যমুনা তখন সারাদিন পইড়া পইড়া ঘুমানোর জন্য খুব কইরা বকাঝকা করে আমারে।তাতেও যখন তার মন ভরতো না তখন আমারে খাচ্চর,গিদর বইলা খুশি পাওয়ার চেষ্টা করতো।আমি ওরে খুশি নিতে না দিয়া ঘুমকণ্ঠে দাঁত বাইর কইরা ক্যালাইতাম।আমার ক্যালানি তার চিত্ত জ্বালায় দিতো।সে দাঁত কিটমিট করতো,আমি ফোনের এইপাশে থাইকাও সেই কিটমিটানির শব্দ শুনতাম।
যমুনার বাসা আমার বাসার দুই গলি পর।শীতের এক ভোরে আমারে নির্দয়ভাবে ঘুম থেইকা জাগাইয়া কইলো-রাশেদ চৈতিগো বাসার পিছে আহোছে একবার,তোমার নূরাণী চেহারাখান দেহি পরাণ ভইরা।
আমার কচি ঘুম ভাইঙ্গা চৌচির করার পর মিঠা মিঠা কথা কানে বিষ ঢালতাছিলো যেন!চোখ ডলতে ডলতে লোকমান মামার দেয়া কাশ্মীরী শালখান শইল্লে চাপাইয়া রওনা দিলাম।
গিয়া দেখি আমার মতো খতরনাক আর জাদরেল প্রেমিকের নিকোটিন পোড়া ঠোঁট থেইকা আত্মঠোঁট রক্ষায় সে এক দারুণ ব্যবস্থা নিয়া আইছে।আমারে দেইখা কার্ডিগান গায়ে দিয়া ব্রাশ করতে থাকা যমুনা সেই শীতভোরে,যখন সূর্য ওঠে নাই,তখন একটা ফ্যানা ওঠা মুখে ঝিরঝির মার্কা হাসি দিলো।
আমি ওর খুব কাছে,যতখানি কাছে গেলে টান দিয়া কাউরে বুকে আনা যায়,ততখানি দূরত্বে গিয়া ও বোঝার আগেই খাবলা দিয়া ওর মুখ থেইকা ব্রাশ নিয়া নিজের মুখে ঢুকাইলাম।তারপর দাঁত ঘষাঘষিতে মন দিলাম।
-এইডা কি করস গিদর?
:তাড়াহুড়ায় ব্রাশ করবার পারি নাই।
-মানুষ হবিনা তুই কোন জন্মেই।দে ব্রাশ দে...
চারদিকে ঘন ঘন কুয়াশার আড়াল পাইয়া আমি যমুনার উপর ঝাপাইয়া পড়লাম।ওর ঠোঁট আর জিহ্বার লেগে থাকা পেপসোডেন্টের ফ্যানা যতখানি লাইগা আছিলো তার সবখানি আমার গলার ভিতর দিয়া চালান কইরা দিলাম।
যমুনা সেই শীতের ভোরে বুঝবার পারছিলো,প্রেমিক যুবকটা শুধু তারেই ভালবাসেনা!পেপসোডেন্ট টুথপেস্টের সাদা সাদা বমির মতো ফ্যানাও খুব পছন্দ করে।
রাগে গজরাইতে গজরাইতে যমুনা কইছিল-তুই যে একটা পাক্কা হারামী হেইডা বোঝস?
:তোমার উপকার করলাম তো!আর কুলি করন লাগবো না।
-বাল ফালাইয়া উল্ডাইছস!
:চ্যাতো কিল্লেইগা!
-রাশেদ,চলো বিয়া কইরা সংসার পাতি...
এইকথা শোনার সাথে সাথে আমি একটা দৌড় মাইরা পলাইছিলাম।দৌড় দেওনের আগে কইছিলাম-বাজান ডাক না শুইনা বিয়া করুম না।আগে একটা পয়দা করি ল!
তারপরের চাইরদিন আমি যমুনার সামনে যাই নাই।মুসারে দিয়া খবর পাডাইছিলো আমার জন্যে নাকি ঝাড়ু আর জুতা রেডি রাখছে।
সেই ব্রাশ দিয়া আমি আইজকা সকালেও দাঁত মাজছি।যমুনার মুখের ফ্যানার গন্ধে আমি আল্লার তিরিশটাদিন সকাল বেলা মাতাল হই।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩৩