somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার মা

১৩ ই মে, ২০০৯ বিকাল ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মা মোবাইল ব্যবহার করছেন ১৯৯৭ সাল থেকে। তিনি অত্যন্ত স্মার্ট শিক্ষীতা ও সুন্দরী সোশালজির প্রফেসর ছিলেন এবং পি এইচ ডি হোল্ডার।

অনেক বার চেষ্টা করেও তাকে কি করে এস এম এস করতে হয় তা শেখাতে পারিনি। তিনি আলকেটেল সেট ইউজ করতেন প্রথম দিকে। ওতে এস এম এস করা খুব ঝামেলার ছিল তাই ভাবলাম অনেক শেখাবার পরও এস এম এস করতে না পারার কারন আছে সেট টাই যত নষ্টের মুল। ;)

বছর দুয়েক আগে তাকে একটা নোকিয়া সেট কিনে দিলাম কারন তাতে এস এম এস করা সহজ। কাগজে কলমে লিখে শেখালাম কি করে েস এম এস করতে হয়। কিন্তু কোন লাভ হলো না। যে কার সেই!! তো ভাবলাম উনি পি এইচ ডি হোল্ডার স্মার্ট লুকিং প্রফেসর হলে কি হবে এস এম এস করা তাকে দিয়ে হবে না। তিনি ইমেল করতে পারেন বা অন লাইনে আমার সাথে ইয়াহু বা স্কাইপে চ্যাট ও করতে পারেন, সব কাজ যে সবাই জানবে এমনত নয়..তাই এস এম এস করতে না পারাকে মাফ করে দিলাম।;)

গত মাসে কাজের চাপে অনেকটা চ্যপ্টা হয়ে গেছিলাম। রোজ কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত ১২টা, ১টা, ২টা, ৩টা ও বেজেছে কখনো কখনও/:)

এমনই এক ব্যস্ত দিনে সকালে সবে মাত্র কাজ শুরু করেছি ... কাজের চাপে পানি খাওয়র বা কথা বলার ও সময় পাচ্ছিলাম না। এমন সময় মার মোবাইল থেকে ম্যসেজ পেলাম লেখা..." I love you" :-*

আমার তো আক্কেল গুরুম!!!:-* যে মাকে আমার হাজার চেষ্টার পরেও এস এম এস করা শেখাতে পারিনি সে এস এম এস করল কি করে, তাও আবার এই কথা "i love you' জীবনেও সে আমাকে বলেনি। আমাদের দেশে তাদের যুগের খুব কম বাবা মা ই ঐ কথাটা ছেলে মেয়েদের বলেন, তারা ঐ কথাটি বুকে ধারন করে রাখেন কিন্তু মুখে বলেন না। /:)

তাই যে কথাটা আমার মনে প্রথম এলো সেটা হলো "মা আমার মারা যাচ্ছেন নাতো?" হয়তো মারা যাবার আগে শেষ বারের মত এস এম এস করার চেষ্টা করে আমাকে বলার চেষ্টা করেছেন তিনি আমাকে কতটা ভাল বাসেন। আহ্ মহা চিন্তায় পরলাম। সেই মূহুর্তে ফোন করাটা অত্যন্ত জরুরি মনে হলো। কিন্তু আমি অন্য একটা জায়গাতে আরেক জনের আফিসে এমন একটা জরুরি কাজে আটকে ছিলাম যে ফোন করার সুযোগ পেলাম না... পরিস্থিতি ছিল না ফোন করার মত। তাই মহা চিন্তা নিয়ে উত্তর দিলাম েস এম এস দিয়ে " I love you too very very much even more than you ever know. are you ok? is everything ok with you?"

কোন উত্তর পেলাম না। সারাদিন অসহ্য টেনশনে দিন গেল। বাড়ি ফিরতে দেরি হলো বরাবরের মত। বাড়ি ফিরতে ফিরতে অনেক অশুভ কথা মনে এলো। খারাপ খরব টা পথে নিতে চাইলামনা তবে মনে মনে রেডি হলাম যেকোন খারাপ খবর শোনার জন্য।

বাড়ি ফিরেই ফোন কারলাম মাকে।

মা আমার হাসি মুখে ফোন তুলে হ্যলো বলতেই মনে হলো বুকের ভেতের ১০০০০ কবুতর উরাল দিল মুক্তি পেয়ে। তার পর হেসে হেসে সে যা বলল তা হলো...
" আমিত জানি তুমি আমার এস এম এস পেয়ে টেনশনে পরেছ। আজ সকালে ড্রাইভার খোকন কে ডেকে তার কাছে েস এম এস করা শিখলাম। আমার বন্ধুরা সবাই েস এম এস করতে পারে...সবাই আমাকে এস এম এস করে আমিই শুধু পারিনা....খুব লজ্জা লাগে তাই খোকন কে ডেকে বললাম এই আমাকে এস এম করা শেখা। আর শেখার পরেই প্রকটিস করার জন্য সবাইকে এস এম এস করলাম, তো তোমাকেও করলাম চমকে দেবার জন্য। তুমিত ভয় পেয়ে গেছ হা হা হা ...সারপ্রাইজ দিলাম তোমাকে, আর কাল ছবি পাঠান শিখে আবার তোমাকে ছবিও পাঠিয়ে আরেক সারপ্রইজ দেব।":-*:-*:-*:-*

তো এই আমার মা...বুঝেন...এখনও সে বাচ্চা মেয়েটাই রয়ে গেছে, তার জন্মদিনে ভোর বেলা ফোন না করলে ই-কার্ড না পাঠেলে সে গাল ফুলিয়ে বসে থাকে, আমার জন্মদিনে আমার চাইতে সেই বেশি এক্সাইটেড থাকে....। আরো অনেক তার এমন ধরনের ছেলে মানুষির গল্প আছে কিন্তু তার ছেলেমানুষির মাঝ দিয়ে আমি জেনে যাই সে আমাকে কতটা ভাল বাসে :P
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০০৯ বিকাল ৫:০৫
৩৭টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×