আপন পুত্রে শোনালেন নবী আদেশ আল্লার
কোরবান তব করিব আজি ওহে পুত্র আমার
উৎফুল্ল হয়ে পুত্র কহে আল্লাহ যদি করেন কৃপা
যদি চান তিনি এই দেহ তনুমন-প্রাণ
নাহি ভয় পিতা ঐ পবিত্র নামে মোরে করিতে কোরবান ।
আনন্দিত হইয়া পিতা হেরিলেন পুত্র পানে
ধন্য তিনি পুত্র যে তার বলিয়ান ধৈর্য গানে
ইসমাইল হেসে কহে পুনঃ ধন্য আমি, সৌভাগ্যবান
আল্লাহ কবুল করেছেন মোরে তাঁরই নামে হতে কোরবান ।
মাতা হাজেরা শুনি সে বারতা কহেন অশ্রু সজল চোখে
নাড়ী ছেঁড়া ধন মোর আয় শেষ বার দুখিনী মায়ের বুকে
বক্ষে চাপিয়া আপন পুত্রে শোনালেন অভয় বানী
আল্লার নামে উৎসর্গ যে তার তরে নহে বেদনার কানাকানি ।
কাঁদিতে কাঁদিতে আপন পুত্রে দিলেন স্বামীর হাতে
ঐ দুর্গম পর্বত শিখরে ইব্রাহিম ছোটেন পুত্র সাথে ।
মুদিয়া নয়ন বাঁধিলেন পিতা পুত্রের হাত-পা
কণ্ঠদেশে চালালেন ছুরি বলি বিসমিল্লাহ্!
আসমানে যত ফেরেস্তা ছিল মারহাবা বলে কাঁদে
সাত আসমান করে টলমল, মেঘের আড়ালে সূর্য ঢাকে!
শিঙায় যিনি ফুঁৎকার দেবেন গিয়েছিল কি তাহারও ধ্যান ভাঙি
আরশ কুরসি লওহ কলম উঠেছিল কি বেদনার রঙে রাঙি?
ইব্রাহিম যতই চালান ছুরি একটি লোমকূপও কাটে না তাতে
পুনর্বার তিনি মহা তেজে চালালেন ছুরি চেপে দাঁত দাঁতে!
পুত্র বলে, বুঝি স্নেহের বশে চলছে না ও হাতে ছুরি
চক্ষু বাঁধিয়া চালান ছুরি দ্বিধা-সঙ্কোচ, স্নেহ-মায়া ছিঁড়ি!
সম্মত হইয়া বাঁধিলেন পিতা আপন চক্ষু যুগল
না দেখিয়া চালাতে ছুরি ভেদ করিল কন্ঠ, মিলিল সুফল
আল্লাকে দিয়া ধন্যবাদ পুনঃ খুলিলেন চোখের বাঁধন
চক্ষু মেলিতেই জড়াইয়া ধরিল আনন্দ অশ্রু কাঁদন!
দেখিলেন যার কণ্ঠ ভেদিছে সে তাহার পুত্র নয়
পাশে দাঁড়িয়ে পুত্র হাসে, দুম্বা-মেষ মাটিতে পড়িয়া রয়!
বার্তা বাহক জিব্রাইল বলেন, কবুল হয়েছে কোরবানি তোমার,
আসমানবাসীর মোবারক লহ, আপন পুত্রে পাইলে ফিরিয়া রহম আল্লার!
কবিঃ রুদ্র আতিক, সিরাজগঞ্জ
০৪ ফাল্গুন ১৪২৮ বঙ্গাব্দ ।
পুনশ্চঃ প্রতীকী ছবিটি ইউটিউব থেকে ধার করা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:২৭