শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনকে রাজনীতি মুক্ত রাখার জন্য ছাত্ররা কিছু পদলেহনকারী শিক্ষকদের লেজুড়বৃত্তির প্রতিবাদ করেছিল। সেই শিক্ষকরা এক প্রহসনের তদন্তের মাধ্যমে ৩৪ জন ছাত্রের শিক্ষা জীবন শেষ করে দিয়েছে। তারমধ্যো ৪ জন চীরকালীন বহিস্কার। এই বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।
বেদনাবিহীন প্রসব। আপনারা ধন্যবাদার্হ্য
কতজন ঝুলছে সেটা বড় কথা না। কথা হল 'দৃষ্টান্ত' স্থাপন করার পথে আরেকপ্রস্থ অগ্রসর তো হওয়া গেল। এই বা কম কিসে। ছেলে পিলে বড় বাড় বেড়ে যাচ্ছিল। বল্গাহীন হয়ে উচ্ছিন্নে দিচ্ছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুললিত ঐতিহ্য। কাহাতক আর এইসব নচ্ছামি সহ্য হয়। প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে অনেক সহ্য করেছেন তারা। বেয়াদপ ছেলেপেলে 'পাছার পাচড়া চুলকিয়ে বলা এইতো আছি বেশ' গানের সুর, তাল, লয় কেটে দিচ্ছিল। দৃষ্টান্ত দরকার। দৃষ্টান্ত দরকার।
শাহনেওয়াজ নামক শাহ্র উপরে বেয়াদপ ছেলেপিলেদের অসদাচরন তো রীতিমত জাতীয় মানসন্মানের প্রশ্ন। হতে পারে শাহ ভার্সিটির একটা ছেলেকে দলীয় কোঠায় দু-চারটা চড় থাপ্পর মেরেছে তার পাওনা টাকা চাইবার অপরাধে। এইকারনে বেয়াদপ ছেলেপেলে তাকে আটকে রাখবে? তাকে মাফ চাইতে বলার সাহস দেখাবে? মহামুল্যবান বেলজিয়ান কাচের তৈরী গ্লাস ভাংচুর করবে? অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা খুন করে, একে অন্যকে চাপাতি দিয়ে কোপায়, আগুন লাগিয়ে দেয় বইপত্রে আর সেগুন কাঠের ফার্নিচারে কিন্তু খুলনা বিশ্ব: এর বেয়াদপ ছেলেপেলে বলে কিনা মাফ চাও, ভাংচুর করে, আটকে রাখে শাহ্ কে। লজ্জ্বায় মাথা কাটা যাচ্ছে প্রশাসন বাহাদুরের। না প্যান্ট থেকে মুঠ করা হাত বের করা দরকার। দৃষ্টান্ত দরকার। দৃষ্টান্ত দরকার।
প্রশাসন বাহাদু্রের নির্দেশে ভার্সিটি খালি হয়ে গেলো মুহুর্তেই। আদালত বসলো। আদালতে বেয়াদপ ছেলেপেলে আসে, তাদেরকে ভার্সিটির পক্ষ থেকে চরম আথিতেয়তার সাথে বসতে দেয়া হয়, চা-পানির আথিত্যতাও মনে হয় করা হয়। হাজার হলেও এরাই তো দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য দুদিন পরে বলির পাঠা হবে। কেচো খুড়তে সাপ বেরোয়, তদন্ত কমিটি বিডিআর হত্যাযজ্ঞে তদন্তে সেভাবে পৌন:পৌনিক ভাবে সময় বাড়িয়ে নিয়েছিল, সেভাবেই তারাও সাপের খোজে সময় বাড়িয়ে নিল। খুন হওয়া ভার্সিটি, কলেজগুলো ইতিমধ্যো খুলে দিয়েছে, কিন্তু আমাদের তদন্ত কমিটির দন্ড যে দাঁড়িয়ে গেছে ততক্ষনে, যেভাবেই হোক সাপ বের করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
অবশেষে প্রসবিত হল সেই রিপোর্ট কোন বেদনা ছাড়াই। তদন্ত কমিটি এখন তাদের দীর্ঘ পরিশ্রমের বহুল কাঙ্খিত দৃষ্টান্ত স্থাপনে সক্ষম হয়েছেন। ৪ টা বেয়াদপ ছেলেকে চিরকালীন বহিস্কার করতে পেরেছে, ৭ টাকে ২ বছরের জন্য সাথে স্যারদের পানবিড়ি খাবার জন্য ১৫০০০ টাকা, ১৪ টাকে ১ বছরের জন্য সাথে স্যারদের পানবিড়ি খাবার জন্য ১৫০০০ টাকা আর ৯ টাকে শুধু ১৫০০০ টাকা দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোল, পাড়া জুড়োল। যেসব