somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়

০৯ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিদিনের খাবার যেন স্বাস্থ্যসম্মত হয় ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখুন।
ইফতারে বিকল্প চিনি দিয়ে ইসবগুলের ভুষি, তোকমা, লেবু কাঁচা আম বা তেঁতুল শরবত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। ডাব ছাড়া অন্যান্য মিষ্টি ফলের রস না খাওয়াই ভালো। টক ও মিষ্টি উভয় ধরনের ফলের সালাদ খাওয়া যেতে পারে, এতে খনিজলবণ ও ভিটামিনের অভাব পূরণ হবে। কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদাকুচি, টমেটো কুচি, পদিনা পাতা ও লবণের মিশ্রণ বেশ সুস্বাদু খাবার। কাঁচা ছোলা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
সন্ধ্যা রাতে (ইফতার পরবর্তী) খাবার একেবারে বাদ দেয়া উচিত নয়। কম করে হলেও খেতে হবে। অন্য সময়ের রাতের খাবারের সমপরিমাণ হবে রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার। রোগী ভাত খেতে পারবে তবে চিকিৎসক কর্তৃক বরাদ্দ খাবারের পরিমাণের দিকে সর্বদা সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। হালকা মসলায় রান্না যে কোনো ছোট-বড় মাছ এবং সবজি নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে।
সেহরিতে (ভোররাতের খাবারে) রুটি অথবা ভাত রুচি অনুযায়ী গ্রহণ করুন। সেহরির খাবারের পরিমাণ হওয়া উচিত অন্যদিনের দুপুরের খাবারের সমপরিমাণ। সেহরিতে মাছ ও সবজি থাকতে পারে। দুধ অথবা ডাল যে কোনো একটা থাকলে ভালো হয়।
সর্তকতা : ডায়াবেটিসের সঙ্গে অন্য কোনো জটিলতা, যেমন- কিডনির রোগ, উচ্চমাত্রার ইউরিক ইত্যাদি থাকে তাহলে ডালের তৈরি খাবার থেকে বিরত থাকুন।
আলসার বা গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা থাকলে ডুবো তেলে ভাজা ও ঝাল যুক্ত খাবার পরিহার করুন।
শরীরের ওজন বেশি থাকলে যতটা সম্ভব কম খাবার গ্রহণ করুন এবং খাবারে তেলের পরিমাণ কমিয়ে দিন।
রোজা রেখে অত্যধিক হাঁটা বা ভারী ব্যায়াম থেকে বিরত থাকুন। কারণ এতে আপনার শরীরে রক্তের শর্করার মাত্রা নিচে নেমে গিয়ে বিপদ হতে পারে।
রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের ওষুধের ব্যবহার :
আপনার চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী ওষুধের ডোজ ঠিক করে নিন।
যারা দিনে ১ বার ডায়াবেটিসের ওষুধ (সালফোনাইলইউরিয়া) খান, তারা ইফতারের শুরুতে পানি খেয়ে ওই ওষুধ একটু কম মাত্রায় খেয়ে নিন।
দিনে ২ বার (সালফোনাইলইউরিয়া) ডোজের ক্ষেত্রে_ সকালের মাত্রাটি ইফতারের শুরুতে এবং রাতের মাত্রাটি সেহরিতে তথা ভোররাতের খাবারের আধাঘণ্টা আগে অর্ধেক-ডোজ খেয়ে নেবেন।
দিনে ৩ বার (মেটফরমিন ৫০০/৮৫০ মি.গ্রা.) ডোজের ক্ষেত্রে_ ইফতারের পর ১০০০ মি.গ্রা. এবং সেহরির পর ভরা পেটে ৫০০/৮০০ মি.গ্রা. খেতে পারেন।
যেসব রোগী থায়াজলিডিনডিয়ন গ্রহণ করেন তারা ওষুধটি একই মাত্রায় রাতের যে কোনো সময় খেতে পারেন।
যারা রিপাগি্লনাইড অথবা নেটিগি্লনাইড গ্রহণ করেন তারা ইফতারের শুরুতে ও সেহরির আগে খেতে পারেন।
রমজানের প্রথম এবং শেষদিনে ওষুধকে সমন্বয় করে নিতে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ রমজানে খাবার এবং জীবন যাত্রায় বিশেষ পরিবর্তন আসে তাই এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে আপনাকে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা উচিত।
রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের ইনসুলিনের ব্যবহার :
আপনার চিকিৎসকের পরামর্শানুযায়ী রমজান মাসের জন্য ইনসুলিনের মাত্রা ও ধরন ঠিক করে নিন।
দিনে ৩ বার ইনসুলিন গ্রহণকারীরা_ ইফতারে দুই ভাগ এবং সেহরিতে রাতের অর্ধেক ইনসুলিন নিবেন।
দিনে ২ বার ইনসুলিন গ্রহণকারীরা_ ইফতারে সকালের ডোজ এবং সেহরিতে রাতের অর্ধেক ডোজ নেবেন।
দিনে ১ বার ইনসুলিন গ্রহণকারীরা_ ইফতারের সময় নির্ধারিত ডোজ নিয়ে নেবেন।
আধুনিক ইনসুলিন গ্রহণের মাধ্যমে রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা অধিক সুবিধা পেতে পারেন।
তথ্যসূত্র : রমজানে ডায়াবেটিক খাবার, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি; তথ্য সংগ্রহে_ এস.এম. হাসান।
সর্বোপরি রমজানে শরীরের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া উচিত। কারণ শরীর সুস্থ না থাকলে রোজা রাখা আপনার জন্য নিরাপদ না ও হতে পারে। আর তাই শরীর সুস্থ রাখতে দৈনন্দিন খাবারের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে আপনাকেই।
[এই লেখাটি দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে- ০৯/০৮/১১ রমযান প্রতিদিন পাতায়]
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×