somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কান্ডারি অথর্ব
আমি আঁধারে তামাশায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূণ্যতা থেকে শূণ্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙ্গলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।

চাই গ্রীন ঢাকা, ক্লীন ঢাকা

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





“কিলাইয়া হাকাইয়া ডাকাত মারিলে দেশে শান্তি মিলিবে” ছোট বেলায় পর্যায় ক্রমিকভাবে পরিমাপকের ধাপগুলো মনে রাখার জন্য সহজ কৌশল হিসাবে এই বেদ বাক্যটি রপ্ত করেছিলাম। ডাকাত মারা হয়েছে অনেক, কিন্তু আদৌ কি দেশের শান্তি মিলেছে কিনা সেটা এক বিপন্ন বিস্ময় ! এই কিলানো হাকানো শিখতে শিখতে আমাদের অবস্থা এখন এমন পর্যায় এসে দাঁড়িয়েছে, আমরা মারামারি ছাড়া আর কিছুই বুঝিনা।

দেশে হিজড়া সম্প্রদায়কে আমরা অনেকেই ঘৃণার চোখে দেখি। এর কারণ অবশ্য কিছু অসাধু হিজড়া ব্যবসায়ী। যারা হিজড়া না হয়েও হিজড়ার বেশ ধরে চাঁদাবাজি করে তাদের ব্যবসা চালায়। আবার কিছু আছে যারা সুস্থ মানুষকে জোর পূর্বক লিঙ্গান্তর করে হিজড়া বানিয়ে ব্যবসার জাল ফেঁদে চলেছে। এইজন্য কতিপয় অসাধু হাতুড়ে ডাক্তার আবার তাদের ক্লিনিক ফেঁদে বসেছে লিঙ্গান্তর করার লক্ষ্যে। ব্রাজিলে লিঙ্গান্তর একটি জনপ্রিয় শিল্প। যা থেকে তারা প্রচুর রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে চলছে লিঙ্গান্তরের নাম করে একটি চক্রের হিজড়া উৎপাদনের কৌশল। যাতে করে তারা নির্বিচারে চাঁদাবাজি চালিয়ে যেতে পারছে। একেতো এই অবহেলিত সম্প্রদায়কে আমরা এমনিতেই পুনর্বাসন করতে না পেরে এবং তাদেরকে পরিপূর্ণ নাগরিক সুবিধা দিতে নাপারার কারণে টুকটাক কিছু আর্থিক ভিক্ষা দিয়েই নিজেদের মহানুভবতার পরিচয় দেয়া থেকে বিরত রাখতে পারিনা, তার উপর এখন তাদের উৎপাত আর তেমন সহ্যও করতে পারিনা; আর ঠিক এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে সক্রিয় কিছু অসাধু চক্র। অথচ এদের কারণে এখন সমাজের আসল হিজড়ারাও পড়েছে বিপাকে।



সেদিন দেখলাম এক চাইনীজ রেস্তোরার বাইরে তিন জন হিজড়াকে একটি স্বনামধন্য চাইনীজের কর্মীদের দ্বারা বেদম মার খেতে। দশ বারো জন মিলে তিন জন হিজড়াকে লাঠি দিয়ে মারছে। ঘটনার সূত্রপাত হয় চাইনীজে বিয়ের একটি অনুষ্ঠান চলছিলো। তো চাইনীজের গেটে জামাই বাবাজী দাঁড়িয়ে আছে ফিতা কেটে ভেতরে প্রবেশের জন্য। সুন্দরী মেয়েরা এক একজন সবাই সৌন্দর্যের ডালায় শোভিত হয়ে ফিতা ধরে দাঁড়িয়ে আছে, জামাই বাবাজীর সাথে দেনদরবার হয়ে গেলেই ফিতা কাটার অনুমতি দেয়ার আশ্বাস নিয়ে। এরই মাঝে সব গন্ডগোল পাকিয়ে বসলো হিজড়ারা। এরা এসে কিছু সাহায্য দাবী করাতে এক কথায় দুই কথায় ব্যাস চাইনীজের ভেতর থেকে দশ বারো জন কর্মী বের হয়ে এসেই লাঠি দিয়ে হিজড়াদের মারতে শুরু করে দিল। এরা অবশ্য প্রথম আঘাতে দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সেই পালানো সফলতার মুখ দেখেনি। স্বভাব সুলভ ভাবেই উৎসুক জনতার উপস্থিতি বেড়ে গেলো। কাজের কাজ যা হলো হিজড়া তিন জনের অবস্থা নাজেহাল। এরপরের ঘটনা স্বভাব সুলভ ভাবেই উপস্থিত জনতা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে ঘটনার পক্ষে বিপক্ষে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দেয়া শুরু করে দিল। কারও মতে চাইনীজ তার সুনাম ধরে রাখার জন্য নিরাপত্তার খাতিরে কাজটি ঠিকই করেছে। আর কারও মতে কাজটি মোটেও ঠিক হয়নি। এত টাকা খরচ করে এরা বিয়ে করতে পারে, আর সামান্য কটা টাকা এদের দিয়ে দিলেই ল্যাঠা চুকে যেত। এতে করে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কিবা আছে। নতুবা চাইনীজের কর্তৃপক্ষও এদের কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করে দিতে পারতো।