ভার্সিটিতে খুন খারাবি পানবিড়ি খাবার মত ব্যাপার তারা যেটা করতে পারেনি আপনারা সেটি করেছেন। আপনাদের উপর অনেক কায়িক শ্রম গেছে নিশ্চয়ই। ৩৪ টা ঘাড়ত্যাড়া বেয়াদপকে আপনারা দক্ষতার সাথে সাইজ করতে পেরেছেন। এতো পরিশ্রমের পরে নিশ্চয়ই আপনাদের ভাদ্র লেবাস একটু আলুথালু হয়ে পরেছে। নিশ্চয়ই হাপাচ্ছেন। বিশ্রাম নিন জনাব। বাকিটা দেখার লোক আছে। বেয়াদবি করার শাস্তির সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপিত হোল। আপনারা ধন্যবাদার্হ্য। শতকোটি সালাম এবং প্রনাম আপনাদের পদজুগলের পাদদেশে। দেশের সর্বক্ষেত্রে আপনাদের অভাব অনুভব করছি। আপানারা প্রনামার্হ্য।
জনাব, ২৫ টি ছেলেকে আপনারা বহিস্কার করেছেন, ৪ টাকে কে তো চিরস্থায়ী বন্দোবস্তো করে দিয়েছেন। ৭ টাকেও প্রায় দিয়েছেন। শাহ্ কে অপমান করার অপরাধে, উনাকে আটকে রাখার অপরাধে, উনাকে মাফ চাইতে বলার অপরাধে, বেলজিয়ান গ্লাস ভাঙ্গার অপরাধে। আপনারা নাকি এদের কে সন্তান সমতুল্য দেখতেন। কথায় কথায় চতুর্দিকে ঘিনঘিনে ছেপ ছিটিয়ে জানান দেন তোমরা আমার সন্তান। তো সন্তানদের এইভাবে বলির পাঠা বানাতে গিয়ে সেই ছেপ কি গিলতে হয়েছিল? দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে গিয়ে আপনারা আপনাদের মাজা, মেরুদন্ড যে জেলী করে ফেলেছেন সেটা কি টের পেয়েছেন? এই রকম জেলী মাজা নিয়ে ৩৪ টাকে সাইজ করতে পেরেছেন। আপানারা ধন্যবাদার্হ্য। আপনারা প্রনামার্য্য।কিন্তু এতোটা তো না করলেও পারতেন। আপনাদের যেমন জেলী মাজা তেমনি আপনাদের সন্তানরাও তো ভার্সিটিতে ভর্তি হবার সময়ে মেরুদন্ডটাকে বন্ধক রাখে আপনাদের কাছে। নিবীর্য, ঢোড়া সাপ তো তাদের আগেই বানিয়ে দেন, তারপরেও আপনারা ভাদ্র মানুষ, সন্তানদের সাথে এই গুনাহের কাজটি না করলেই তো পারতেন।
স্যার, ৩৪ টা ছেলে শুধুমাত্র ছেলে বা ছাত্র নয়। তারা ৩৪ টি ঘরের স্বপ্ন। বাবার স্বপ্ন, মায়ের স্বপ্ন, ভাই-বোনের স্বপ্ন। আপনাদের গোল্ডফিস মেমোরিতে কি কুলায় স্বপ্ন মানে কি? জীবনে আপনারা তদন্ত কমিটিতে দণ্ড খাড়া করে বসে থাকবেন সেই স্বপ্নই তো আপনাদের কোনকালে ছিলনা। আপনারা স্বপ্নের মানে কি বুঝবেন। স্বপ্নভঙ্গের বেদনাও বা আপনারা কি বুঝবেন? আর ৩৪ টি ছেলের স্বপ্ন কেড়ে নেবার অধিকার আপনারা পেলেন কোথায়? এতোটা দু:সাহস দেখানোর অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে? গন্ডারের চামড়ায় মুড়িত আপনাদের অনুভুতিতে ৩৪ টি স্বপ্নের মৃত্যুতে যে বিন্দুমাত্র রক্তক্ষরন হবার কথা না। ওটাও যে বন্ধক রেখেছেন তদন্ত দণ্ড দাড়া হবার পুর্বে।
এক মাঘে কি শীত যায়? উড়ে যাবার পড়েও তো পঙ্খির ছায়া পড়ে থাকে। পানি গড়ানোর পরেও তো দাগ দেখি। কত বড় বড় কুতুব ঐসব বেয়াদপদের স্বপ্নভঙ্গের কারনে আজ চেয়ার ছারা আপনারা সেই ইতিহাস এতো সহযে ভুলে গেলেন? আপনাদের চোখের সামনেই তো এগুলো ঘটেছিল। ইতিহাসটা একটু মনে করে দেখেন স্যার। তখন হয়তো আরেকবার বলবো আপনারা ধন্যবাদার্হ্য। আপনারা প্রনামার্য্য। চ বর্গীয় গালীগুলো তখন হয়ত মুখের আগায় এলেও আটকাতে পারবো।
সুত্র
ফেসবুক গ্রপ এ যোগ দিন
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




