার দৃষ্টিপাত করার সুযোগ হয়নি।

এইবার আসেন ধর্মীয় রিচুয়াল গুলোর ব্যাপারে। এখানেও আমি বলব মুহাম্মাদ এমন কিছু ব্যাপার ঢুকিয়েছেন, যা কোন চিন্তাশীল মানুষ নয় বরং একজন মেষপালকের দ্বারাই সম্ভব। আপনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বেপারটাই ধরেন। এটা একটা অতিমাত্রায় বিবেচনাহীন আইডিয়া। একজন মানুষের পক্ষে সাত বছর বয়সের পর হতে প্রতিটি দিন এটা করা কি পরিমান কঠিন, আমি আপনাকে অনুরোধ করব উপলব্ধি করার চেষ্টা করতে। আমি আমার অনেক নিকটজনকে দেখেছি তারা এক ওয়াক্ত নামাজ কাজা হলে হাজার হাজার বছর নরকবাসের ভয়ে ভীত কিন্তু তাদের নামাজ মাঝে মাঝে মিস হয়ে যায়। যারা সারা দিন পথে ঘাঁটে ক্ষেতে খামারে কাজ করে তাদের কথা বাদই দিলাম। আপনার কি মনে হয়, সাত বছরের পরে ইচ্ছাকৃত ভাবে এক ওয়াক্ত নামাজ ছেরে দেয় নাই এমন লোকের সংখ্যা কত হতে পারে? আর যারা ছেরেছেন তারা কেন ছেরেছেন? তারা কি মুহাম্মদকে ফলো করতে চান না? করেন না নাকি করতে পারেন না? আপনি উত্তর যাই দেন, End result is, Muhammad is not being followed.

সুস্থ বিচার বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এখন আর মুভিং স্টার দেখে বলে না ওইতো সয়তানকে ঢিল ছোড়া হয়েছে। যারা আজ দোররা মারে অথবা দুর্বলদের উপর পাথর নিক্ষেপ করে তারা যে ধর্ম পালন করতে এটা করে তা কিন্তু নয়। বরং দেখেবেন সমাজে নিপিরন আর আধিপত্যের ধারাটা অবিচল রাখা তাদের কাছে হয়ে উঠে মুখ্য বিষয়। তাই ধর্মের যেই অংসটুকু হাতিয়ার হিসেবে বেব্যহার করা যায় সেটা টিকে আছে। যেমন গরিবের হাতিয়ার ‘আল্লায় বিচার করবে’, তাই তারা এই আল্লাহকে রক্ষা করতে চাইবেই।
এখন কথা হচ্ছে তাহলে কি কেউ তাকে ফলো করে না? তাহলে কিভাবে একটা ধর্ম এতদিন টিকে আছে এবং তা আপাত ছড়িয়ে পড়ছে (অনেকের মতে এটা এখন ক্ষয়িষ্ণু)?

আমি বলব বেশির ভাগ মানুষ ধর্মকে একটা নিজস্য মানবিক মূল্যবোধের মুড়কে মুড়িয়ে ফেলে এবং তার কাছে ধর্মটা তার সংজ্ঞায় যেরকম হউয়া উচিৎ, সে ওই রকম একটা প্রলেপ দিয়ে ধর্মের মৌলিক কিছু বিষয় মেনে নিয়ে সম্পূর্ণই একটা অন্যরকম কিছু একটা বানিয়ে ফেলে। এবং উইশফুল থিঙ্কিং থেকে ধরে নেয় ধরমটা এরকমই হবে। তারা পুরোপুরি ধর্ম জানেও না এবং প্রয়োজনও মনে করে না। কত টাকা ফিতরা দিতে হবে তা জানানোর জন্য তো ইমাম সাহেব ই আছেন। এমন কি আমদের শিক্ষিত যুব সমাজ এর ব্যতিক্রম নয়। আমি আমার অনেক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছি তার কোন বিধর্মী বন্ধু আছে কি না। তারা বলেছে আছে। কিন্তু ইসলাম তা সমর্থন করে না (৫;৫১) এটা তারা জানে না এবং আমি বলার পরও মেনে নিতে চায় নি। তাহলে তারা ধর্ম দিয়ে কতটা চালিত আর বিবেক দিয়ে কতটা আশা করি অনুমান করবেন।

উপরের এতো গুলু কাঁটা ছেরার পরও কিছু মানুষ পাওয়া যাবে যারা কিছু ব্যাপারে আক্ষরিক ভাবেই মুহাম্মদকে ফলো করে বা করতে চায়। কেন? প্রয়োজন মনে করলে আমি আরেকটি পোষ্ট দিয়ে তা আলোচনা করার চেষ্টা করতে পারি। আপনার মতামত জানালে ভালো লাগবে

পরিশেষে বলতে চাই, সত্য যদি কেউ স্বিকার নাও করে, আমি যদি বুঝি তা সত্য আমি সেটা মেনে নিব। কিন্তু একটা মিথ্যা আমি যদি মনে করি তা মিথ্যা, তবে দুনিয়ার সবাই তা মানলেও আমি মানব না। লজিক আমাকে এটাই শিখিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ৮:১৭
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×