কিন্তু ঐযে আমাদের মাঝে কিলানো হাকানোর প্রবণতা কাজ করে। তাই কথার চেয়ে আমরা মারাটাকেই বেশী কাজের কাজ বলেই মনে করি। কিছুদিন আগে রাজন নামের যে শিশুটি জনতার মার খেয়ে মারা গেলো সেটা তারই একটি উদাহরণ। রাজনকে যারা মেরেছিলো, তাদের সাথে এই চাইনীজ কর্মী কিংবা চাইনীজে আসা বিয়ের লোকজন আর উৎসুক জনতার মাঝে কোন পার্থক্য দেখিনা। খুব সম্ভবত আইন তার নিজস্ব গতিতে চলেনা এবং আইনের প্রতি আস্থা না থাকাটাই আমাদেরকে এমন মারমুখী করে তুলেছে। সে যাই হোক, আমি ভাবি যে একজন চোর, ডাকাত কিংবা পকেটমারকে মারার মাঝে কোন সার্থকতা নেই। কারণ যারা দেশের উচ্চ পর্যায় বসে নির্বিচারে চুরি নয় বরং ডাকাতি করে যাচ্ছে, তাদের ব্যাপারেতো কবি দিব্যি নীরব ভূমিকা পালন করে আসছে।

পোষ্টের বিষয়বস্তু এখানেই শেষ নয়। সামনেই আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন যারাই এই নির্বাচনে জয়ী হবেন আশা রাখি দেশের উন্নয়নে তারা তাদের অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। অবশ্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়েও আশাবাদী ছিলাম খুব। উত্তর দক্ষিণ মিলিয়ে পেয়েছি দুইজন মেয়র। তাদের কথায় ও কাজে মিল কতটুকু সেটাই এখন দেখার বিষয়। নির্বাচনের আগে ঝাড়ু হাতে অনেককেইতো দেখেছি কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ঝাড়ু দেয়ার কার্যক্রম কতটা সফল হয়েছে বা হবে সেটাই দেখার বিষয়। নির্বাচনের আগে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, প্রতিটি পরিবারের জন্য আবাসন সমস্যার সমাধান, উন্নতমানের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি আরও অনেক প্রতিশ্রুতিই আমরা পেয়েছিলাম।

দেশ সুপার সনিক গতিতে এগিয়ে চলছে এইটা অত্যন্ত গর্বের বিষয় আমাদের সকলের জন্য। ঢাকা শহরে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। চলছে মেট্রো রেল তৈরির কাজ। এইজন্য অবশ্যই হৃদ্যতা পূর্ণ সাধুবাদ। কিন্তু আমার বিবেচনায় ঢাকায় বিরাজমান অসংখ্য সমস্যার মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায় তিনটি অসঙ্গতি চোখে পড়ার মতো হয়েও সকলের অগোচরে রয়ে যায়।



