somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্তিম যাত্রা

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা যারা বিদেশ বিভুঁইয়ে পড়ে থাকি বিশেষ করে সৌদি আরবে যারা আছেন তাঁরা সম্ভবত জলাতঙ্কের মতো ডাক্তারাতঙ্কে ভুগেন। এখানে বেশিরভাগ ডাক্তার মাসরি মানে মিসরের আর তাদের কাছে গেলে মনে হয় একটু আগেই জুতা সেলাই করছিলেন সেখান থেকে মাঝ পথে রোগী দেখতে এসেছেন।

কিছুদিন ধরে বাথরুম এ গেলে কষ্ট হচ্ছিলো। আমি ভেবেছিলাম কোষ্ঠকাঠিন্য টাইপের কিছু তাই শুরুতে তেমন আমল দেইনি। কিন্তু হঠাৎই একটা ফোড়ার মত দেখা গেলো সাথে প্রচন্ড ব্যাথা, না বসা যাচ্ছে না শোয়া যাচ্ছে। অনেক ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি, বৌ আর বাচ্চারাও সাথে যেতে চাইলো। ওদেরকে সাথে নিয়ে নিজেই ড্রাইভ করে ওবায়েদ হাসপাতাল এ পৌঁছে গেলাম।

একজন স্পেসালিস্ট সার্জনকে দেখালাম উনি দেখে বললেন এটা একটা perinephric abscesses। দ্রুত অপারেশন করতে হবে। আচানক ভয় পেয়ে গেলাম জীবনে কোনোদিনও ছুরি কাঁচির নিচে শুইনি।

এখানে রোগী অবস্থায় একা একা থাকা যে কত কষ্টের তা কেবল ভোক্তভোগীরাই বলতে পারবে। আদিবের আম্মু কাছে থাকাতে একটু সাহস পাচ্ছিলাম। সেদিনই আমার সব কাগজ জমা দিয়ে আসলাম আর ভাবছিলাম কত টাকা যেন চার্জ করবে হাসপাতালে। আলহামদুল্লিলাহ সন্ধ্যায় আমাকে জানালো ইন্সুরেন্স থেকে এপ্রুভাল পাওয়া গেছে, সুতরাং ইন পেশেন্ট হিসেবে আমার এক রিয়ালও লাগবে না। পরের দিন সকালে হাসপাতাল এ ভর্তি হলাম। আমাকে জানানো হলো দুপুর একটায় আমার সার্জারি।

নানা রকম টেস্ট আর স্যালাইন চলতে লাগলো। দুপুর একটা পনেরোর দিকে নার্স আসলো। সব কিছু খুলে ফেলতে বললো, আমার হাত ঘড়ি খুল্লাম, মানিব্যাগটা বৌয়ের হাতে দিলাম। শার্ট প্যান্ট খুলে অপারেশন গাউন পরলাম, ভালো মতো চেয়ে দেখি গাউনের কোথাও কোনো পকেটই নাই। একরাশ আতঙ্ক গ্রাস করলো আমাকে, মনে হচ্ছে পৃথিবীর কোনও কিছুই আমার না। আমার আর কিছুই নেই। চোখ থেকে টপ টপ করে পানি পড়ছে। আমাকে নিতে ষ্ট্রেচার আসলো, আমি ওতে শুয়ে পরলাম, একজন নার্স আমাকে নিয়ে যাচ্ছে -অপরিচিত একটা মুখ। আমার বুকের হাতুড়ির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি আর মনে হচ্ছে......মনে হচ্ছে মৃত আমার দেহটাকে অন্তিম শিয়ানে রাখার জন্য নিয়ে যাচ্ছে শববাহকের দল। এ যেন অন্তিম যাত্রা আমার....

পরিশেষ :
আল্‌হামদুলিল্লাহ, আল্লাহ্পাকের ইচ্ছায় এখন ভালো আছি আর উপলব্দি এটাই যে একদিন এভাবেই খালি হাতে চলে যেতে হবে দুনিয়া থেকে কাজেই সময় থাকতে আমাদের মূল্যবান সময়কে কাজে লাগাতে হবে যেন মৃত্যুর পর আফসোস করা না লাগে।

---সমাপ্ত--
ছবিসূত্র: ইন্টারনেট

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:২৪
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×