somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

দ্বিখণ্ডিত পথিক
বাংলাদেশটাকে খুব ভালোবাসি।কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন পরিচালক মন মত পাই নাই।সকল পরিচালকের একটা কথা, আগে চেয়ার পরে পকেট পরে দেশ।সাধারণ মানুষ হয়ে শুধু দেখে যাওয়া..।

ক্রিকেটের ইতিহাস.............

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৮৬ সালের কথা।

বাংলাদেশের বয়স মাত্র ১৫ বছর, আর এদেশের ক্রিকেটের বয়স মাত্র ১ বছর।
এশিয়া কাপ খেলতে যাবে, কিন্তু বিমানের টিকিট কেনার টাকা নেই। এসিসি টাকা দিতে চেয়েছিলো, বাংলাদেশ রাজি হলো না, বরং বাসে করেই গেলো। আমাদের তখন ব্যায়াম করার জিমন্যাশিয়াম নেই। ওরা ১১ জন বিদেশের জিমে ব্যায়াম করে ক্লান্ত হয়ে গেল। ঐ সময় স্যালাইন খাওয়া দরকার। কিন্তু বিদেশী স্যালাইন কেনার টাকাও যে নেই। দেশীয় উপায়ে লবন দিয়ে স্যালাইন বানানো হলো। এ নিয়ে পাকিস্তানি মিডিয়ায় কত হাসাহাসি। পরদিন শক্তিশালী পাকিস্তানের সাথে খেলা। তাইতো রাতে ঘুম এলো না স্বপ্নচারী ঐ ১১ জনের চোখে । সকালে খুশি মনে ১১ জন আগেই মাঠে ঢুকে গেলো প্র্যাকটিসে। কিন্তু পাকিস্তানের কেউ আসলো না। টসের সময় পাক ক্যাপ্টেন ইমরান খান মাঠের বাইরে থেকে ইশারায় ডাকলেন বাংলার ক্যাপ্টেন নান্নুকে। ইমরানের আপত্তি, তোমাদের সাথে টস করে কি লাভ? তোমরাই বলো কী চাও? ব্যাট নাকি বল? নান্নু বললো, আমরা টস চাই।ম্যাচ রেফারিও চাপ দিলো ইমরানকে। তখন ইমরান বললো, তাহলে এখানেই টস করেন। আমি কষ্ট করে মাঠের পিচ পর্যন্ত যাবো না। অবশেষে টস হলো মাঠের বাইরে। বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামলো। ইমরান তার মূল বোলারদের বাদ দিয়ে পার্টটাইম বোলারদের দিয়ে বল করাতে লাগলো, আর আমাদের ১টা করে উইকেট পড়তে থাকলো। ভাষ্যকার হাসতে হাসতে বলে উঠলো, "আজ যদি পাকিস্তানীদের স্ত্রী রা বল করতেন, তারাও নিশ্চয়ই উইকেট পেতেন।"

২০১৫ সাল।

পাকিস্তানে বহুদিন ধরে ক্রিকেট বন্ধ। স্পন্সররা চলে যাচ্ছে। তাদের একাডেমীগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জিম, প্র্যাকটিসের জন্য তারা এখন দুবাইয়ের জিমন্যাসিয়াম ব্যবহার করে। বাংলাদেশে আসার আগে তাদের বিমানের টিকেট কেনার টাকা নেই। কে দিবে টিকেটের টাকা? এগিয়ে আসলো বাংলাদেশ। যেই দেশটার সামান্য স্যালাইন কেনার টাকা ছিলো না বলে হাসাহাসি হয়েছিলো, সেই দেশটা তুলে দিলো আড়াই লক্ষ ডলার! খেলার মাঠে অধিনায়ক মাশরাফি একই কাজ করলেন, যেটা পাকিস্তান করেছিলো ২৯টি বছর আগে। মূল বোলারদের বল না দিয়ে বল দিচ্ছিলো নাসির, সাব্বির, রিয়াদদের। আর তাতেই পাকিস্তানের একেকটা করে উইকেট পড়ছিলো। ধারাভাষ্যে তখন বসে আছেন বাংলাদেশের আতাহার আর পাকিস্তানের আমীর সোহেল। ২৯ বছর আগের সেই দিনটাতেও এই দুইজন খেলেছিলেন, দুইজনেই ছিলেন দুই দেশের ওপেনার। কিন্তু ইতিহাস মিললো না। আজ আতাহার কিন্তু সেভাবে হাসি- ঠাট্টা করলো না, যেভাবে ২৯ বছর আগে হেসেছিলো পাকিস্তানী ভাষ্যকার।
তবে খেলা শেষে চুপ থাকতে পারলো না পাশে বসে থাকা সেদিনের পাকিস্তানী খেলোয়াড় আমীর সোহেল। তিনি বললেন, " আমি বাংলাদেশের দর্শকদের চোখে আজ আনন্দের রঙধনু দেখতে পাচ্ছি।
আনন্দ, যা পাকিস্তানকে ছুয়ে গিয়েছিলো সুদূর অতীতে। সেই আনন্দ হাতবদল করে ইসলামাবাদ থেকে ঢাকায় ফিরে এসেছে। আনন্দপ্রিয় এই দেশটি দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে তাদের ক্রিকেটে,তাদের অবকাঠামোয়,তাদের অর্থনীতিতে।
" ২৯ বছর আগের সেদিন একজন পাকিস্তানি কথা বলেছিলেন বাংলাদেশের পক্ষে, তিনি ওয়াসিম আকরাম।
তিনি পাকিস্তানি মিডিয়াকে বলেছিলেন বাংলাদেশকে নিয়ে বাজে কিছু না লিখতে।
তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের সুদিন আসবে,সেদিন তো আপনাদেরকেই লজ্জা পেতে হবে।
আজ ২৯ বছর পর তামিম ইকবাল একই কাজ করলেন। বাংলাদেশের মিডিয়াকে বললেন, "ক্রিকেটে খারাপ সময় যায়।
এক সময় আমরাও অনেক ম্যাচ হেরেছি,হারতে হারতে শিখেছি।
আমার শুভকামনা রইলো, পাকিস্তান খুব জলদি come back করবে"
ইংরেজীতে একটা কথার কথা আছে, "History repeats itself"
সেই কথাটা যে এমনভাবে সত্যি হবে,

ইতিহাসের দেনাগুলো যে এভাবে শোধ হবে ভাবিনি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৩৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×