আজিমপুর, কার্জন হল, নীল ক্ষেত, কাওরান বাজার, ফার্মগেট, রমনা জুড়ে যেসব বিস্তীর্ণ ফুটপাথ রয়েছে, সেখানে বসবাস করছে বহু ভ্রাম্যমাণ দরিদ্র মানুষ। প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার মানুষ পলিথিন টাঙিয়ে খোলা আকাশের নীচে ঢাকার বিভিন্ন ফুটপাথে বসবাস করছে। এদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা সবই রাস্তায়। রাজধানীতে মাথাগোঁজার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েই আশ্রয় নিচ্ছে খোলা আকাশের নীচে। পলিথিন টাঙ্গিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে ফুটপাথ, লঞ্চ বা ফেরির টার্মিনালে। রেলস্টেশন, বাসস্টেশন, মার্কেট প্লেস, নির্মাণাধীন ভবনের পাশে বা বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও কবরস্থানের পাশেই গড়ে উঠছে তাদের জীবন পদ্ধতি। ঢাকা শহরে বাইরে থেকে আসা এসব ভাসমান লোকের সংখ্যা দিন দিন শুধু বাড়ছেই। গ্রাম থেকে অনেক নিঃস্ব মানুষ যারা এলাকায় কর্মসংস্থানে ব্যর্থ হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। ভাসমান এসব মানুষের তালিকায় রয়েছে নারীপ্রধান কিছু পরিবার। বিশেষ করে যেসব নারীর স্বামী মারা গেছে অথবা ছেড়ে চলে গেছে; সেসব মহিলা তাদের সন্তানদের নিয়ে ফুটপাথে আশ্রয় নিচ্ছে। আবার অনেকে রয়েছে যারা পরিবার-পরিজন বিচ্ছিন্ন। এসব লোকের পরিবারের সঙ্গে কোন প্রকার যোগাযোগ নেই। এ তালিকায় অনেক মহিলা আছেন যারা অন্যের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে, যাওয়ার কোন জায়গা না থাকায় আশ্রয় নিচ্ছে ফুটপাথে। খোলা আকাশের নিচেই চলছে তদের বসবাস। মূলত, গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান, যাদের কোন আয়ের ব্যবস্থা নেই, নদী ভাঙ্গনে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব তারাই মূলত ছুটে আসছেন রাজধানীতে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, রাস্তায় বিয়ে হয়েছে, ছেলেমেয়ে হয়েছে এমনও আছে। আর পরিবার-পরিজন নেই তাদের সংখ্যা কম নয়। ঢাকায় এমন কোন রাস্তা নেই, যেখানকার ফুটপাথে ভাসমান মানুষ ঘুমায় না। এমনকি রাজধানীর প্রতিটি ওভারব্রিজ ও ফ্লাইওভারেও মানুষ রাত কাটায়। নদীভাঙ্গন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি ও গ্রামে কোন কাজ না পাওয়ায় মানুষ শহরে বিশেষ করে ঢাকায় এসে ভিড় করে।

যদিও শোনা যাচ্ছে ঢাকার ধলপুরে পথবাসীদের জন্য মাত্র দুই কাঠা জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে কিন্তু এতটা কতটা যৌক্তিক সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। এই উদ্যোগ আরও বৃহৎ পরিসরে নেয়া উচিৎ। যদিও দেশের দারিদ্রতা বিমোচন করা সবার আগে জরুরী। এছাড়াও এইসব পথবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ফলে ভোটও দিতে পারবেন এই শ্রেণীর মানুষ। তবে ভোট দেয়ার চেয়ে বড় বিষয় এদের বেঁচে থাকার জন্য স্বাবলম্বী করে তোলার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যদিও নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে দরিদ্র এই জনগোষ্ঠীদের জন্য পুনর্বাসন করাটা দূরুহ কাজ বলে মনে হতে পারে কিন্তু একেবারেই অসম্ভব নয়। ঠিক একই ভাবে বনানী, তেজগাঁ, কমলাপুর, বিমানবন্দর রেলষ্টেশন এবং রেল লাইনের দুই পাশের এলাকা জুড়ে আরও ভয়াবহ অবস্থা বিরাজমান। এসব স্থানেতো বাজার ঘাট পর্যন্ত বসে থাকে। এইসব বস্তি জুড়ে চলে অবাধে মাদক ব্যবসা। কিন্তু প্রশাসন আজও পর্যন্ত নির্বিকার। আছে অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক দলের অফিস। এইসব থেকে পরিত্রানের উপায় একটাই পুনর্বাসন করে উচ্ছেদ অভিযান চালানো। এই ক্ষেত্রে দরকার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ এবং আর্থিক বিনিয়োগ। পাশাপাশি এদের জীবনমান উন্নত করতে দরকার বেশকিছু সমন্বিত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ।



