পুরোন ড্রয়ার ঘেটে কয়েকটা কবিতার দেখা মিললো... (সময়কাল ১৯৯৫-২০০০)
ভাবলাম তুলে রাখি ব্লগের পাতায়।
ফেরারী
স্মৃতি থেকে কিছু কথা তোমাকে দিলাম,
অবহেলা করে ফেলে দিও, ঘৃণাভরে
তবু আমাকে ফিরিও না
কেননা আমাকে ফেরালে আরতো পাবেনা
তখন স্মৃতির কথাগুলোই তোমার
একমাত্র ঠিকানা হবে
আমাকে খুঁজে পাবার।
অবশ্য তার আগেই
ঠিকানা বদলাবো আমি।
ভুল
যদি একবার সময় পেতাম
তোমার দুচোখে আমি নিজেকে
দেখে, শুদ্ধ করে...
তারপর-তারপর হারাতাম তোমার
চোখের অরণ্যে
নোনা জলগুলো পান করে তৃষ্ণা মিটিয়ে
চোখের তারায় হাসি ছড়িয়ে
সেই অভয়ারণ্যে কেবল স্বপ্ন এঁকে দিতাম
নিষ্ঠুর হাতে দলে দিতাম সব হতাশা আর দুঃস্বপ্ন
এখন ভাবি একবার সুযোগ পেলে
ঐ দুচোখেই আমি কান্না ঝরাবো
বইয়ে দেবো নোনা জলের ঝর্না
অভিশপ্ত দুপাপড়ি এক করতে দেবোনা।
আগে সময় পেয়ে যা করতে পারিনি
এবার সুযোগ পেলে তা আমি করবোই
ভালোবাসায় বারবার ভুল করতে নেই।।
অনুভব
বৃষ্টির ছোঁয়ায় বেড়ে ওঠা লজ্বাবতী
সূর্যমূখী, সূর্য যার জীবনসন্গী
সমুদ্র থেকে পথ চলতে শেখা নদী
তার ঢেউয়ে বেসামাল জোছনা
ফল, বীজ থেকে ধীরে ধীরে যে বৃক্ষ
তারই ছায়া পরিশ্রান্ত এক পথিক
লাজুক নববধূ, আঁচলে পরম নির্ভরতা
নাকফুলের শিহরণ, হঠাৎ ব্যাকুলতা
কাজলকালো চোখ বেয়ে নেমে আসা
সুখ আর দুঃখ, উৎস গন্তব্য অবিকল এক
হাতের আণ্গুল, আন্দোলনে যে সুর
হৃদপিন্ড, মস্তিস্ক হয়ে বহুদুর
আপন দুটি হাত আপন অনুভবে।
দুর্ভিক্ষের দিনগুলো
প্রচন্ড দূর্বিসহ ক্ষুধা
অস্হির উন্মাদনায় চারদিক ভারী
তবু কেউ এগিয়ে আসেনি
নিজেই চেষ্টা করলাম প্রতিরোধের
হলোনা তাও
পাগলের মতো খুঁজে ফিরি একটু আহার্য্য বস্তু
হোক তা নর্দমার উচ্ছিষ্ট
তাই আমার অসামান্য প্রয়োজন
কিন্তু কেউ বোঝেনি, কিংবা ভাবেনি কেউ
তখন না মরলেও এখন মরছি আমি
ধুঁকে ধুঁকে
যা শুধু ধ্বংসই করেনা, করে তোলপাড়
যা থেকে কখনই বেরিয়ে আসা যায়না
এলোমেলো পদচারণায় পৃথিবীকে করেছি
কালো মেঘেরে মতো থমথমে
তবু আমি জয় করেছি সেই দিন, সেই ক্ষণ
ভালোবেসে কাছে টেনেছি বিষাক্ত সময়কে
এখন আমার সবথেকে প্রিয়
সেই দুর্ভিক্ষের দিনগুলো।