"এক নবদম্পতি গাড়িতে করে যাচ্ছিল। টঙ্গীর দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মোজাম্মেল দলবলসহ গাড়ি আটক করে গাড়ির ড্রাইভার ও নববিবাহিত তরুণীর স্বামীকে হত্যা করে। তারপর মেয়েটিকে সবাই মিলে ধর্ষণ করে। মেয়েটির রক্তাক্ত শরীর ৩ দিন পর টঙ্গী ব্রিজের নিচে পাওয়া যায়।....
মেজর নাসেরের হাতে ধরা পরার পর মোজাম্মেল বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি আপনাকে ৩ লাখ টাকা দেব বিষয়টা সরকারী পর্যায়ে নেবেন না স্বয়ং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমি ছাড়া পাব, আপনি পড়বেন বিপদে! আমি তুচ্ছ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকে জড়াতে চাই না।
মেজর নাসের বললেন, এটা তুচ্ছ বিষয়?? মোজাম্মেল জবাব দিল না। সে ঊদাস চোখে তাকিয়ে থাকলো।
মেজর নাসের বললেন, আমি অবশ্যই তোমাকে ফাঁসিতে ঝোলাব। তোমার ৩ লাখ তুমি গুহ্যদ্বারে ঢুকিয়ে রাখো। মোজাম্মেল বলল, দেখা যাক।
****
বঙ্গবন্ধু ঘরে ঢোকা মাত্রই মোজাম্মেলের বাবা ও ২ ভাই বঙ্গবন্ধুর পা জড়িয়ে ধরলেন। টঙ্গী আওয়ামী লীগ সভাপতিও পা ধরার চেষ্টা করলেন কিন্তু পা খুঁজে পেলেন না। পা মোজাম্মেলের আত্নীয়স্বজনের দখলে।
বঙ্গবন্ধু বললেন, ঘটনা কি বলো? টঙ্গী আওয়ামী সভাপতি বলল, আমাদের মোজাম্মেলকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে মেজর নাসের তাকে ধরেছে। বলেছে, ৩ লাখ টাকা হলে ছেড়ে দেবে।
বঙ্গবন্ধু: মিথ্যা মামলাটা কি??
মোজাম্মেলের বাবা কাঁদতে কাঁদতে বললো, খুনের মামলা লাগায়ে দিছে।
টঙ্গী আওয়ামী সভাপতি: এই মেজর আওয়ামী লীগ শুনলেই তারাবাতির মত জ্বলে ওঠে। সে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে, টংগীতে আমি কোন আওয়ামীলীগের বদ রাখব না । আমি নিজেও এখন ভয়ে অস্থির থাকি টংগীতে থাকি না, ঢাকায় চলে এসেছি।
বঙ্গবন্ধু বললেন, কান্দিস না। কান্দার মতো কিছু হয় নাই আমি এখনো বেঁচে আছি মরে যাই নাই, ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু মোজাম্মেলকে তাৎক্ষণিকভাবে ছেড়ে দেওয়ার আদেশ দিলেন। মেজর নাসেরকে টঙ্গী থেকে সরিয়ে দেওয়ার জরুরী নির্দেশও দেওয়া হলো।
মোজাম্মেল ছাড়া পেয়ে মেজর নাসেরকে তার বাসায় পাকা কাঁঠাল খাওয়ার নিমন্ত্রণ করেছিল।
সেই আগের মতই গোঁড়ায় গণ্ডগোল , মোজাম্মেল এর ছিল বাপ । আর হায়েনাদের আছে মা ।
দেয়াল- হুমায়ুন আহমেদ- পৃষ্ঠা-৮৬ .
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:০৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