দ্বিতীয় অসঙ্গতিটি, দূর করতে যদিও তেমন কোন অর্থ কিংবা চক্রের হাতে পড়তে হবেনা তথাপি প্রশাসনের উদাসীনতা খুব চোখে লাগে। আগারগাঁ, শেওড়াপারা, মিরপুর দশ, শুক্রাবাদ, কলাবাগান বিজয় নগর, মালিবাগ, মতিঝিল এর মতো শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে উন্মুক্ত অবস্থায় রাখা বড় বড় আবর্জনার কন্টেইনারগুলো। এগুলো যেমন নানা রকম ভাইরাস ছড়িয়ে অসুখ বিসুখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তেমন পথচারীদের চলাচলকে করে তুলেছে দুর্বিষহ, দূষিত করছে পরিবেশ, বাড়িয়ে তুলছে যানজট। এই নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের ভূমিকা রহস্য জনক।



তৃতীয় অসঙ্গতিটা, খুবই মর্মস্পর্শী। অনেকটা হিজড়া সম্প্রদায়ের মতো অবহেলিত। যে কারণে পোষ্টের শুরুতেই হিজড়া সম্প্রদায় সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। পুরো ঢাকা জুড়ে এখন হিজড়া যৌন কর্মীদের বিচরণ। মানিক মিয়াঁ এভিনিউ, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, শ্যামলী, প্রেস ক্লাব, হাই কোর্ট, রমনা পার্ক, কাকরাইল, মালিবাগ, মিরপুর সবখানেই স্বাভাবিক যৌন কর্মীদের পাশাপাশি চলছে হিজড়াদের রমরমা ব্যবসা। সাথে যুক্ত হয়েছে আবাসিক হোটেলের নাম করে কিছু যৌন পল্লী। যেখানে অবাধে চলে যৌন কার্যক্রম। এসব হোটেলের রুম ভাড়াও ঘন্টা ও দিন হিসেবে পাঁচশত থেকে হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। দেখা যায় হোটেলে কোন মানুষ না থাকলেও রাত বৃদ্ধির সাথে সাথে যৌন কর্মী এবং তাদের কাস্টমারদের ভীর বাড়তে থাকে। তাছাড়া আছে বনানী, গুলশান এবং হাতিরঝিলে অভিজাত যৌন কর্মীদের আনাগোনা। রাত যত গভীর হয় রাজপথে নেমে আসে এইসব অভিজাত যৌন কর্মীরা। এদের পোশাক আশাক হিন্দি সিনেমার নায়িকাদেরকেও হার মানায়। সে যাই হোক, যৌন পেশা অত্যন্ত আদিম এক পেশা। একে হয়ত চাইলেও বন্ধ করা সম্ভব হয়ে উঠবে না। তবে উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হয়ত করলে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে। হয় এদের জন্য বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করে দিতে হবে নতুবা কোন স্থায়ী বাসের জায়গা করে দিতে হবে। কিন্তু সামাজিক মূল্যবোধ এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ তাতে বাঁধা। আর এও সত্যি যদি বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করেও দেয়া হয় সবার চাহিদা এক নয়। যাদের চাহিদা বেশী তারা আবারও পথে নামবে। কিন্তু এভাবে যত্রতত্র পথে নামাটা অন্তত যদি বন্ধ করা যেত তবে ভাল হতো। নতুবা বোরকাকে আশ্রয় করে যেসব হিজড়া সম্প্রদায় যৌন কর্মী সেজে মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে তাদের হাত থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ৬০১ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করে। চলতি অর্থবছরে উন্নয়নমূলক খাতে মোট ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ১৪৪ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের প্রায় ৭১ শতাংশ। বাজেটে ব্যয়ের খাতগুলোর মধ্যে নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ, পানি, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং মশক নিধনসহ সেবামূলক কার্যক্রমের মান বৃদ্ধির খাতে ৩১০ কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ২৪৯ কোটি টাকা, বাজার নির্মাণসহ ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৬৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা, কবরস্থান ও শ্মশানঘাট সংস্কার ও উন্নয়ন এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শেষকৃত্য স্থান নির্মাণ ও উন্নয়ন খাতে ১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পরিবেশের উন্নয়নের জন্য পার্ক ও খেলার মাঠ উন্নয়নের মাধ্যমে নগরিকদের বিনোদন সুবিধা খাতে ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও মশক নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা রাখা হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ৮৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করে। ব্যয়ের খাতগুলোর মধ্যে বেতন-ভাতা বাবদ ১৮০ কোটি, সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়ন খাতে ১৮১ কোটি ৫০ লাখ, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৯৭ কোটি ৯০ লাখ, বিদ্যুত, জ্বালানি, পানি ও গ্যাস বাবদ ৬৮ কোটি, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ২৮ কোটি, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাবদ ১২ কোটি ৫০ লাখ, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম সরবরাহ বাবদ ২৫ কোটি, বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ২৮ কোটি, অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কবরস্থান, শ্মশানঘাট সংস্কার ও উন্নয়ন খাতে ৬ কোটি ২৫ লাখ, বিজ্ঞাপন প্রচার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক খাতে ৭ কোটি ৫০ লাখ, নাগরিক বিনোদনমূলক সুবিধাদি উন্নয়ন খাতে ১৬ কোটি ৩৫ লাখ, পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ৫৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।



