নরসিংদীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সুস্বাদু ও সুগন্ধি কলম্বো লেবু। অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভজনক হওয়ায় জেলাজুড়ে এ লেবুর ব্যাপক চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ২৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে নরসিংদীর কলম্বো লেবু।

নরসিংদীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দশ বছর আগে নরসিংদী জেলার মাটি পরীক্ষা করে এখানকার মাটি লেবু চাষের উপযোগী বলে নিশ্চিত হয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এরপর জেলার কয়েক কৃষক প্রাথমিকভাবে সুস্বাদু ও সুগন্ধি কলম্বো লেবুর চাষ শুরু করে আশানুরূপ ফলন ও দাম পান।

এরপর ২০১১-১২ অর্থ বছরে জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে চারটি উপজেলা শিবপুর, রায়পুরা, বেলাব ও মনোহরদীতে ব্যাপকভাবে লেবু চাষের কর্মসূচি গ্রহণ করে কৃষি বিভাগ। রপ্তানিযোগ্য লেবু ও সবজি উৎপাদন কর্মসূচির আওতায় তিনশ লেবু চাষী, দেড়শ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও রপ্তানিকারককে বিভিন্ন মেয়াদে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

বর্তমানে নরসিংদী জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে চারটি উপজেলার একশ চুয়াল্লিশ হেক্টর জমিতে ১১শ বাগানে বাণিজ্যিকভাবে কলম্বো লেবুর আবাদ হচ্ছে। সুস্বাদু ও রোগমুক্ত হওয়ায় এখানকার লেবু রপ্তানিও হচ্ছে। এতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

লেবু বাগান থেকে প্রতিনিয়ত সরাসরি পাইকারী ক্রেতারা এসে লেবু কিনে নিয়ে সরবরাহ করেন দেশ-বিদেশের বাজারে। রোগমুক্ত হওয়ায় বিদেশের বাজারে নরসিংদীর কলম্বো লেবুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে- এমনটাই জানান পাইকারী ক্রেতারা।

শিবপুর উপজেলার ভিটিপাড়া গ্রামের লেবু চাষী মাহবুব খন্দকার জানান, প্রথমে দেড় বিঘা জমিতে লেবুর চাষ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে পাঁচ বিঘা জমিতে লেবু চাষ করছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বছর তার আয় হয় আট থেকে দশ লাখ টাকা।

রায়পুরা উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের লেবু চাষী বাবুল চৌধুরী জানান, লেবু চাষে অন্যান্যদের সফলতা দেখে তিনি প্রাথমিক পর্যায়ে চার বিঘা জমিতে লেবু চাষ শুরু করেন। ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় বর্তমানে তিনি ১৪ বিঘা জমিতে লেবুর আবাদ করছেন।’

বছরে তার পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা খরচ হয়। আয় করেন ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নরসিংদীর উপ-পরিচালক মো. মুকছেদ আলী জানান, বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে নরসিংদীর কলম্বো লেবু। লাভজনক হওয়ায় এ বছর নতুন করে আরও তিনশ ত্রিশটি লেবু বাগান তৈরি করা হচ্ছে এবং দুইশ পঁচাত্তরটি পুরাতন লেবু বাগান ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।