ঢাকার উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যে নেয়া দুটি পদক্ষেপের কথাই ধরা যাক। প্রথম পদক্ষেপ দেয়ালে দেয়ালে আরবী লিখে যত্রতত্র মূত্র ত্যাগ না করে, কাছের কোন মসজিদে মূত্র ত্যাগের ব্যাপারে সচেতনতা চালানো হলো। এই কার্যক্রম যদিও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নামে প্রচার করা হয় মূলত এটা ছিলো সিটি কর্পোরেশনের একটি উদ্যোগ। যদিও পাবলিক টয়লেট বাড়ানোটা বেশী যৌক্তিক হতো কিন্তু মসজিদকে প্রাথমিক ভাবে বেছে নেয়া হলো। যদিও ধর্ম এবং নর-নারী ভেদে এবং সময় অনুযায়ী মসজিদে টয়লেট করার বিষয়ে কোন রূপরেখা দেয়া হয়নি। যাই হোক, এটা কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে সেটা এখনও খুব সম্ভবত বিবেচনাধীন। নেই প্রয়োজনের তুলনায় তেমন পাবলিক টয়লেট আর যাও আছে করুণ দশা সবকটির। কিন্তু এই খাতে বাজেট থাকাটা বাঞ্ছনীয়। এরপর আরেকটি উল্ল্যেখ যোগ্য কাজ হলো, তেজগাঁয় অবৈধ ভাবে রাখা ট্রাক-বাস উচ্ছেদ অভিযান। যদিও সেখানে সংঘর্ষ বেঁধে গিয়েছিলো কিন্তু তারপরেও সাধুবাদ জানাতেই হয় এই উদ্যোগকে। এখন আবার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে গুলিস্তানের হকার উচ্ছেদের। আমি খুব আশাবাদী, যদিও পুরো ঢাকা শহর জুড়ে এখন চলছে চকির রমরমা বানিজ্য। যেসব চকির জন্য হকাররা প্রতিদিন পঞ্চাশ থেকে দুইশত টাকা করে চাঁদা দিয়ে থাকে। এইসব চাঁদা কারা নেয় সেটাও একটা বিবেচনার বিষয়। যেমনটা বিবেচনার বিষয় পরিবহণ মালিক সমিতি কীভাবে অবৈধ ভাবে তাদের বাস-ট্রাক যত্রতত্র রেখে দেয়।

একজন সচেতন ঢাকাবাসী হিসেবে ঢাকার মেয়রদ্বয়ের কাছে ঢাকার সজীবতা ফিরে পেতে চাই। চাই গ্রীন ঢাকা, ক্লীন ঢাকা। খুব বেশী কিছু কি চেয়ে ফেললাম ? তবে, আমি আশাবাদী !!

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪০
৩৫টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×